যুক্তরাষ্ট্রের আরকানস অঙ্গরাজ্যের পাইক কাউন্টিতে অবস্থিত ৯১১ একরের ক্রেটার অফ ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক। এটি বিশ্বের একমাত্র হীরক সমৃদ্ধ পার্ক, যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। পার্কটিতে ৩৭.৫ একরের চষা জমি আছে, যেখানে হীরা খোঁজা হয়।
সম্প্রতি পার্কটিতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৩ বছর বয়সী নাগরিক কেভিন কিনার্ড। তিনি পার্কের চষা জমিতে কাচ ভেবে ছোট একটি বস্তু হাতে নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, কাচ ভাবা টুকরাটি আসলে পার্কের ইতিহাসের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কেভিন কিনার্ড আরকানসর মমেল শহরের একটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক। তিনি ক্রেটার অফ ডায়মন্ডস স্টেট পার্কে এর আগে অনেকবার এসেছিলেন। কিন্তু কখনোই হীরার সন্ধান পাননি।
টুকরাটির বিষয়ে কিনার্ড বলেন, 'এটি দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও চকচকে মনে হয়েছে। তাই আমি একে ব্যাগে ভরে নিই।'
পার্ক কর্তৃপক্ষের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিনার্ড ও তার বন্ধুরা হীরা খুঁজতে কিছু সরঞ্জাম কিনেছিলেন। শুরুতে কিনার্ড চালুনি দিয়ে ১০ মিনিটের মতো হীরা খোঁজেন।
পরে তিনি সে কাজ বাদ দিয়ে চষা জমিতে হাঁটা শুরু করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ একটি টুকরা পান, যেটি তিনি ব্যাগে ভরে ফেলেন।
ওই টুকরাটি পাওয়ার পরও কিনার্ড ও তার বন্ধুরা কয়েক ঘণ্টা ধরে হীরা খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা সেখান থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
কিনার্ড তখনও ভেবেছিলেন, তিনি কিছুই পাননি। তিনি ব্যাগটি চেক না করেই পার্ক থেকে প্রায় বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার এক বন্ধু ব্যাগ চেক করাতে গেলে কিনার্ডও তার ব্যাগসহ সেখানে যান। কর্তৃপক্ষ তখন তার ব্যাগটিও চেক করে।
কিনার্ডের ব্যাগে পাওয়া পাথর ও খনিজ চেক করার পর দায়িত্বরত কর্মকর্তা তাকে একটি গোপন কক্ষে নিয়ে যান। সে সময় কিনার্ডকে জানানো হয়, তিনি যে জিনিসটিকে কাচের টুকরা ভেবেছেন, সেটি আসলে ৯ দশমিক ৭ ক্যারেটের একটি হীরা। এটি পার্কের ইতিহাসের দ্বিতীয় বৃহত্তম হীরকখণ্ড।
এবিসির অনুষ্ঠান গুড মর্নিং আমেরিকার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালে পার্কের ইতিহাসের বৃহত্তম হীরাটি পাওয়া যায়, যা ছিল ১৬ ক্যারেটের।
কিনার্ড বলেন, হীরা পাওয়ার কথা জানতে পেরে তিনি আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
পার্কের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক ডু এডমন্ড জানান, কিনার্ডের পাওয়া হীরাটি বেশ বড় ও লালচে বাদামি রঙের। ক্রেটার হীরার প্রায় সব বৈশিষ্ট্য এতে রয়েছে।
কিনার্ডের নামে হীরকখণ্ডটির নামকরণ করা হয় ‘কিনার্ড ফ্রেন্ডশিপ ডায়মন্ড’।