× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
ইসরায়েল ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?
google_news print-icon

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-সংকটে-এখনই-কেন-বিস্ফোরণ?
ইসরায়েলের টানা হামলায় ফিলিস্তিনিদের পবিত্র স্থান আল-আকসা এখন রণক্ষেত্র। ছবি: এএফপি
কেউ কল্পনাই করতে পারেননি যে, পরিস্থিতির এত দ্রুত, সুদূরপ্রসারী ও বিধ্বংসী অবনতি ঘটবে। এর জের ধরে বহু বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহতম সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে গাজায় ও ইসরায়েলে মৃত্যুই হওয়াই শুধু নয়, ইসরায়েলের আরব-ইহুদি অধ্যুষিত শহরের দাঙ্গাও অন্তর্ভুক্ত।

দুই মাস আগেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর খুব কম কর্মকর্তাই গাজায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা ভাবতে পেরেছিলেন। তারা বারবার বলে আসছিলেন, ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ১০০০ মাইল দূরের ইরান কিংবা উত্তর সীমান্তের ওপারের লেবানন। তবে এই কয়দিনের মধ্যে কিছু কিছু ঘটনা একসঙ্গে যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে বিস্ফোরক পরিস্থিতি। ফিলিস্তিনের বর্তমান সহিংসতার পেছনের কারণ অনুসন্ধান করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। বাংলায় প্রতিবেদনটি অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার

চলতি সপ্তাহে গাজা থেকে প্রথম রকেট ছোড়ার ২৭ দিন আগের ঘটনা। একদল ইসরায়েলি পুলিশ জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে ঢুকে ফিলিস্তিনিদের হটিয়ে চুনাপাথর দিয়ে বানানো বিশাল চত্বরটির দিকে যায়। পুলিশের এই দলটি পুরনো চারটি মিনার থেকে আজান ও প্রার্থনা প্রচারে ব্যবহৃত লাউডস্পিকারের তারগুলো কেটে দেয়।

১৩ এপ্রিল অর্থাৎ মুসলিমদের জন্য পবিত্র রমজানের প্রথম রাতে এই ঘটনা ঘটে। দিনটি ইসরায়েলের জন্যেও বিশেষ, কারণ ওই দিন দেশের হয়ে যুদ্ধে শহিদদের স্মরণ করে তারা।

মসজিদের ঠিক নিচেই ইহুদিদের জন্য পবিত্র পশ্চিম দেয়ালে দিনটি উপলক্ষে ভাষণ দিচ্ছিলেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতা নিয়াহু। এ সময় উপরের মসজিদ থেকে প্রার্থনার ধ্বনিতে প্রেসিডেন্টের ভাষণ চাপা পড়ে যায় কিনা, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন ইসরায়েলি পুলিশ অফিসাররা।

পুরো ঘটনাটির সাক্ষ্য দেন মসজিদের চার কর্মকর্তা। তিনজন ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। ইসরায়েলি পুলিশ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। বহির্বিশ্বে প্রায় কেউই ঘটনাটি নিয়ে কিছু জানতেন না।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনিদের চলমান সহিংসতার সূত্রপাত গত ১৩ এপ্রিল। ছবি: নিউ ইয়র্ক টাইমস

তবে ইসলামের অন্যতম পবিত্র মসজিদে ওই হামলা আরও বেশ কয়েকটি ঘটনার অন্যতম, যার জের ধরে এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও গাজা উপত্যকা শাসনকারী হামাসের মধ্যে ফের যুদ্ধ ও ইসরায়েল জুড়ে আরব-ইহুদিদের মধ্যে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়।

‘এটাই টার্নিং পয়েন্ট ছিল। তাদের ওই পদক্ষেপের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে’, বলেন জেরুজালেমের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ একরিমা সাবরি।

কেউ কল্পনাই করতে পারেননি যে, পরিস্থিতির এত দ্রুত, সুদূরপ্রসারী ও বিধ্বংসী অবনতি ঘটবে। এর জের ধরে বহু বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহতম সহিংসতা ঘটেছে। এর মধ্যে গাজায় ১৪৫ জন ও ইসরায়েলে ১২ জন নিহত হওয়াই শুধু নয়, ইসরায়েলের আরব-ইহুদি অধ্যুষিত শহরের দাঙ্গাও অন্তর্ভুক্ত।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

ইসরায়েল শাসিত পশ্চিম তীরের শহরগুলিতেও বিক্ষোভের কারণ ছিল এটি। শুক্রবার সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী ১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। যার ফলস্বরূপ লেবাননের এক ফিলিস্তিনি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশে রকেট হামলা করা হয়। জর্ডানিয়ানরা ইসরায়েলের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যায় ও স্বল্প সময়ের জন্য লেবানিজ বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির দক্ষিণ সীমান্ত অতিক্রম করে।

যে সময়টাতে ইসরায়েল সরকার টিকে থাকার সংগ্রাম করছে এবং তারা যাকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে দেখে সেই হামাস যখন ফিলিস্তিন আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা জোরদারের চেষ্টা করছে আর যখন নতুন ফিলিস্তিনি প্রজন্ম নিজস্ব মূল্যবোধ ও নতুন লক্ষ্য নিয়ে বেড়ে উঠছে তখনই শুরু হয় এই সংকট।

একে গাজায় কয়েক বছর ধরে চলমান অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা, পশ্চিম তীরে কয়েক দশকের দখল ও ইসরায়েলে বসবাসকারী আরবদের বিরুদ্ধে কয়েক দশকের বৈষম্যের পরিণাম হিসেবে দেখছেন ইসরায়েল পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার ও ওয়ার্ল্ড জিওনিস্ট অরগানাইজেশনের সাবেক সভাপতি আভ্রাহাম বার্গ।

তিনি বলেন, ‘সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম জায়গামতোই ছিল। শুধু একটা ট্রিগারের দরকার ছিল। আর সেই ট্রিগারটা হলো আল আকসা মসজিদ।’

হামাসের সঙ্গে শেষ বড় সংঘাতের পর সাত বছর ও শেষ বড় ফিলিস্তিনি আন্দোলন- ইন্তিফাদার পর ১৬ বছর পার হয়ে গেছে।

প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যখন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে নিলেন, তখনও সেখানে বড় কোনো বিক্ষোভ হয়নি।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলো সন্ধি করবে না এমন ধারণা ত্যাগ করে যখন চার আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করে ফেলে তখনও সেখানে কোনো গণবিক্ষোভ বা প্রতিবাদ হয়নি।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

দুই মাস আগেও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর খুব কম কর্মকর্তাই এমনটা ভাবতে পেরেছিলেন। সামরিক বাহিনীর কর্তারা বারবার বলে আসছিলেন, তাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ১০০০ মাইল দূরের ইরান কিংবা উত্তর সীমান্তের ওপারের লেবানন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ বিদেশী কূটনীতিক বলেন, মার্চ মাসে যখন কূটনীতিকেরা গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক প্রশাসনের দুই জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক করেন, তখন তারা ওই দুইজনকে বড় কোনো সহিংসতার সম্ভাবনা সম্পর্কে নিরুদ্বিগ্ন থাকতে ও তুলনামূলকভাবে লম্বা শান্তির সময় নিয়ে স্বস্তিতে থাকতে দেখেছেন।

গাজা করোনাভাইরাস সংক্রমণ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল। হামাসসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ছিল ১৫ বছর পর মার্চের ফিলিস্তিনি নির্বাচনের অপেক্ষায়। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় বেকারত্বের হার প্রায় ৫০ শতাংশ। ফিলিস্তিনিরা যে কারণে যুদ্ধের চেয়ে অর্থনীতির উপর জোর দেয়ার দাবি জানাচ্ছিল, আর কমছিল হামাসের জনপ্রিয়তা।

তবে এপ্রিলে বদলাতে শুরু করে মনোভাব। রমজানের প্রথম রাতে ১৩ এপ্রিল আল আকসায় নামাজ পড়ছিলেন মুসলিমরা আর একই সময় কাছেই ভাষণ দিচ্ছিলেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রউভেন রিভলিন।

মসজিদের এক কর্মকর্তা বলেন, জর্ডান সরকার নিয়ন্ত্রিত মসজিদের পরিচালনা পর্ষদ ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের ভাষণ চলার সময় প্রার্থনা প্রচার না করতে ইসরায়েলের অনুরোধকে অসম্মানজনক বিবেচনা করে প্রত্যাখ্যান করে।

যে কারণে ওই রাতে মসজিদে অভিযান চালায় পুলিশ ও স্পিকারগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

শেখ সাবরি বলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই। এটা একেবারে স্পষ্ট যে ইসরায়েলি পুলিশ আকসা মসজিদ ও পবিত্র রমজান মাসকে অপমান করতে চেয়েছে।’

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

এ অভিযোগের বিষয়ে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দাবি করেন, স্পিকারগুলো বন্ধ করা হয়নি। পরে অবশ্য তারা জানায়, বিষয়টি ফের যাচাই করে দেখা হবে।

অন্য কোনো বছর হলে পুরো ঘটনাটি সবাই খুব দ্রুত ভুলে যেত। কিন্তু গত মাসে হঠাৎ করেই অপ্রত্যাশিতভাবে বেশ কয়েকটি ঘটনা একই সঙ্গে ঘটে যা এই ছোট বিষয়টিকে একটি বড় সংকটে পরিণত করে।

আল-আকসায় একাধিক অভিযান প্রতিহত করাই শুধু নয়, ছয় ফিলিস্তিনি পরিবারকে তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদের মাধ্যমে তরুণ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের পুনর্জাগরণ ঘটে।

কট্টর ডানপন্থিদের আশ্বস্ত রাখার উদ্দেশ্য থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পরিস্থিতি শান্ত করতে খুব বেশি উৎসাহ দেখাননি।

ফিলিস্তিনে সৃষ্ট আকস্মিক রাজনৈতিক শূন্যতা ও তৃণমূলের প্রতিবাদ হামাসকে তার শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ করে দেয়।

ফিলিস্তিনে এই পরিবর্তনগুলো ইসরায়েলের অজান্তেই ঘটছিল। এক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের সমতা ও রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবির সমাধান নয়, বরং নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো সমস্যা হিসেবে দেখতে থাকা কট্টর ডানপন্থি সরকারের কারণে কিছুটা আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের সাবেক পরিচালক আমি আয়ালন বলেন, ‘আমাদের জেগে উঠতে হবে। বর্তমান অবস্থা যে স্থিতিশীল সে ধারণা থেকে শুরু করে আমরা যেভাবে সবকিছুকে দেখি সেটা বদলাতে হবে।’

লাউডস্পিকারের ওই ঘটনার পরপরই ওল্ড সিটি অফ জেরুজালেমে ঢোকার অন্যতম পথ এবং অন্যতম জনপ্রিয় একটি চত্বর দামাস্কাস গেট বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। রমজানের রাতে তরুণ ফিলিস্তিনিরা সাধারণ সেখানে জমায়েত হন।

পুলিশের মুখপাত্র মিকি রোসেনফেল্ড জানান, বিপজ্জনক ভিড় ও কোনো ধরনের সহিংসতা এড়াতেই চত্বরটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

ফিলিস্তিনিদের জন্য এটা ছিল আরেকটা অপমান। যার কারণে শুরু হয় প্রতিবাদ। প্রতিরাতেই জায়গাটির দখল নেয়ার জন্য পুলিশ ও তরুণদের সংঘর্ষ হতে থাকে।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

পুলিশের ভাষ্য, প্রতিবাদকারীরা বিশৃংখলা তৈরি করেন, যে কারণে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার ছিল। কিন্তু অনেক ফিলিস্তিনির কাছে চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়াটা ছিল একটি ছোট ঘটনা, যার অন্তরালে লুকিয়ে আছে আরও গভীর দুঃখদুর্দশা।

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় দখল হওয়া ও পরে ইসরায়েলে সংযুক্ত পূর্ব জেরুজালেমের বেশিরভাগ বাসিন্দা ফিলিস্তিনি, নিজের ইচ্ছাতে তারা ইসরায়েলি নাগরিক নন। অনেকে মনে করেন, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলে দখলদারদের বৈধতা দেয়া হবে। এ কারণে তারা ভোট দেন না।

অনেকের মতে, তাদের ধীরে ধীরে জেরুজালেম থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। বিল্ডিং পারমিট নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, যে কারণে অধিবাসীদের হয় শহর ছাড়তে হচ্ছে, নয়ত অবৈধ বসতি স্থাপন করতে হচ্ছে; যেগুলো যেকোনো সময় সরকার উচ্ছেদ করে দিতে পারে।

পুরো সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি চত্বর থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্তটি তাদের সবসময় বৈষম্যের শিকার হওয়ার অনুভূতিকে আরও প্রবল করে তোলে।

পূর্ব জেরুজালেমের ২৭ বছর বয়সী কসাই মাজেদ আল কেইমারি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, তারা শহর থেকে আমাদের উপস্থিতি মুছে ফেলতে চাইছে। তাদের সামনে প্রতিবাদ করা ও নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়া জরুরি ছিল আমাদের জন্য।’

দামাস্কাস গেটে সংঘর্ষের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় দ্রুত। ওই সপ্তাহে ঘটনার কয়েকদিন পর ফিলিস্তিনি তরুণেরা ইহুদিদের ওপর আক্রমণ শুরু করেন। অনেকেই ভিডিও করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সাইট টিকটকে পোস্ট করেন। এরপরই ইহুদিদের সংঘবদ্ধ প্রতিশোধ শুরু হয়।

পুলিশি অভিযানের এক সপ্তাহ পর, ২১ এপ্রিল চরম ডানপন্থি ইহুদি সংগঠন লেহাভার কয়েক শ সদস্য জেরুজালেমের কেন্দ্রে মিছিল বের করে। তারা ‘আরবদের মৃত্যু হোক’ স্লোগান দিতে দিতে ফিলিস্তিনি পথচারীদের আক্রমণ করে। এক ভিডিওতে দেখা যায় একদল ইহুদি ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে ও আরেক দল ফিলিস্তিনি ভেবে গাড়ি চালকদের মারধর করছে।

বিদেশি কূটনীতিক ও সম্প্রদায়ের নেতারা দামাস্কাস গেটের বাইরে চত্বরটি খুলে দিয়ে জেরুজালেমের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করার জন্য ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, দেশটির সরকার পুরো বিষয়টিতে অনাগ্রহ দেখায় ও তাদের মনোযোগও সেদিকে ছিল না।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

নেতানিয়াহু মার্চের নির্বাচনের পর জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত ছিলেন। দুই বছরের মধ্যে এটি ছিল চতুর্থ নির্বাচন, যেটাতে কোনো সুস্পষ্ট বিজয়ী পাওয়া যায়নি। জোট গঠনের জন্য তার চরম ডানপন্থি কয়েকজন আইনজীবীকে রাজি করানো দরকার ছিল।

এদের একজন হলেন, ইতামার বেন জিভির। লেহাভার এই সাবেক আইনজীবী ইসরায়েলের প্রতি আনুগত্য নেই এমন আরব নাগরিকদের দেশ থেকে বের করে দেয়ার পক্ষে সরব প্রচার চালিয়েছেন। তিনি ১৯৯৪ সালে হেব্রনে ২৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা ইহুদি মৌলবাদী বারুচ গোল্ডস্টাইনের ভক্ত ও কিছুদিন আগেও তার শয়নকক্ষে বারুচের ছবি ঝুলত।

বেন জিভিরের মতো ব্যক্তিদের সঙ্গে কূটপরামর্শ ও জেরুজালেমে উত্তেজনা বাড়তে দেয়ার মাধ্যমে সংঘাত সৃষ্টি করে ইসরায়েলিদের তার নেতৃত্বের অধীনে রাখার অভিযোগ আছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।

প্রধানমন্ত্রীর জীবনী লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আনশেল ফেফার বলেন, ‘ইহুদি ও আরবদের মধ্যে উত্তেজনা নেতানিয়াহু তৈরি করেননি। ইসরায়েল গঠনের আগে থেকেই তারা এখানে আছেন। তার দীর্ঘ শাসনামলে বারবার তিনি এই উত্তেজনাকে ইন্ধন দিয়েছেন ও নিজের সুবিধার জন্য কাজে লাগিয়েছেন। যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে তখন নেতা হিসেবে তা সামাল দিতে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।’

নেতানিয়াহুর জ্যেষ্ঠ পরামর্শক মার্ক রেগেভ অবশ্য এই বিশ্লেষণকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। রেগেভ বলেন, ‘এর উল্টোটাই সত্য। শান্তি টিকিয়ে রাখতে উনি (নেতানিয়াহু) সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছেন।’

২৫ এপ্রিল ফিলিস্তিনিদের দামাস্কাস গেটের বাইরে জড়ো হতে দেয়ার বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হয় ইসরায়েলি সরকার। তবে পরবর্তী কিছু ঘটনায় পুরো পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়ে।

এর প্রথমটি হল পূর্ব জেরুজালেমের ফিলিস্তিনি এলাকা শেখ জাররা থেকে ছয়টি পরিবারকে উচ্ছেদ। মে মাসের প্রথম ভাগে তাদের মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও এপ্রিল জুড়ে নিয়মিত প্রতিবাদ ও মিছিল হতে থাকে। বসবাসকারীদের দুর্দশা ও দামাস্কাস গেটের ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পান ফিলিস্তিনিরা। যার ফলে প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে এখনই কেন বিস্ফোরণ?

শেখ জাররায় নিজ বাড়িতে পুলিশি হামলায় পা ভেঙে যাওয়া স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের নেতা সাহাল দিয়াব বলেন, ‘আপনারা এখন শেখ জাররাহ, আল আকসা কিংবা দামাস্কাস গেটে যা দেখছেন এসব কিছুর উদ্দেশ্য আমাদের জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত করা। আমার এলাকার ঘটনাটি এর শুরু মাত্র।’

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা শেখ জাররায় বিক্ষোভকারীদের উগ্রতা থামাতে গিয়েছিল। কিন্তু ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায় পুলিশ নিজেই সেখানে আক্রমণ করছে। পুলিশি আগ্রাসনের ছবিগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে যাওয়ার পর এলাকাটি ইসরায়েল, দখলকৃত অঞ্চল ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদের কেন্দ্রে পরিণত হয়।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল গঠিত হওয়ার পর উচ্ছেদ পরিবারগুলোর ফের উচ্ছেদ হওয়ার অভিজ্ঞতাকে লেবাননে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি কবি জেহান বিসেইসো বর্ণনা করেছেন ‘নানা দেশে বাস করা প্রতিটি ফিলিস্তিনির কাছে এটি নিজের অভিজ্ঞতা’ হিসেবে।

এ থেকে আইনি বৈষম্যের একটি উদাহরণ সামনে আসে: ইসরায়েলি আইনে আছে ১৯৪৮ সালের আগে পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদিদের মালিকানাধীন জমি ইহুদিরা ফের দাবি করতে পারবেন। কিন্তু ওই বছর যে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে তাদের বংশধরদের পরিবারিক জমি দাবি করার কোনো আইনি উপায় নেই।

বিসেইসো বলেন, ‘মানুষকে তাদের ঘর থেকে উচ্ছেদ করতে দেখার মধ্যে একটা চক্রাকার ও উস্কানিমূলক বিষয় আছে। লক্ষ মাইল দূরে থাকলেও বিষয়টা খুবই উস্কানিমূলক ও সম্পর্কিত।’

লজ্জাজনক হারের ভয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ২৯ এপ্রিল নির্বাচন বাতিল করে দেন। এতে তার দূর্বলতা প্রকাশ পায়। এই পরিস্থিকে হামাস সুযোগ হিসেবে নেয় ও জেরুজালেমের রক্ষাকারী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে।

গাজা শহরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এমখাইমার আবুসাদা বলেন, ‘এর মাধ্যমে হামাস নিজেদের ফিলিস্তিনের জন্য যোগ্যতর নেতৃত্ব হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।’

আরও পড়ুন:
হত্যাযজ্ঞের পেছনে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক স্বার্থ
আমাদের অফিস ব্যবহার করুন: আল জাজিরা ও এপিকে আনাদোলু
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে নজিরবিহীন ঐক্য
ইসরায়েলের হামলা বন্ধে জাতিসংঘকে চিঠি ইরানের
গাজায় নিহতদের প্রায় ৪৮ শতাংশ নারী-শিশু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
US suspends decision to sanction Israeli battalion
ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘন

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসন। ছবি: সংগৃহীত
চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়নের ওপর সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনই কার্যকর করতে চান না দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসনের কাছে লেখা ব্লিংকেনের এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শুক্রবার এপির হাতে আসা ওই চিঠিতে জনসনকে ব্লিংকেন বলেছেন, নিজেদের অন্যায় সংশোধনের জন্য তিনি ওই সামরিক ইউনিটটিকে (ব্যাটালিয়ন) আরও সময় দিতে চান।

চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।

চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা তহবিল প্রদানে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিল পাস করতে মাইক জনসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ইসরায়েলের ঠিক কোন সেনা ইউনিটের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তটি আপাতত স্থগিত করছে, ব্লিংকেনের চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এপির প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, ‘নেটজাহ ইয়েহুদা’ নামের একটি ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের কোপে পড়েছে। এই সেনা ইউনিটটি ঐতিহাসিকভাবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থান করে আসছে।

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সহায়তা স্থগিতের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ওই ইউনিট ও এর কিছু সদস্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবিক আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালে ওই ইউনিটের হাতে আটক হওয়া এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।

চিঠিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘ওই ব্যাটালিয়নের অন্যায়ের ব্যাপারে ইসরায়েলি সরকারও এখনও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে ইউনিটটির অবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তারা আমাদের তথ্য দিয়ে চলেছে এবং আমরাও ব্যাটালিয়নটির সংশোধনী কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও তা করার (সংশোধনের) পথ চিহ্নিত করতে সর্বদা নিযুক্ত থাকব।’

আন্তর্জাতিক আইন বা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে একটি আইন পাস করে। ব্যাত্যয় ঘটলে ‘লেহি আইন’ নামের ওই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো বিদেশি সেনা ইউনিটকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য করে। তবে সেই দেশের সেনাবাহিনী যদি ওই ইউনিটের করা অপরাধের বিচার করে এবং তাদের সংশোধনের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ওপর এই আইন কার্যকর হবে না বলেও আইনটির একটি ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ব্লিংকেন এই বিষয়টি উল্লেখ করেই মূলত এখনই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে যেতে নারাজ।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজমান। দুই বাহিনী নিয়মিত নিজেদের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান করে থাকে। তবে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবস্থান ও ইসরায়েলকে সহযোহিতা করায় সমালোচিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরই ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের ব্যাপারে সম্প্রতি ইসরায়েলকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জো বাইডেন। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে বেশ কয়েকটি উগ্রবাদী সেটেলারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

বিশেষ
US suspends decision to sanction Israeli battalion
ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘন

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসন। ছবি: সংগৃহীত
চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।

গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ইসরায়েলি সেনা ব্যাটালিয়নের ওপর সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সিদ্ধান্ত এখনই কার্যকর করতে চান না দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের স্পিকার মাইক জনসনের কাছে লেখা ব্লিংকেনের এক চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

শুক্রবার এপির হাতে আসা ওই চিঠিতে জনসনকে ব্লিংকেন বলেছেন, নিজেদের অন্যায় সংশোধনের জন্য তিনি ওই সামরিক ইউনিটটিকে (ব্যাটালিয়ন) আরও সময় দিতে চান।

চিঠিতে ব্লিংকেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের একটি সেনা ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই হামাস বা অন্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক সহায়তায় প্রভাব ফেলবে না।

চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও গাজায় ক্রমবর্ধমান মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা তহবিল প্রদানে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিল পাস করতে মাইক জনসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ইসরায়েলের ঠিক কোন সেনা ইউনিটের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্তটি আপাতত স্থগিত করছে, ব্লিংকেনের চিঠিতে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এপির প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে, ‘নেটজাহ ইয়েহুদা’ নামের একটি ইউনিট যুক্তরাষ্ট্রের কোপে পড়েছে। এই সেনা ইউনিটটি ঐতিহাসিকভাবে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থান করে আসছে।

ইসরায়েলি ব্যাটালিয়নকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র

চলতি সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত সহায়তা স্থগিতের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ শুরুর আগে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ওই ইউনিট ও এর কিছু সদস্য ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবিক আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালে ওই ইউনিটের হাতে আটক হওয়া এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত।

চিঠিতে ব্লিংকেন বলেন, ‘ওই ব্যাটালিয়নের অন্যায়ের ব্যাপারে ইসরায়েলি সরকারও এখনও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে ইউনিটটির অবস্থা সম্পর্কে প্রতিনিয়ত তারা আমাদের তথ্য দিয়ে চলেছে এবং আমরাও ব্যাটালিয়নটির সংশোধনী কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ ও তা করার (সংশোধনের) পথ চিহ্নিত করতে সর্বদা নিযুক্ত থাকব।’

আন্তর্জাতিক আইন বা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে একটি আইন পাস করে। ব্যাত্যয় ঘটলে ‘লেহি আইন’ নামের ওই আইনটি যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো বিদেশি সেনা ইউনিটকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য করে। তবে সেই দেশের সেনাবাহিনী যদি ওই ইউনিটের করা অপরাধের বিচার করে এবং তাদের সংশোধনের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ওপর এই আইন কার্যকর হবে না বলেও আইনটির একটি ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ব্লিংকেন এই বিষয়টি উল্লেখ করেই মূলত এখনই সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তে যেতে নারাজ।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজমান। দুই বাহিনী নিয়মিত নিজেদের মধ্যে প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের আদান-প্রদান করে থাকে। তবে সম্প্রতি অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবস্থান ও ইসরায়েলকে সহযোহিতা করায় সমালোচিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

এরই ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনে আগ্রাসনের ব্যাপারে সম্প্রতি ইসরায়েলকে সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জো বাইডেন। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগে বেশ কয়েকটি উগ্রবাদী সেটেলারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

আরও পড়ুন:
ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

বিশেষ
Britneys legal battle with her father ends

বাবার সঙ্গে ব্রিটনির বিরোধের অবসান

বাবার সঙ্গে ব্রিটনির বিরোধের অবসান জেমি স্পিয়ার্স ও তার মেয়ে ব্রিটনি স্পিয়ার্স। ছবি: সংগৃহীত
আদালত ২০২১ সালের শেষের দিকে পপ তারকার ১৩ বছরের কনজারভেটরশিপ অবসানের পক্ষে রায় দেয়। এর ফলে তার ব্যক্তিগত ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তার বাবা। তবে জেমি স্পিয়ার্স মেয়ে ব্রিটনির কাছে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার আইনি ফি দাবি করে বসেন। এ নিয়ে নতুন করে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন বাবা ও মেয়ে।

বাবা জেমি স্পিয়ার্সের সঙ্গে চলা আইনি বিরোধ মিটিয়ে ফেলছেন আমেরিকান পপ আইকন ব্রিটনি স্পিয়ার্স। বিষয়টির নিষ্পত্তি করা নিয়ে দু’পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন ব্রিটনির অ্যাটর্নিরা।

লস অ্যাঞ্জেলেস সুপিরিয়র কোর্টে নিষ্পত্তিটি দায়ের করা হযয়েছে। তাদের চলমান আইনি বিরোধের বিষয়ে চুক্তির কোনো শর্ত প্রকাশ করা হয়নি।

আদালত ২০২১ সালের শেষের দিকে পপ তারকার ১৩ বছরের কনজারভেটরশিপ অবসানের পক্ষে রায় দেয়। এর ফলে তার ব্যক্তিগত ও আর্থিক লেনদেনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারান তার বাবা। তবে জেমি স্পিয়ার্স মেয়ে ব্রিটনির কাছে প্রায় দুই মিলিয়ন ডলার আইনি ফি দাবি করে বসেন। এ নিয়ে নতুন করে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন বাবা ও মেয়ে।

বিরোধ নিষ্পত্তির ফল সম্পর্কে উভয় পক্ষের অ্যাটর্নিরা ইতিবাচক কথা বলেছেন।

গায়িকার অ্যাটর্নি ম্যাথিউ রোজেনগার্ট সিএনএনকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতে উপস্থিত হতে বা জড়িত থাকতে চাননি। তার স্বাধীনতার ইচ্ছা এখন সত্যিকার অর্থেই পূর্ণতা পেয়েছে।’

জেমি স্পিয়ার্সের অ্যাটর্নি অ্যালেক্স উইনগার্টেন বলেন, ‘এসব শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি আনন্দিত। আমার মেয়েকে আমি খুব ভালোবাসি। তাকে রক্ষা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। ব্রিটনির জন্য সেরাটা আশা করি।’

আদালতের নির্দেশিত কনজারভেটরশিপের আওতায় ২০০৮ সালে ব্রিটনির বাবা ১৩ বছর তার কনজারভেটর হিসেবে কাজ করেন। তিনি তার প্রাপ্তবয়স্ক কন্যার সব আর্থিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করেন।

তবে ২০২১ সালের জুনে ব্রিটনি বিচারকের কাছে কনজারভেটরশিপকে অপমান হিসেবে উল্লেখ করে এর থেকে তাকে মুক্ত করার অনুরোধ জানান।

তিনি অভিযোগ করেন, কনজারভেটরশিপ চলাকালীন ম্যানেজমেন্ট তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সফরে যেতে বাধ্য করে। তাকে লিথিয়াম দেয়া হয়, যার কারণে তিনি মাতাল বোধ করেন এবং তাকে বিয়ে করার বা সন্তান নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এ কারণে তিনি জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য আইইউডি ব্যবহার করতে বাধ্য হন।

ব্রিটনির কনজারভেটরশিপ শেষ হওয়ার দু’মাস আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একজন বিচারক স্পিয়ার্সের বাবা জেমিকে তার মেয়ের সংরক্ষকের দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেন।

আরও পড়ুন:
অনাগত সন্তান হারানোর কথা জানালেন ব্রিটনি

মন্তব্য

বিশেষ
Trumps former aide saw Daniels at Trump Tower

ট্রাম টাওয়ারে ড্যানিয়েলসে দেখেছেন ট্রাম্পের সাবেক সহকারী

ট্রাম টাওয়ারে ড্যানিয়েলসে দেখেছেন ট্রাম্পের সাবেক সহকারী স্টর্মি ড্যানিয়েলস। ছবি: সংগৃহীত
হাশ মানি ট্রায়ালের শুনানিতে ট্রাম্পের সাবেক সহকারী রোনা গ্রাফ আদালতকে জানান, তার অস্পষ্টভাবে মনে আছে যে ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অভিযোগ থাকা পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে তিনি ট্রাম্প টাওয়ারের ২৬ তলার রিসেপশনে দেখেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হাশ মানি ট্রায়ালের অষ্টম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এদিন ট্রাম্পের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের অভিযোগ থাকা পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ট্রাম্পের কার্যালয়ে দেখেছেন বলে আদালতে দাবি করেছেন ট্রাম্পের সাবেক সহকারী রোনা গ্রাফ।

এবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলার শুনানি কার্যক্রমে শুক্রবার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হয় রোনা গ্রাফকে।

ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে ৩৪ বছর কাজ করা গ্রাফ আদালতকে জানান, তার অস্পষ্টভাবে মনে আছে যে তিনি স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ট্রাম্প টাওয়ারের ২৬ তলার রিসেপশনে দেখেছেন।

ট্রাম্পের আইনজীবী অবশ্য এ দাবিকে খারিজ করে দিয়ে আদালতকে বলেন, ওই সময় ট্রাম্প রিয়েলিটি টিভি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেনটিস’ নিয়ে কাজ করছিলেন। ওই শো-র জন্য অনেককেই নিজের অফিসে ডাকতেন ট্রাম্প।

গ্রাফের পর সাক্ষ্য দিতে আসেন ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের সিনিয়ন ম্যানেজিং ডিরেক্টর গ্যারি ফারো। তিনি জানান, ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে রেসোল্যুশন কনসালট্যান্টস এলএলসি নামে নতুন একটি বিজনেস অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে সাহায্য করেন তিনি।

সরকার পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, ট্রাম্পের যৌন সম্পর্ক নিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে এই কোম্পানির মাধ্যমেই কোহেন ট্রাম্পের হয়ে ড্যানিয়েলসকে ১৩০ হাজার ডলার দিয়েছেন। এটিই ‘হাশ মানি’ হিসেবে পরিচিত।

এদিন শুনানির শুরুতে চতুর্থবারের মতো আদালতে হাজির হন ট্যাবলয়েড ন্যাশনাল এনকোয়্যারারের প্রকাশক ডেভিড পেকার। তাকেও নানাভাবে প্রশ্ন করেন দু’পক্ষের আইনজীবীরা।

পেকার জানান, ২০১৫ সালে ট্রাম্প টাওয়ারে এক আলোচনার পর তিনি এনকোয়্যারার ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নেতিবাচক প্রতিবেদন সম্পর্কে আগে থেকেই কোহেনকে অবহিত করতে রাজি হন।

পেকার এও দাবি করেন যে ট্রাম্প টাওয়ারের ওই বৈঠকে তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রতিবেদন অর্থের বিনিময়ে না ছাপতে দেয়া বা ‘ক্যাচ অ্যান্ড কিল’ কৌশল নিয়ে আলোচনা করেননি।

তিনদিন বিরতি শেষে মঙ্গলবার পুনরায় এই মামলার শুনানি শুরু হবে।

আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন যুবকের
ট্রাম্পের আবেদন বাতিল

মন্তব্য

বিশেষ
Qatar will give 3 million dollars to the human rights organization of Ukraine

ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থাকে ৩০ লাখ ডলার দেবে কাতার

ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থাকে ৩০ লাখ ডলার দেবে কাতার কাতারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ললওয়াহ আল-খাতের গত ২৪ এপ্রিল দোহায় ইউক্রেনের শিশু ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাগত জানান। ছবি: এএফপি
শিশু, সহিংসতায় আক্রান্ত নাগরিকসহ ইউক্রেনের সর্বসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগে সহায়তার অংশ হিসেবে কাতার এ অর্থ দিচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ইউক্রেনের পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনারের কার্যালয়কে ৩০ ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে কাতার।

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটির ‘কল্যাণ ও সুরক্ষা’য় সহায়তার জন্য এ অর্থ দেয়া হচ্ছে বলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, শিশু, সহিংসতায় আক্রান্ত নাগরিকসহ ইউক্রেনের সর্বসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগে সহায়তার অংশ হিসেবে কাতার এ অর্থ দিচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়টির এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনে সংঘাতপীড়িত পরিবারগুলোকে সাহায্যের জন্য ক্রমবর্ধমান আইনি সহায়তা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ অর্থ।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, মানুষের মর্যাদাকে সম্মান করা হয় এবং প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকারের সুরক্ষা দেয়া হয়, এমন বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়াসের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থাটি।

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি জানান, কাতারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে ইউক্রেনে ২০২২ সালে রুশ হামলার পর জোর করে রাশিয়ায় পাঠানো ইউক্রেনীয় ১৬ শিশু।

জেলেনস্কি বুধবার জানান, কাতারের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার সুবাদে শিশুরা মুক্ত হয়ে তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছে।

আরও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত
ন্যাটো দেশে হামলা নয়, ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিলে ধ্বংস করা হবে
কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফরে গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়
ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা এলেই পারমাণবিক যুদ্ধ: পুতিন
ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে না ন্যাটো

মন্তব্য

বিশেষ
Two CRPF personnel killed two injured in attack in Manipur

মণিপুরে হামলায় দুই সিআরপিএফ সদস্য নিহত, দুজন আহত

মণিপুরে হামলায় দুই সিআরপিএফ সদস্য নিহত, দুজন আহত ভারতের মণিপুরে দায়িত্বরত নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য। ছবি: এনডিটিভি
পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলো জানায়, মণিপুরে সংকট শুরুর প্রথম বার্ষিকীর ছয় দিন আগে এ হামলা হলো। পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের হামলা আগামী দিনগুলোতে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় হামলায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) দুই সদস্য নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার গভীর রাতে এ হামলা চালানো হয়, যেটি জঙ্গিরা করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিদের একটি দল নারানসেইনা গ্রামের পাহাড়ি অংশ থেকে উপত্যকা অঞ্চলের দিকে সিআরপিএফের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এর জবাবে সিআরপিএফ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। এরই মধ্যে চৌকিতে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন বাহিনীর চার সদস্য।

এ চারজনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলেও দুজনের মৃত্যু হয়। অপর দুজনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রগুলো জানায়, মণিপুরে সংকট শুরুর প্রথম বার্ষিকীর ছয় দিন আগে এ হামলা হলো। পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের হামলা আগামী দিনগুলোতে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রাণ হারানো দুই সিআরপিএফ সদস্য ১২৮ ব্যাটালিয়নের হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন, যাদের কর্মস্থল ছিল নারানসেইনা এলাকায়। এ দুজন হলেন উপপরিদর্শক এন সরকার ও প্রধান কনস্টেবল অরূপ সাইনি।

আহত দুজন হলেন পরিদর্শক যাদব দাস ও কনস্টেবল আফতাব দাস।

হামলাকারীরা শুক্রবার মধ্যরাতে হামলা শুরু করে বলে খবর পাওয়া যায়, যেটি চলে রাত সোয়া দুইটা পর্যন্ত।

আরও পড়ুন:
ভারতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন: শীর্ষ ধনী প্রার্থীর ৬২২ কোটি রুপির সম্পদ
ভোটকেন্দ্রে টানতে ভারতে ‘ফ্রি বিয়ার’
ভারতে নির্বাচন পরবর্তী বৃহত্তম চ্যালেঞ্জ বেকারত্ব: জরিপ
মুসলিমদের জড়িয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ মোদির, সমালোচনার ঝড়
মালদ্বীপের নির্বাচনে ভারতবিরোধী মুইজ্জুর দলের বিশাল জয়

মন্তব্য

বিশেষ
The wealth of the richest candidate in Indias second phase election is Rs 622 crore

ভারতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন: শীর্ষ ধনী প্রার্থীর ৬২২ কোটি রুপির সম্পদ

ভারতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন: শীর্ষ ধনী প্রার্থীর ৬২২ কোটি রুপির সম্পদ ভেঙ্কটরমন গৌড়া। ছবি: এনডিটিভি
লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন নাগোরাও পাটিল। মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার সম্পদ রয়েছে ৫০০ রুপি এবং কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নেই।

ভারতের ১৩ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এর আগে ভারতের ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট শুরু হয় ১৯ এপ্রিল।

দ্বিতীয় দফার ভোটে সবচেয়ে বেশি ও সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তথ্য দিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী হলেন কর্নাটকের কংগ্রেস প্রার্থী ভেঙ্কটরমন গৌড়া। জাতীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, ৬২২ কোটি রুপি সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে তার। তিনি এ নির্বাচনে এইচডি কুমারস্বামীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।

দ্বিতীয় ধনী প্রার্থী হলেন কংগ্রেসের ডিকে সুরেশ। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৯৩ কোটি রুপি। ডিকে সুরেশ বেঙ্গালুরু গ্রামীণ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন।

তৃতীয় ধনী প্রার্থী হলেন বিজেপি নেত্রী এবং অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তিনি মথুরা লোকসভা আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ২৭৮ কোটি রুপি। মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় শর্মা চতুর্থ ধনী প্রার্থী, তার সম্পদের পরিমাণ ২৩২ কোটি রুপি।

সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে কম যাদের

লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন নাগোরাও পাটিল। মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার সম্পদ রয়েছে ৫০০ রুপি এবং তার কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নেই।

এরপরেই আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজেশ্বরী কেআর। তিনি কেরালার কাসারাগড় আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ১০০০ রুপি।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লোকসভায় ৩৫৩টি আসন পায় এনডিএ, যেখানে বিজেপির একক আসনের সংখ্যা ৩০৩টি।

ভারতে এবার ১৮তম লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে, যার ব্যাপ্তিকাল ৪৪ দিন। দেশটিতে মোট সাত দফায় এ ভোট হবে। লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট ১ জুন।

আরও পড়ুন:
ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ ৫ জুন
উপজেলা ভোটে প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
ভোটের মাঠে উপজেলা প্রতি থাকছে ২-৪ প্লাটুন বিজিবি

মন্তব্য

p
উপরে