‘হাসলে মানুষের আয়ু বাড়ে’ শুনতে শুনতে বড় হয়েছেন অনেকে। তাদের কান্নার উপকারের কথা বললে হয়তো অবাক হবেন। যদিও জাপানের এক শিক্ষক বলছেন তেমনটাই।
নিজেকে ‘কান্নার শিক্ষক’ পরিচয় দেয়া ওই জাপানির ভাষ্য, মানসিক চাপ কমানো ও সুখী জীবনের জন্য অশ্রু বিসর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রায় আট বছর ধরে মানুষকে কান্নায় উৎসাহিত করা হিদেফুমি ইয়োসিদা তার এই কৌশলকে নাম দিয়েচেন ‘রুই-কাতসু’ বা ‘কান্না খোঁজা’। জাপানজুড়ে নিয়মিত ওয়ার্কশপ ও বক্তৃতায় তিনি সপ্তাহে অন্তত একবার মানুষকে কাঁদতে বলেন। তিনি তা করতে মানুষকে সহায়তা করেন।
জাপান টাইমসকে ইয়োসিদা বলেন, ‘সপ্তাহে একবার কান্নাকাটি করলে মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন করতে পারবেন। চাপ কমাতে হাসি বা ঘুমানোর চেয়ে কান্না অনেক বেশি কার্যকর।’
৪৫ বছর বয়সী ইয়োসিদা বলেন, ‘কান্না আমাদের স্নায়ুর ক্রিয়াকে উদ্দীপনা দেয়। এর ফলে আমাদের হৃদস্পন্দন ধীর হয়, যা মানসিক প্রশান্তি তৈরি করে। যত বেশি কাঁদবেন, তত ভালো বোধ করবেন। বিলাপ করে কাঁদা আদর্শ। তবে এক ফোঁটা অশ্রুও আশ্চর্য কাজ করতে পারে।’
কান্নার ধরনটিও গুরুত্বপূর্ণ। নাটক বা রোমান্টিক চলচ্চিত্র দেখে, বই পড়ে, ভালো গান শুনে আবেগের বশে কান্না সবচেয়ে ভালো। তবে দুঃখে কাঁদা খুবই আলাদা। এটি মানুষের ওপর স্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
খুব কম কান্না করা জাতিগুলোর অন্যতম জাপানিরা। অনেকে বলেন এশিয়ার দেশটিতে কান্না করাকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়।
ইয়োসিদা অবশ্য বলছেন, জাপানিদের সহজে কান্নাকাটি করার প্রবণতা ছিল। কিন্তু শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবাইকে কাঁদতে ক্রমাগত নিরুৎসাহিত করায় এখন চাইলেও অনেকে কাঁদতে পারেন না।
ইয়োসিদা এই মনোভাব বদলানোর চেষ্টা করছেন। মানসিক চাপ মোকাবিলার উপায় হিসেবে কান্নার সুবিধা নিয়ে লোকজনকে সচেতন করছেন তিনি।
তার দাবি, গত সাড়ে সাত বছরে এভাবে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে তিনি চোখের জল ফেলতে সহযোগিতা করেছেন।
সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল