তৃণমূল নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার বিষয়টি আবার দেখা গেল। রোববারের চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করে ২০১টি ইউনিয়নে জিতেছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এর বিপরীতে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন ৩৮৮টি ইউনিয়নে।
গত ১০ নভেম্বর ৮৪০টি ইউনিয়নে ভোটের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সে সময় ঠিক হয় ভোট হবে ২৩ ডিসেম্বর। পরে পেছানো হয় তিন দিন।
এর মধ্যে বেশ কিছু ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। রোববারের ভোটে কয়েকটি ইউনিয়নে ফলাফল স্থগিত থাকে। একটিতে দুই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর ভোট সমান হয়।
বাকি ৭৮১টি ইউনিয়নে ভোটের ফল প্রকাশ করা হয়। এই ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি ৩৮৭টি ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০১টি ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে দলের প্রতীক নৌকাকে চ্যালেঞ্জ করা ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত দুই জেলা মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে মোট ২৮টি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। সেখানে নির্বাচিত সবাই ক্ষমতাসীন দলের অনুসারী। তবে তারা কেউ নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করেননি। সেখানে আওয়ামী লীগ কাউকে প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত রাখে।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তির জ্ঞাতিগোষ্ঠী, আঞ্চলিকতা নানা কিছু নির্ভর করে। সে কারণে ফলাফল বিপর্যয়।
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের ২৬৭ জন নেতা নৌকার পরাজয়ের কারণ হয়েছিলেন।
প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনেও কয়েক শ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের হারিয়েছেন দলের নেতারা।
কোন বিভাগে বেশি বিদ্রোহ
বিভাগওয়ারি ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিদ্রোহী নেতারা নৌকাকে সবচেয়ে বেশি বিপাকে ফেলেছেন সিলেট বিভাগে। এই বিভাগের চার জেলায় নৌকা যত এলাকায় জিতেছে, প্রায় সমানসংখ্যক এলাকায় জয় পেয়েছেন বিদ্রোহী নেতারা।
এই বিভাগে নৌকা জয় পেয়েছে ৩২ ইউনিয়নে, অন্যদিকে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ২৬টিতে।
দলের মধ্যে এক বা একাধিক নেতার ভোট ভাগাভাগির সুযোগ নিয়ে কোথাও কোথাও স্বতন্ত্র পরিচয়ে বিএনপির, কোথাও জামায়াতের নেতারা, কোথাওবা অন্য প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
সিলেটের পর বিদ্রোহী নেতারা নৌকা বেশি ডুবিয়েছেন আওয়ামী লীগের শক্তিশালী অবস্থানের ঢাকা বিভাগে। এখানে নৌকা জিতেছে ৬৫টি ইউনিয়নে, আর বিদ্রোহীরা জিতেছেন ৩৯টি এলাকায়।
এমনকি দলের ঘাঁটি ফরিদপুরের একটি উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতেই হেরে গেছেন নৌকার প্রার্থীরা। সেখানে বিএনপির তিনজন নেতা চেয়ারম্যান হয়েছেন, যেখানে নৌকার চেয়ারম্যান থাকবেন শুধু একজন।
রাজশাহী বিভাগে নৌকা জিতেছে ৫৯ ইউনিয়নে, বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ৩২টিতে। খুলনা বিভাগে নৌকা জিতেছে ৩৭ ইউনিয়নে, বিদ্রোহীরা ২৬টিতে। বরিশাল বিভাগে নৌকা জিতেছে ১০টিতে; বিদ্রোহীরা ৬টিতে।
এই তুলনায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের পরিস্থিতি তাও কিছুটা ভালো। সর্ব উত্তরের বিভাগটিতে নৌকা জয় পেয়েছে ৬১ ইউনিয়নে, বিদ্রোহীরা ২৬টিতে, মধ্যাঞ্চলের বিভাগটিতে নৌকা জিতেছে ৩২টিতে, বিদ্রোহীরা ১৫টিতে আর সর্ব দক্ষিণের বিভাগটিতে নৌকা জিতেছে ৯১টিতে, বিদ্রোহীরা ৩১টিতে।
কী বলছেন দলের নেতারা
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দলে মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে বিদ্রোহ দেখা যায়। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বহিষ্কারের পদক্ষেপ, ভবিষ্যতে আর কখনও মনোনয়ন না দেয়ার সতর্কতার পরও বিদ্রোহী নেতারা সেসব গা করেননি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তির জ্ঞাতিগোষ্ঠী, আঞ্চলিকতা নানা কিছু নির্ভর করে। সে কারণে ফলাফল বিপর্যয়।’
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘তৃণমূল, অর্থাৎ ইউনিয়ন, থানা ও জেলা থেকে যে তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়, আমার মনে হয় সেখানে কোনো সমস্যা আছে। আমার মনে হয়, তারা ঠিকমতো নাম পাঠাচ্ছেন না।’
তৃণমূলে দলের মধ্যে মনোনয়ন নিয়ে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে, সেটি জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে অবশ্যই প্রভাব পড়বে না। কারণ সেখানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কেউ দলের বিরুদ্ধে যায় না।’
একই প্রশ্নে দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সম্পর্ক নেই। যারা বিদ্রোহী হয়েছেন তারা তো জানেন, এটা ক্ষমতা পরিবর্তনের নির্বাচন নয়। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলে আমরা মনে করি।’
নৌকার চেয়ে বিদ্রোহীরাই বেশি
সারা দেশ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ইউনিয়নে জিতলেও আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিভাগের ফরিদপুরের পরিস্থিতি ভিন্ন।
এই জেলায় বোয়ালমারীতে ১০টি এবং আলফাডাঙ্গায় তিনটি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে নৌকার প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন তিনটিতে। তার মধ্যে দুটি আবার আলফাডাঙ্গা উপজেলায়।
বোয়ালমারীতে শুধু একটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। সেখানে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন তিনটিতে। ইসলামী আন্দোলনও জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের সমান একটিতে।
এই জেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ছয়টি ইউনিয়নে।
তৃণমূল, অর্থাৎ ইউনিয়ন, থানা ও জেলা থেকে যে তথ্য-উপাত্ত পাঠানো হয়, আমার মনে হয় সেখানে কোনো সমস্যা আছে। আমার মনে হয়, তারা ঠিকমতো নাম পাঠাচ্ছেন না।
পাবনায় নৌকার প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন চারটি ইউনিয়নে। জেলায় দলের বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ১১টিতে। বিএনপি ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নৌকার সমান চারটিতে জয় পেয়েছেন।
ঝিনাইদহেও প্রায় একই পরিস্থিতি। সেখানে নৌকা জয় পেয়েছে পাঁচটি ইউনিয়নে। বিপরীতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ১০টিতে।
নীলফামারীতে নৌকা নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন তিনটিতে, আর নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহীরা জিতেছেন দ্বিগুণসংখ্যক ছয়টিতে।
অতটা খারাপ না হলেও সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জেও নৌকার চেয়ে বেশি জিতেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন সাতটি ইউনিয়নে। দলের বিদ্রোহীরা সেখানে জিতেছেন ৯টিতে। একই অবস্থা মৌলভীবাজারেও। সেখানেও নৌকা জিতেছে সাতটিতে, বিদ্রোহীরা জিতেছেন ৯টিতে।
টাঙ্গাইলেও বেশি জিতেছেন দলের বিদ্রোহীরা। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন পেয়ে জিতেছেন ৯ জন আর মনোনয়ন না পেয়ে প্রার্থী হয়ে জিতেছেন ১০ জন।
ভোলাতেও নৌকা নিয়ে জিততে পেরেছেন তিনজন, আর নৌকা না পেয়ে প্রার্থী হয়ে বাজিমাত করেছেন চারজন।
শেরপুরে নৌকা নিয়ে জিতেছেন দুজন, বিদ্রোহীরা জিতেছেন তিনটি এলাকায়।
গাইবান্ধা জেলায় নৌকা নিয়ে জিতেছেন চারজন, আর দলের প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে জিতেছেন পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতা।
লক্ষ্মীপুরে নৌকা নিয়ে জিতেছেন ছয়জন, বিদ্রোহীরা জিতেছেন সাতটিতে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চারটি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ একটিতেও জয় পায়নি। বিদ্রোহীরাও অবশ্য জিততে পারেনি কোথাও। বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটিতে আর জামায়াতের একজন একটিতে জয় পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগ-বিদ্রোহী সমানে সমান
সাতক্ষীরায় নৌকার প্রার্থী ও বিজয়ী বিদ্রোহী নেতার সংখ্যা সমানসংখ্যক, তিনজন করে।
গাজীপুরে ভোট হয়েছে দুটি ইউনিয়নে। এর মধ্যে একটিতে নৌকার প্রার্থী এবং একটিতে দলের বিদ্রোহী নেতা জয় পেয়েছেন।
ময়মনসিংহ জেলায় নৌকা নিয়ে জিতেছেন ১০ জন প্রার্থী। বিপরীতে নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে লড়াই করে জিতেছেন আটজন।
খুলনা বিভাগে যশোরে নৌকা নিয়ে জিতেছেন চারজন নেতা। বিপরীতে বিদ্রোহী নেতা জিতেছেন তিনটি এলাকায়। পাশের জেলা নড়াইলে নৌকা নিয়ে জিতেছেন সাতজন, আর বিদ্রোহীরা জিতেছেন পাঁচটিতে।
রাজশাহী বিভাগের বগুড়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন তিনটি ইউনিয়নে। দলের বিদ্রোহীরা জিতেছেন দুটিতে।
রংপুর বিভাগে কুড়িগ্রামে নৌকা নিয়ে জিতেছেন সাতটি ইউনিয়নে। বিপরীতে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন ছয়টি এলাকায়।
চট্টগ্রাম বিভাগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জিতেছেন পাঁচটি ইউনিয়নে। নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন চার এলাকায়।
একই বিভাগের কক্সবাজারে নৌকার প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন পাঁচ ইউনিয়নে। আর বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন তিনটিতে।
অন্যান্য জেলায় কী চিত্র
বাকি জেলার মধ্যে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়ে আওয়ামী লীগ সাতটিতে, দলের বিদ্রোহী দুটিতে, ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ ১৪টিতে, দলের বিদ্রোহী একটিতে, দিনাজপুরে আওয়ামী লীগ ১০টিতে, দলের বিদ্রোহী একটিতে, রংপুরে আওয়ামী লীগ সাতটিতে ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা জিতেছেন দুটিতে।
রাজশাহী বিভাগে রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ১০টিতে, বিদ্রোহীরা চারটিতে, সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ ১৫টিতে, বিদ্রোহীরা ছয়টিতে, নাটোরে আওয়ামী লীগ আটটিতে, বিদ্রোহীরা চারটিতে, নওগাঁয় আওয়ামী লীগ ১১টিতে, বিদ্রোহীরা পাঁচটিতে জয় পেয়েছেন।
এই জেলার জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ রোববারের ভোটে ১২টির সব কয়টিতে জয় পেয়েছে। বিদ্রোহীরা সেখানে একটিতেও জিততে পারেননি। বিএনপির একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছেন একটিতে।
খুলনা বিভাগের খুলনায় একটি ইউনিয়নেই ভোট হয়েছে। তাতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। একই বিভাগের কুষ্টিয়ায় নৌকার প্রার্থীরা জিতেছেন সাতটি ইউনিয়নে, দলের বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন চারটিতে, মাগুরায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ছয়টিতে আর বিদ্রোহী প্রার্থী জিতেছেন একটিতে।
এই বিভাগে চুয়াডাঙ্গার চারটি ইউনিয়নে ভোট হয়েছে, যার প্রতিটিতেই জয় পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা।
বরিশাল বিভাগের বরিশালে নৌকার প্রার্থীরা দুটি ইউনিয়নে এবং বিদ্রোহী প্রার্থী একটিতে, পটুয়াখালীতে পাঁচটি ইউনিয়নে জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা, বিদ্রোহী প্রার্থীর জয় এসেছে একটিতে।
ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোণায় নৌকা নিয়ে জিতেছেন আটজন প্রার্থী। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে জয় পেয়েছেন তিনজন।
এই জেলার জামালপুরে রোববার ভোট হয়েছে ১২টি ইউনিয়নে, যার প্রতিটিতেই জয় পেয়েছেন নৌকা।
ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জে নৌকার প্রার্থীরা জিতেছেন ৯টিতে, বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন চারটিকে, মুন্সীগঞ্জে নৌকা জিতেছে ৯ ইউনিয়নে, নরসিংদীতে নৌকা জিতেছে সাতটিতে, বিদ্রোহীরা চারটিতে, কিশোরগঞ্জে নৌকা ৯টিতে, বিদ্রোহীরা ছয়টিতে, রাজবাড়ীতে নৌকা ছয়টিতে এবং বিদ্রোহীরা জিতেছেন দুটি ইউনিয়নে।
এই বিভাগে গোপালগঞ্জে ১২টি ইউনিয়নের প্রতিটিতেই জয় পেয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। অন্যদিকে মাদারীপুরের ৯টি ও শরীয়তপুরের ১৯টি ইউনিয়নে বিজয়ীরা সবাই আওয়ামী লীগ ঘরানার। এই দুই জেলায় আওয়ামী লীগ কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দিয়েছিল।
সিলেট বিভাগের সিলেটে নৌকার প্রার্থীরা জিতেছেন সাতটি ইউনিয়নে। অন্যদিকে বিদ্রোহীরা জিতেছেন চারটিতে। হবিগঞ্জে নৌকা জয় পেয়েছে ১১ ইউনিয়নে, বিপরীতে বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছেন চারটি এলাকায়।
চট্টগ্রাম বিভাগে চট্টগ্রামে নৌকা জিতেছে ১৭টি ইউনিয়নে, বিদ্রোহীরা জয় পেয়েছে পাঁচটিতে, নোয়াখালীতে নৌকা জিতেছে ৯টিতে, বিদ্রোহীরা ৬টিতে, কুমিল্লায় নৌকা ১২টিতে, বিদ্রোহীরা দুটিতে, চাঁদপুরে নৌকা ১১টিতে আর বিদ্রোহীরা জিতেছেন চার ইউনিয়নে।
এই বিভাগের চার জেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কোনো প্রার্থী জয় পায়নি অথবা বিদ্রোহী ছিল না।
বান্দরবানের আটটি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা ছয়টিতে এবং দুটিতে কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, এমন প্রার্থী, খাগড়াছড়ির আটটির মধ্যে নৌকা পাঁচটিতে আর তিনটিতে দল নিরপেক্ষ প্রার্থী এবং রাঙামাটির ১০টির মধ্যে একটিতে নৌকা ও বাকি ৯টিতে দল নিরপেক্ষ স্থানীয়রা জয় পেয়েছেন।
এই বিভাগের আরেক জেলা ফেনীতে ভোট হয়েছে মোট ১৫টিতে। এর মধ্যে নৌকা জয় পেয়েছে ১৪টিতে, একটিতে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিউজবাংলার জেলা প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন:ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে পুরস্কৃত করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বৃহষ্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর রেল ভবনে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে রেল স্টেশনে তামাক সচেতনতা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য আরএনবি ও জিআরপি (পুলিশ) এবং রেলওয়ের ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সম্মাননা পদক ২০২৫ প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে রেলওয়ে কর্মীদের উৎসাহিত করে দেশের সকল স্টেশন ও ট্রেনকে ধূমপান ও তামাকমুক্ত করার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন-
মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার, উপসচিব (বাজেট অধিশাখা), রেলপথ মন্ত্রণালয়; মোঃ জাকির হোসেন, পরিচালক ট্রাফিক (পরিবহণ), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আনসার আলী, উপ-পরিচালক (টিসি), বাংলাদেশ রেলওয়ে; গৌতম কুমার কুণ্ডু, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (লালমনিরহাট), বাংলাদেশ রেলওয়ে; ফারহান মাহমুদ, এডিসিও (চট্টগ্রাম), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোহাম্মদ আমিনুল হক, এসিও-১ (ঢাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের বেজলাইন ও এন্ডলাইন সার্ভের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্ক এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন। এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা/কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার যাত্রীসেবার মানের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অনুষ্ঠানে তার বিস্তারিত আলোচনা করেন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের অপব্যবহার রোধে ভূমিকা পালনকারী সাবেক ও বর্তমান সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তারা। তাঁরা রেলওয়ের প্রতিটি স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর নজরদারি এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যাত্রী ও কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলার ওপর তাঁরা গুরুত্বারোপ করেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “রেলপথ জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। তাই ধূমপানমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আমরা কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখাবো না।”
অনুষ্ঠানে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ধূমপান ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা পরিষদের সভা আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন।
দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস্য ভূমি। এটা কিন্তু খুব কমই প্রতিকার নিতে পারছি আমরা। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমারও দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণেরও সচেতনতা প্রয়োজন। ফেনীতে অনুষ্ঠিত অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি ফেনী থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
ফেনী জেলা প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো: পারভেজ হাসান বিপিএএ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব, সাংবাদিক আবু তাহের, ফেনী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নুরুল আমিন খান, ফেনী সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজিব তালুকদার, ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা নাসরিন কান্তা, ফেনী জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আব্দুল হান্নান, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বৃহত্তর নোয়াখালীর ভূমি বিষয়ক সার্চ অফিসার সরোয়ার উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফাহমিদা হক প্রমূখ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলার ভূমি বিভাগ, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে, কিন্তু এই পদক্ষেপটি আমরা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাস্তবিক অর্থে,স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
উপদেষ্টা আজ বুধবার (১৩ আগষ্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) কনফারেন্স রুমে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত "বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন"- শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরিসংখ্যান বহন করলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা গ্রহণের সময় আসবে, এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে তা অনুযায়ী নিয়ম মেনে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক ও জিএসপি সুবিধার প্রভাব কোথায় বৃদ্ধি পাবে এবং কোথায় হ্রাস পাবে, তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় গবাদিপশুর বাজারে প্রভাব পড়বে এবং লাখ লাখ খামারি, বিশেষ করে গরীব মহিলারা যারা গরু লালন-পালন করে উদ্যোক্তা হিসেবে অবদান রাখছেন, তাদের ক্ষতি হবে।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। কারণ, আমদানি করা মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগ প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, সাগরের সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি হ্রাস করতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এসময় আরো বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার সানিয়া রিড স্মিথ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ, অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কো-অর্ডিনেটর বারাকাত উল্লাহ মারুফ।
তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হয়ে অপতথ্য ও গুজবের বিরুদ্ধে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নীতি, উন্নয়ন কর্মসূচি ও সাফল্যের প্রচারে তথ্য অধিদপ্তর প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই দায়িত্ব নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে।
বুধবার তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘তথ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম অধিকতর দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে’ আয়োজিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর।
তথ্য সচিব বলেন, সরকার যেসব জনমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করছে, সেগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা সরকারের বার্তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেন, তারাই প্রথম চালিকাশক্তি। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকা সময়ের দাবী।
বর্তমানে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অপতথ্য ও গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, অপতথ্যের বিরুদ্ধে আপনাদেরই দক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ, সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত প্রচার করতে হবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, শিক্ষিত ও দক্ষ। অপতথ্য ছড়ানো গোষ্ঠী ছোট এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা অশিক্ষিত বা সরকারের কাজ সম্পর্কে অবগত নয়। সে তুলনায় আপনারা অনেক বেশি যোগ্য।
তথ্য সচিব বলেন, নিউজ ও কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে শুধু পরিসংখ্যান নয়, মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তনের দিকগুলোও তুলে ধরতে হবে। এজন্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট, ছোট ভিডিও, লাইভ কভারেজ এবং সময়োপযোগী গল্প বলার কৌশল প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ।
তরুণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মাহবুবা ফারজানা বলেন, আপনারা ইয়াং স্টার। আপনারা অবশ্যই পারবেন। প্রচার-প্রচারণার মান উন্নয়ন করুন। লেখার মান, বলার মান উন্নত করুন। প্রতিটি সংবাদ যেন সরকারের সাফল্যের জীবন্ত চিত্র হয়।
তথ্য সচিব আরও বলেন, সংবাদ শুধু নয়, তথ্য হচ্ছে বিশ্বাসের ভিত্তি। সত্যনিষ্ঠ খবর প্রচার করতে হবে। তথ্যের মাধ্যমে আস্থা গড়ে তুলেই বৈষম্যহীন দেশ গড়তে চাই।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে ৬৩.৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ও সেবা রফতানি হবে বাংলাদেশ থেকে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এ ঘোষণা দেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লিখিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সমাপ্ত অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ বাংলাদেশ পণ্য খাতে ৫০.০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪৮.২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৭% এবং পূর্ববর্তী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় ৮.৫৮% বেশী।
সেবা খাতের লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫০ বিলিয়নের বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৫.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.১৩% বেশী।
অর্থবছরে রপ্তানি খাতে অর্জিত প্রবৃদ্ধির গতিধারা, পণ্য ও বাজার সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণ, বিশ্ব বাণিজ্যের সাম্প্রতিক গতিধারা, ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব, দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, অংশীজনদের মতামত, বিগত অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা এবং লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জনের হার ও পূর্ববর্তী অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার ইত্যাদি পর্যালোচনাপূর্বক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ১৯ টাকা কমালো সরকার। এতে করে এখন থেকে প্রতিলিটার পামঅয়েল বিক্রি হবে ১৫০ ঢাকায়, যা আগে ছিল ১৬৯ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় স্থানীয় বাজারেও এই দাম সমন্বয় করা হয়।
আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পামঅয়েলের নতুন দাম ঘোষণা করেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের সরবরাহ ও চাহিদা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে পামঅয়েলের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় কমিশনের সুপারিশে প্রতি লিটার খোলা পামঅয়েলের দাম ১৬৯ টাকা থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভোক্তারা লিটারে ১৯ টাকা কমে পামওয়েল কিনতে পারবেন। তবে সয়াবিনতেল পূর্বের মতো লিটার ১৮৯ টাকা (বোতল) অপরিবর্তিত থাকবে।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের ভোজ্য তেলের বাজারে ৬০ ভাগ দখল হচ্ছে পাম অয়েলের। আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দাম কমায় এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে সয়াবিনের মূল্য অপরিবর্তিত থাকায় স্থানীয় বাজারে দাম আগের মতই রয়েছে।
সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয়।
মন্তব্য