বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আত্মজিজ্ঞাসায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

  •    
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:২৬

মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে গত ৫০ বছরের অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদানকারী চার জাতীয় নেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ বহু ঘটনা ঘটেছে, যা আলোকাভিসারী একটি জাতিকে মধ্যযুগীয় তামসিকতার পথে নিয়ে গেছে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সামরিক প্রতিপক্ষ যেভাবে পরাজিত হয়েছে- রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, বিন ওয়াহাব ও মওদুদির দর্শন সেভাবে পরাজিত হয়নি।

১৯৭১-এ আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম তাদের বয়স এখন ষাটের কোঠা পেরিয়ে সত্তর ও আশিতে গিয়ে পৌঁছেছে। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার জন্য যখন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম তখন যুদ্ধশেষে ঘরে ফিরব এমনটি কখনও ভাবিনি। বাড়ি থেকে চিরবিদায় নিয়েই বেরিয়েছিলাম। আমাদের অনেকে ফিরে আসেননি। কোথায় কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাটিতে সমাহিত হয়েছেন কিংবা কোনো নদীর স্রোতে ভেসে গেছেন বঙ্গোপসাগরে- পরিবারের বাইরে কেউ তাদের খবর রাখেনি।

আমরা সৌভাগ্যবান- মুক্তিযুদ্ধের রজতজয়ন্তী দেখেছি, ঘটা করে সুবর্ণজয়ন্তীও উদযাপন করছি, কিন্তু যে প্রত্যাশা নিয়ে ’৭১-এ যুদ্ধ করেছিলাম, ৩০ লাখ শহীদ যে স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন পরবর্তী প্রজন্মকে, যে বাংলাদেশের লক্ষ্য বর্ণিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর সংবিধানে- তা কি পূরণ হয়েছে? এ প্রশ্নের একটাই উত্তর- না।

গত ৫০ বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সারিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে, ৮০টি দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে, জাতিসংঘে বাংলাদেশ বাংলায় কথা বলে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বহু সূচকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং এরকম আরও অনেক সাফল্য আছে। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার যে প্রত্যয় ও দিকনির্দেশনা বর্ণিত হয়েছিল বাংলাদেশের মূল সংবিধানে, সেই প্রত্যয় ও লক্ষ্য থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসের পর মানবজাতির ইতিহাসে ’৭১-এর মতো ভয়াবহ গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা অন্য কোথাও ঘটেনি, যা সংঘটিত হয়েছিল ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষার দোহাই দিয়ে।

এ কারণেই স্বাধীন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সহযোগীরা ১৯৭২-এর ৪ নভেম্বর গৃহীত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গ্রহণের পাশাপাশি ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন।

১৯৭২-এর ৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অনন্যসাধারণ সংবিধান গৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে গণপরিষদে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের সংবিধানের রাজনৈতিক ও দার্শনিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাখ্যা এবং ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের পক্ষে যুক্তি উত্থাপন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-

“ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মকর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবো না। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রে কারো নাই। হিন্দুরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কারো বাধা দেওয়ার ক্ষমতা নাই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, খৃস্টানরা তাদের ধর্ম করবে, তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। আমাদের শুধু আপত্তি হলো এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। ২৫ বৎসর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানী, ধর্মের নামে অত্যাচার, খুন, ব্যাভিচার- এই বাংলাদেশের মাটিতে এসব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা চলবে না।যদি কেউ বলে যে, ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়েছে, আমি বলবো ধর্মীয় অধিকার খর্ব করা হয়নি। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করার ব্যবস্থা করেছি। কেউ যদি বলে গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার নাই, আমি বলবো সাড়ে সাত কোটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যদি গুটি কয়েক লোকের অধিকার হরণ করতে হয়, তা করতেই হবে।”

গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কে আমাদের বোধ নির্মিত হয়েছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের কালপরিক্রমায়, যার জন্য অনিবার্য ছিল ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ।

মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে গত ৫০ বছরের অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদানকারী চার জাতীয় নেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ বহু ঘটনা ঘটেছে, যা আলোকাভিসারী একটি জাতিকে মধ্যযুগীয় তামসিকতার পথে নিয়ে গেছে।

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সামরিক প্রতিপক্ষ যেভাবে পরাজিত হয়েছে- রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, বিন ওয়াহাব ও মওদুদির দর্শন সেভাবে পরাজিত হয়নি। গত শতাব্দীর ৭০-এর দশকের শুরু থেকে তেলসম্পদে সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো, বিশেষভাবে সৌদি আরব বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে তাদের মডেলের রাজনৈতিক ইসলাম বিপণনে।

স্নায়ুযুদ্ধের যুগে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের বিরুদ্ধে ধনতান্ত্রিক বিশ্ব রাজনৈতিক ইসলামকে ব্যবহার করে আলকায়েদা ও তালেবানদের মতো মানবসভ্যতাবিধ্বংসী দানব সৃষ্টি করেছে। এ কাজে আমেরিকা ও সৌদি আরব প্রধান মিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে পাকিস্তানকে। দুই প্রবল পরাক্রমশালী প্রভুর প্রশ্রয়ে পাকিস্তান জেহাদ রপ্তানি বাণিজ্য আরম্ভ করেছে আশির দশকের শুরু থেকে, প্রতিবেশী ভারত ও মুসলিমপ্রধান দেশসমূহে।

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতির পাকিস্তানিকরণ ও ইসলামীকরণকে আমেরিকা সব সময় স্বাগত জানিয়েছে। মূলত, আমেরিকা ও সৌদি আরবের অস্ত্র ও অর্থে বলীয়ান হয়ে পাকিস্তান রূপান্তরিত হয়েছে জঙ্গি মৌলবাদের নিরাপদ স্বর্গে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জেহাদের শেকড় ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশসহ সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা ছিল এর সম্পূর্ণ বিপরীত। এই প্রত্যাশা পূরণে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদানকারী আওয়ামী লীগও অবিচল থাকেনি। ২০০৮ সালের পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে জাতীয় সংসদে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসনে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ। তারপরও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদানকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর অনন্যসাধারণ সংবিধানের রচয়িতা এই দলটি নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর ’৭২-এর সংবিধান জাতিকে ফিরিয়ে দিতে পারেনি।

আমেরিকা চায় বাংলাদেশ সেক্যুলার নয়, মডারেট ইসলামি দেশ হিসেবে পরিচিতি অর্জন করুক, যাতে তথাকথিত ‘ওয়ার অন টেরর’-এ উপযুক্ত সহযোগীর ভূমিকা পালন করতে পারে। শুধু বাংলাদেশ নয়, ৯/১১-এর পর থেকে আমেরিকা মুসলমানপ্রধান দেশসমূহে সেক্যুলারপন্থাকে নিরুৎসাহিত করে মডারেট ইসলামের তত্ত্ব ফেরি করছে। তাদের যুক্তি- এতে জঙ্গি মৌলবাদ ও জেহাদি উন্মাদনা প্রশমিত হবে!

মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলামের সংহিস রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ২০০১-২০০৬-এ যখন জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় ছিল। যুদ্ধাপরাধী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি অধ্যুষিত এই জোট ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ ‘হরকতুল জেহাদ’, ‘জামাতুল মুজাহিদীন’, ‘লশকর ই তৈয়বা’ প্রভৃতি শতাধিক জঙ্গি মৌলবাদী সংগঠনের তাণ্ডব প্রত্যক্ষ করেছি সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও এথনিক সম্প্রদায়ের ওপর নজিরবিহীন সহিংসতার ভেতর। বিশেষভাবে হিন্দু সম্প্রদায়কে আওয়ামী সমর্থক গণ্য করে সরকারের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে যে নৃশংস হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ঘটনা সেই সময়ে ঘটানো হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে তেমনটি কখনও ঘটেনি।

বর্তমানে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাম্প্রদায়িকতার চর্চা ও সংঘাত বন্ধ হলেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বিক্ষিপ্তভাবে হলেও অব্যাহত আছে। জামায়াত-বিএনপির সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ আওয়ামী লীগেও ঘটেছে।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা-নিজামীদের চারদলীয় জোট ’৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পাকিস্তানে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিল। ফতোয়া জারি করে নারীদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, ঘোষণা করা হয়েছে বাংলাদেশ চলবে ফতোয়ার আইনে। যা কিছু মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার সমার্থক সবই ছিল জোট সরকার এবং তাদের বরকন্দাজ জঙ্গি মৌলবাদীদের আক্রমণের লক্ষ্য।

এই বাংলাদেশ আমাদের প্রত্যাশিত নয় বলেই ২০০৮-এর নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। এই নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বপ্রদানকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ঐতিহাসিক বিজয় আমাদের আশাবাদী করেছিল। ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ যেমন নেয়া হয়েছে- আশা ছিল ’৭২-এর সংবিধানও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চার মূলনীতি ফিরে এলেও কলঙ্কিত ৫ম ও ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে জারিকৃত ‘বিসমিল্লাহ...’, ‘রাষ্টধর্ম ইসলাম’ এবং ধর্মের নামে রাজনীতি রেখে দেয়া হয়েছে মৌলবাদীদের হুমকি এবং আমেরিকার চাপের কারণে।

মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও চেতনা তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য কিছু ইতিবাচক কার্যক্রম গ্রহণ করলেও সংবিধানের ঘাড়ে এখনও পাকিস্তানের প্রেতাত্মা বসে আছে। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের কাঁধেও ভর করেছে পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। আধা ধর্মনিরপেক্ষ, আধা ইসলামি সংবিধান দেশ ও জাতিকে কোনো দিকনির্দেশনা দিতে পারে না। এই সংবিধানের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেয়া সম্ভব নয়।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। প্রবল প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ৪০ বছর পর ’৭১-এর গণহত্যাকারীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে তিনি সাহস ও মানবতার অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কিন্তু তার সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

সমাজে হতাশা, বঞ্চনা ও বৈষম্য বেড়েছে অর্থনীতির ক্ষেত্রে, রাজনীতির ক্ষেত্রে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এবং বিজ্ঞানমনষ্ক মানবিক সমাজনির্মাণের ক্ষেত্রে। দেশের মানুষকে মাফিয়া সিন্ডিকেটের দুর্বৃত্ত বাজারের কাছে জিম্মি রেখে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস লালন করে, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ‘বিসমিল্লাহ...’ রেখে, জামায়াতের মতো হিংস্র শ্বাপদদের অবাধ রাজনৈতিক অধিকার প্রদান করে, হেফাজতিদের কাছে নারীনীতি ও শিক্ষানীতি গচ্ছিত রেখে জাতি হিসেবে আমরা ধীরে ধীরে পাকিস্তানের তামসিকতায় ফিরে যাব, সামনে এগোতে পারব না।

বাঙালির প্রাপ্তি, প্রত্যাশা ও স্বপ্ন মূর্ত হয়েছে ’৭২-এর সংবিধানে। ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্নপূরণের ব্যবস্থাপত্র ’৭২-এর সংবিধান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তি ’৭১-এর চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে এলে ’৭২-এর সংবিধানবর্ণিত প্রত্যাশা ও স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণ কঠিন কোনো কাজ নয়। এই স্বপ্নই আগামী দিনগুলোতে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে।

লেখক: শিশুসাহিত্যিক, সাংবাদিক-প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা।

সভাপতি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

এ বিভাগের আরো খবর