বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পর্দার কারণে চাকরি ছাড়া কেন?

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৪৫

এতগুলো বছর পরে এসে কেন অনেকে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এবং পর্দাপ্রথার বাড়াবাড়ির কথা বলে নারীকে কাজ থেকে সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে উৎসাহিত করছে? পর্দাপ্রথার কথা বলে চাকরি না ছেড়ে, বরং সুবিধা আদায়ের জন্য আমরা লড়াই করতে পারি।

যারা হজ ও ওমরাহ পালন করতে গেছেন, তারা দেখেছেন সেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে তাওয়াফ করেন এবং নামাজও আদায় করেন। এটা পবিত্র কাবা শরিফেও হচ্ছে, নবীজির (সা.) রওজা মোবারকেও হচ্ছে। এটাই নিয়ম, আর এই নিয়মই সারা বিশ্বের সব মুসলমান মেনে চলছেন।

এ ছাড়া আরও যেসব পবিত্র স্থানে মুসলমানদের যেতে হয়, সবখানেই নারী-পুরুষ একসঙ্গে যান। নবীজির (সা.) সময়েই মেয়েরা মসজিদে পুরুষদের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খুতবা শুনতেন। অবশ্য মেয়েদের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিন ছিল তার অতিরিক্ত। হজ পালনকালে পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ হতো। হজ ইসলামের একটি রুকন। এটি নারী-পুরুষ একসঙ্গে মিলেমিশেই আদায় করতে হয়। রাসুল (সা.)-এর যুগ থেকে এখন পর্যন্ত তা পালিত হয়ে আসছে এভাবেই।

মক্কা-মদিনায় গিয়ে দেখা যায় নারী-পুরুষ নিজেদের মতো ঘুরছেন, দোকানপাটে যাচ্ছেন, দোয়া-দরুদ পড়ছেন এবং সর্বোপরি কাবা শরিফ প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে সেলফি বা গ্রুপ ছবিও তুলছেন। সাফা-মারওয়াতেও সবাই এক কাতারেই হাঁটছেন। বিষয়টা বেশ আগ্রহ-জাগানিয়া। কারণ আমাদের দেশে আমরা অনেকেই প্রশ্ন করি: নারী-পুরুষ একসঙ্গে কি নামাজ পড়া জায়েজ? বাংলাদেশে নারীদের মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধও আছে অধিকাংশ স্থানে। কবরস্থানে নারীর যাওয়াটা ভালো চোখে দেখেন না অনেকে। কিছু জায়গায় কবরস্থানের গেটে সাইনবোর্ড টানিয়ে নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ পর্যন্ত করা হয়েছে।

ইতিহাস বলে, মসজিদ ছিল মুসলমানদের প্রথম সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মসজিদই ছিল ইবাদতের কেন্দ্র, জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সংযোগের কেন্দ্র। রাসুল (সা.)-এর যুগে মেয়েরা যখনই সুযোগ পেতেন, মসজিদে গিয়ে ভিড় করতেন। ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন শরিফ পাঠ শোনা ছাড়াও তারা জ্ঞানশিক্ষার আসরে যেতেন। এভাবে মুসলমানদের সামাজিক ও রাজনৈতিক খবরাখবর তারা কিছুটা অবহিত হতে পারতেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি ছাড়া নারীর মসজিদে গমনের অধিকার দান ও সেই অধিকার সংরক্ষণের জন্য উৎসাহিত করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মসজিদের বিশেষ মর্যাদার কারণে মুসলিম নারীদের আনাগোনা শুধু সেই মসজিদেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং মদিনার আশপাশের ও মদিনার বাইরের বিভিন্ন গোত্রের মসজিদেও তাদের যাতায়াত ছিল।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, মুসল্লিরা কুবার মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ছিল। এমন সময় একজন আগন্তুক এসে বলল, আজ রাতে রাসুল (সা.)-এর ওপর অহি নাজিল হয়েছে এবং তাতে তাকে কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। তোমরাও কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়ো। ওই সময় সবাই বায়তুল মাকাদদাসের দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়ছিল।

তারা তখনই কাবা শরিফের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনে হাজার বলেন, ইবনে আবি হাতেমের বর্ণনা অনুসারে সুয়াইলা বিনতে আসলাম বলেন, “নারীরা ঘুরে পুরুষদের স্থানে এবং পুরুষরা নারীদের স্থানে দাঁড়াল এবং তারপর আমরা মসজিদে হারামের দিকে মুখ করে অবশিষ্ট দুটি সিজদা সম্পন্ন করলাম।”

মক্কা ও মদিনায় নারীর মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। ইসলামের সূতিকাগারে নারী-পুরুষ একসঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করছেন। যেসব নারী হাঁটতে পারছেন না, তাদের অন্য পুরুষ হুইলচেয়ার ঠেলে টাকার বিনিময়ে তাওয়াফ করতে সহায়তা করছেন।

নারীর চুল ঢাকা ও শরীর ঢাকা দেয়াটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোথাও বলা হয়নি নিকাবসহ বোরকায় আবৃত হয়ে যেতে হবে। হাত-পা দেখানো চলবে না। এখানে যেসব নারী তাওয়াফ করছেন তারা সবাই বিধিনিষেধ মেনেই কাজ করছেন। যে যেখানে নামাজের জায়গা পাচ্ছেন, আজানের সঙ্গে সঙ্গে বসে যাচ্ছেন।

এই কথাগুলো বলার কারণ হলো সেদিন দেখলাম একদল নারী পুরো কালো বোরকায় আবৃত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি জানালেন, ছবি নয়, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র করাতে হবে। যদি আমাদের সরকার সেই দাবি মেনেও নেয়, সে ক্ষেত্রে তারা কিন্তু হজ বা ওমরাহ করতে যেতে পারবেন না। পারবেন না আজমির শরিফসহ কোনো দেশে অবস্থিত কোনো আউলিয়ার দরগায় যেতে। কারণ পাসপোর্টে মুখ খোলা ছবি বাধ্যতামূলক। পুরো যাত্রাপথে নানাভাবে এই ছবি পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। সে ক্ষেত্রে ওনারা কীভাবে হ্জব্রত পালন করবেন, এটা জানার ইচ্ছা জাগে।

ইসলামের মূল গৃহ কাবা শরিফে ও মদিনা মনওয়ারাতে যারা গিয়েছেন, তারা জানেন লাখ লাখ নারী সেখানে বিভিন্ন রঙের কাপড় পরিহিত হয়ে উপস্থিত হন। মুখ দেখা যায় অধিকাংশেরই। আমরা ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জনের মুখ থেকে ধর্মের বিভিন্ন বয়ান শুনে বড় হয়েছি। বিভিন্ন পারিবারিক পরিবেশে বিভিন্ন শিক্ষায় বড় হয়েছি। কিন্তু কতজন ইসলামের পবিত্র সহি গ্রন্থ পড়েছি, কতজন পবিত্র কোরআনের বাংলা তর্জমা পড়েছি শানে নজুলসহ? আমার ধারণা খুব সামান্য কিছু মানুষ।

আমরা মনে করি কোরআন খতম দিলেই হবে। এর মানে বোঝার জন্য হুজুরের বক্তব্য অথবা ওয়াজ শুনলেই চলে। অর্থসহ কোরআন পড়ার দরকার কী? অথচ কোরআন শরিফের অর্থ বুঝে পড়লে আমরা আরও অনেক বেশি আলোকিত হতে পারতাম, অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বড় হতে পারতাম এবং সর্বোপরি আল্লাহ ও রসুল (সা.) যে মানবতার কথা বলেছেন, তা বুঝতে পারতাম।

ইসলামে হালাল রুজি, সততা, সত্য বলা, মানুষের উপকার করার কথা, প্রতিবেশী ও দরিদ্র মানুষের হক আদায় করার কথা বার বার বলা হয়েছে। নামাজ-রোজা, হজ-জাকাত ফরজ। পর্দার কথা নারী-পুরুষ সবার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে। আমরা এর মধ্য থেকে নিজেদের সুবিধামতো বিষয়গুলো বেছে নিচ্ছি। নীতি-নৈতিকতার জ্ঞান যে মানুষের মধ্যে থাকবে, সে অবশ্যই সৎ পথে থাকবে।

আল্লাহ কোরআনে বলছেন, ‘আমি ব্যবসাকে হালাল করেছি এবং সুদকে হারাম করেছি (সুরা বাকারা, ১৮৬)।’ এখানে আল্লাহ পুরুষ বা নারীর জন্য আলাদাভাবে কিছুই বলেননি। আয়াতখানা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যেই সমভাবে প্রযোজ্য। শুধু দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। প্রথমত, ব্যবসা বা আয়ের উৎস হালাল হতে হবে, দ্বিতীয়ত পর্দা মেনেই কর্মক্ষেত্র পরিচালনা করতে হবে।

হালাল আয়ের শর্তটি নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য। ধর্মের পাশাপাশি রাষ্ট্র আর সমাজের চাহিদাও হলো একজন নাগরিক যেন অবৈধ পন্থায় আয় না করে। অপরদিকে ইসলামি আইনে পর্দা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ।

রক্ষণশীল মুসলিম নারীদের জন্য আরেকটি বড় প্রশ্ন পূর্ণ পর্দাসহ নারীরা কি চাকরি করতে পারবেন? নারীদের চাকরি সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা কী? বিভিন্ন ইসলামি বেত্তা বিভিন্নভাবে একে বর্ণনা করেছেন। সম্প্রতি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে সরকারি চাকরি ছেড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন এক নারী। সাবেক এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন, তার চাকরি ছাড়ার অন্যতম কারণ কর্মস্থলে পর্দার বরখেলাপ। তবে শুরুতে তিনি বলেছিলেন, সন্তানদের সময় দিতে পুরোদমে গৃহিণী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পরে তিনি বলেন, ‘আমি যে চাকরিটা করি, সেখানে শুধু নারীরাই কাজ করেন না, সেখানে পুরুষরা চাকরি করেন। এ ছাড়া মাঠে গিয়ে অনেক সময় কাজ করতে হয়। যে কারণে অনেক সময় পর্দার খেলাপ হয়। এটা আমার ভালো লাগত না। কারণ পর্দা করতে আমি পছন্দ করি। ইসলামি আদর্শে জীবন গড়তে চাই। এ জন্য পর্দার বরখেলাপ হলে মন খারাপ থাকত।’

ওই নারী বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিশারিজ ম্যানেজমেন্টে এমএস করেন। একই বছর ২৯তম বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

চাকরি ছাড়াটা ওই নারী এবং তার পরিবারের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে পর্দা করার সঙ্গে নারীর চাকরি ছাড়ার আদতে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এটাও আমাদের জানা প্রয়োজন। কারণ এই পর্দার কারণে যদি নারীরা কাজ, আয় করতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তা দেশের জন্য অনেক বড় সমস্যা হবে। কারণ বাংলাদেশে এখন নারী-পুরুষ সমানতালে সব ক্ষেত্রে আয় করছে বলেই দেশটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমরা যদি ইসলামের ইতিহাস ধরে আলোচনা করি, তাহলে আমাদের বুঝতে সুবিধা হবে ইসলাম নারীর কাজে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে কিনা বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে গর্হিত করেছে কিনা। আমরা জেনেছি আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যখন বিবি খাদিজাকে বিয়ে করেন, তখন বিবি খাদিজা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী।

ফরাজিকান্দি কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদ তার ‘ইসলামের দৃষ্টিতে কর্মক্ষেত্রে নারী’ শীর্ষক বইতে বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস উল্লেখ করে বলেছেন যে, নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার ব্যাপারে ইসলামের কোনো বাধা নেই। প্রয়োজনের তাগিদে ক্ষুধা নিবারণে নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পুরুষরা যেভাবে চাকরিতে ছুটছে, একজন নারীও একইভাবে তার পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিতে পারবে।

একজন শিক্ষিত নারী তার মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবারের জন্য বয়ে নিয়ে আসবে সম্মান। ব্যবসা- বাণিজ্যেও নারীরা এগিয়ে আসতে পারেন, হতে পারেন সফল উদ্যোক্তা।

রাসুলের সহধর্মিণী হজরত জয়নব (রা.) নিজ হাতে কাজ করে আয় করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘জয়নব আমাদের মধ্যে সবচেয়ে দানশীল। কারণ তিনি স্বহস্তে কাজ করতেন ও দান-সদকা করতেন’ (সহিহ মুসলিম)। রাসুলুল্লাহ (সা.) এক নারী সাহাবিকে ব্যবসা-পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। যদি নারীদের উপার্জন হালাল তথা বৈধ না হতো তবে তিনি কখনোই তা শিখিয়ে দিতেন না।

মহানবীর (সা.) যুগে নারীরা কৃষিকাজেও অংশগ্রহণ করতেন। হজরত আবু বকর (রা.) এর কন্যা ও হজরত জোবায়ের (রা.)-এর স্ত্রী আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) জোবায়েরকে একখণ্ড জমি দিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ওই জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দুই মাইল। একদিন আমি মাথায় করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিয়ে আসছিলাম। এমন সময় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো, তখন রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিলেন’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫২২৪)।

হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-এর খালা তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পরে খেজুর বাগান থেকে খেজুর সংগ্রহ করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) এটা জানতে পেরে বললেন, ‘এতে কোনো ক্ষতি নেই।’ মহিলা সাহাবি কিবলাহ (রা.) বাজারে ব্যবসা করতেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর স্ত্রী রায়িতা (রা.) ঘরে বসে শিল্পকর্ম করতেন এবং তা বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতেন।

ওহুদের যুদ্ধে উম্মে আম্মারা (রা.) শত্রুদের তরবারির ডজনখানেক আঘাত সহ্য করেও বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে রাসুল (সা.)-এর ওপর আক্রমণকারী শত্রুদের প্রতিহত করেছিলেন।

জিহাদের ময়দানে অংশগ্রহণ নারীদের জন্য ফরজ নয়। তবে নারীরা যুদ্ধের ময়দানে অংশগ্রহণ করেছে ইসলামের সূচনা থেকেই। হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, ‘ওহুদ যুদ্ধের দিন মুসলমানরা পরাজিত হয়ে নবী (সা.)-এর নিকট থেকে দূরে সরে পড়ল... আমি আয়েশা বিনতে আবু বকর ও উম্মে সুলাইমকে দেখলাম, তারা তাদের পরিধেয় বস্ত্রের পায়ের নিচের দিকের অংশ টেনে তুলে পিঠে করে মশকভর্তি পানি এনে লোকদেরকে ঢেলে ঢেলে পান করাচ্ছেন এবং পুনরায় গিয়ে ভরে এনে পান করাচ্ছেন।”

রাফায়দা আল-আসলামিয়া প্রথম মহিলা ডাক্তার ছিলেন। রাসুল (সা.) খন্দকের যুদ্ধের সময় তাকে মদিনার মসজিদের পাশে তাঁবু টানিয়ে দিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি যুদ্ধাহত মুসলিম সেনাদের সেবা করতেন। আশশিফা বিনতে আবদুল্লাহ মুসলিম মহিলাদের লেখাপড়া শেখাতেন। উম্মে মিজান নামক এক মহিলা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মসজিদে ঝাড়ু দিতেন। তার মৃত্যুর পর তিনি তার জানাজার নামাজ পড়ান।

তাহলে এতগুলো বছর পরে এসে কেন অনেকে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এবং পর্দাপ্রথার বাড়াবাড়ির কথা বলে নারীকে কাজ থেকে সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে উৎসাহিত করছে? পর্দাপ্রথার কথা বলে চাকরি না ছেড়ে, বরং সুবিধা আদায়ের জন্য আমরা লড়াই করতে পারি।

লেখক: সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

এ বিভাগের আরো খবর