× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The accused in the rape case in Coxs Bazar are acquaintances of the woman
google_news print-icon

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’

কক্সবাজারে-ধর্ষণে-অভিযুক্তরা-নারীর-পরিচিত
জিয়া গেস্ট ইনে র‍্যাবের সঙ্গে কথা বলেন অভিযোগ তোলা নারী। ছবি: নিউজবাংলা
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।  

কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে এক গৃহবধূর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগটি ‘সাজানো’ বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মনে করছে পুলিশ।

কক্সবাজার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিকুল ইসলাম আশিকসহ কয়েক যুবকের পূর্বপরিচয় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ওই নারী ও তার স্বামীর টানা তিন মাস কক্সবাজারে অবস্থানের তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে পাওয়া সব তথ্য শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ওই নারীর স্বীকারোক্তি খতিয়ে দেখছি। গত তিন মাসে তারা কোন কোন হোটেলে ছিলেন, তার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও সিডিআর সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলায় নাম উল্লেখ করা চার আসামি হলেন, কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।

পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত আশিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই, ইয়াবা ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা আছে। তার অন্যতম সহযোগী জয়ার বিরুদ্ধেও দুটি মামলা আছে। তারা মূলত কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তাদের গ্যাংয়ে অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন। তারা গ্রেপ্তারও হয়েছেন একাধিকবার।

ওই নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান নিয়ে বুধবার সকালে তারা কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর শহরের হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। বিকেলে সৈকতে গেলে সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে এক যুবকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষটি স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ভাড়া নেন ওই নারী

এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। আর তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় জোর করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

তারপর ওই নারীকে শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করে। তারপর নেয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে।

সেখানে মাদক সেবনের পর সন্তান ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আবার ধর্ষণ করে এক যুবক। এরপর হোটেল কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে সে চলে যায়।

ওই নারীর দাবি অনুযায়ী, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া এক যুবকের সহায়তা চান। পরে ওই যুবক এসে কক্ষের দরজা খুলে তাকে বের করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী ফোন দেন ৯৯৯-এ।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেল

তিনি বলছেন, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তাকে নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি জানাই। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন।

‘একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র‍্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন।’

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহরের হলিডে মোড়ের হোটেল সি-ল্যান্ডে বুধবার দুপুরে স্বামী ও আট মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে ওঠেন ওই নারী।

তবে এই হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় তিনি নিজের যে নাম লিখেছেন, মামলার এজাহারের নামের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই।

হোটেল সি-ল্যান্ডের ম্যানেজার আজিজুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টা ৫ মিনিটে তারা ওঠেন। ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন তারা। এরপর বিকেলের দিকে বেরিয়ে যান। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে তার স্বামী এসে বলেন স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি তাকে পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলি।

‘এরপর সে (স্বামী) চলে যাওয়ার পর রাতে আর কেউ আসেনি। পরের দিন বৃহস্পতিবার পুলিশসহ এসে তাদের মালামাল নিয়ে যায়।’

র‌্যাবের কাছে দেয়া ওই নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বুধবার বিকেলে তার স্বামীর সঙ্গে প্রথমে এক যুবকের বাগবিতণ্ডা হয়। এর পর অভিযুক্ত যুবক ওই দম্পতির পিছু নিয়ে লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট পর্যন্ত যায়। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুজন। এই বিতণ্ডা চলতে থাকে গলফ মাঠের কাছাকাছি পর্যন্ত। সেখানে যুবকদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্ট

এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় স্বামী ও সন্তানকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আরেকটি অটোরিকশায় তিন যুবক ওই নারীকে জোর করে তুলে নেয়।

তবে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেখান থেকে অপহরণের কথা উঠেছে সেখানে সন্ধ্যার দিকে প্রচুর জনসমাগম থাকে। তাছাড়া ওখানে সব সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোরদার টহল রয়েছে। ফলে ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক।’

লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তবে বুধবারের ঘটনাটি নিয়ে কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।

ওই নারীর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরিয়ে তাকে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে যায় তিন যুবক। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে সেই চায়ের দোকানটি চিহ্নিত করা গেছে।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশে এই সেই চা দোকান

গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশেই চা দোকানটি পাওয়া গেছে। এর উল্টো দিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) সাব-অফিসের অবস্থান।

ঝুপড়ি দোকানটি চালান ছেনুয়ারা বেগম নামের এক নারী। দোকানের পেছনের দিকে কয়েকটি কক্ষ দূরপাল্লার বাসের চালক-সহকারীদের রাতযাপনের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে এলাকাটি সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকটা নির্জন।

ছেনুয়ারা বেগম স্বীকার করেছেন বুধবার রাত ৮টার দিকে এক নারীকে নিয়ে আসেন স্থানীয় আশিক ও জয়া। তাদের সঙ্গে আরও এক যুবক থাকলেও তিনি তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।

ছেনুয়ারা বেগম জানান, আশিক ও জয়ের বাড়ি দোকানের আধ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রায়ই তারা আসতেন বলে দুজনেই ছেনুয়ারারা পরিচিত।

ছেনুয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে আশিক, জয়াসহ তিনজন সিএনজি অটোরিকশায় এসেছিল। তাদের সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল। তারপর আমার দোকানের পেছনের দিকে গাড়ির হেলপারদের ঘুমানোর রুমে মেয়েটিকে নিতে দেখেছি।’

ছেনুয়ারা বলেন, ‘প্রায় আধ ঘণ্টা পর রুম থেকে এসে আশিকরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে আমার দোকান থেকে একটু দূরে যায়। তখন ওই মেয়েটি আমার কাছে এসে তার স্বামী ও সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে আশিককে সুপারিশ করতে বলে। এর কয়েক মিনিট পরেই তারা মেয়েটিকে নিয়ে ওই একই অটোরিকশায় চড়ে কবিতা চত্বরের দিকে চলে যায়।’

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
ঝুপড়ি চা দোকানের মালিক ছেনুয়ারা বেগম

ছেনুয়ারা ঘটনাটি কেন আর কাউকে জানাননি, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা তার কাছে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের অংশ হিসেবে ছেনুয়ারাকে ওই নারীর মুখোমুখি করা হবে। এরপর প্রয়োজনে ছেনুয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।’

ওই নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, ঝুপড়ি চা দোকানটি থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে।

জিয়া গেস্ট ইনের রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য অনুযায়ী, ওই নারীকে নিয়ে আশিক বুধবার রাত ৯টা ৮ মিনিটে হোটেলে আসেন। খাতায় দুজনের নামই এন্ট্রি করার পর তাদের তৃতীয় তলার ২০১ নম্বর কক্ষ দেয়া হয়।

ওই সময়ে হোটেল ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন রিয়াজ উদ্দিন ছোটন। তাকে বুধবার গভীর রাতে আটক করে র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি, আশিকের সঙ্গে ছোটনের আগে থেকেই সখ্য ছিল।

ওই নারীকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া এবং বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে লবির সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, হোটেলে যাওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে বেরিয়ে যাচ্ছেন আশিক। তার কিছু সময় পর একাকী নেমে আসেন ওই নারী।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইনের চেক-ইন কাউন্টারে ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত আশিক। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেয়া

ওই নারীর অভিযোগ, রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়ায় তিনি আটকে পড়েছিলেন। এরপর কক্ষের জানালা দিয়ে টেলিভিশনের রিমোটের একটি ব্যাটারি ছুড়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক যুবকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে ওই যুবক এসে দরজা খুলে তাকে বের করেন।

তবে জিয়া গেস্ট ইন-এর আরেক ম্যানেজার আমির হোসেনের দাবি, তাদের হোটেলের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি শুধু ভেতর থেকে বন্ধ করার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য বাইরে থেকে কোনো যুবক হোটেলে প্রবেশ করেননি বলেও দাবি করেন আমির।

তিনি দাবি করছেন, কক্ষ ভাড়া নেয়ার সময়ে আশিকসহ দুজনকেই ‘স্বাভাবিক’ মনে হয়েছে হোটেলকর্মীদের।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষের দরজা

নিয়ম অনুযায়ী কক্ষ ভাড়া দেয়ার সময় দুজনের পরিচয়সূচক নথি কেন জমা রাখেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ, তেমন প্রশ্নের জবাব দেননি আমির। তবে তিনি বলেন, ‘আশিকের সঙ্গে ম্যানেজার ছোটনের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। এর আগেও আশিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন।’

ওই নারী র‌্যাবকে জানিয়েছেন, আশিক হোটেলে ঢোকার পর তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ম্যানেজার ছোটনের কাছে জমা রেখেছিলেন। তিনি কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর সেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রথমে স্বামীকে ফোন করেন। দুর্বৃত্তরা ইতোমধ্যে তার স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে দিয়েছিল।

ফোন করার পর সন্তানকে নিয়ে তার স্বামী ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তারা আলোচনা করে ৯৯৯-এ ফোন করেন।

তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে না এসে থানায় গিয়ে জিডি করতে বললে তারা র‌্যাবকে ঘটনাটি জানান। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে র‌্যাব ওই হোটেলে আসে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হোটেল-মোটেল জোনে যে নারী ধর্ষণের অভিযোগে ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার কথা বলছেন, তা আমরা জানি না। কারণ ৯৯৯ থেকে জেলা পুলিশের কাছে কোনো ফোন আসেনি। তারপরেও ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছেন।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারীর সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল অভিযুক্তদের। তাদের মধ্যে একটি লেনদেনও রয়েছে। এ ছাড়া হোটেল ও মামলার নথিতে স্বামী-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করেছেন। এসব আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে আটক করেছে র‍্যাব

তিনি বলেন, ‘এর আগেও ওই নারী দুই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। তিনি এর আগেও কক্সবাজারে ছিলেন। এ জন্য ঢালাওভাবে তাকে পর্যটক হিসেবে দাবি করা যাচ্ছে না। ৯৯৯-এর বিষয়টিও তিনি গণমাধ্যমে ভুল বলেছেন। এর পেছনের কারণ পেয়ে গেছে পুলিশ। তবে আমরা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযানও অব্যাহত রেখেছি।’

পুলিশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশিক ও তার গ্যাং ওই দম্পতির কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। ওই টাকা না পাওয়ায় আশিকসহ আরও দুইজন তাকে হোটেলে নিয়ে যান। এরপর হোটেল থেকে বের হয়ে ওই নারী র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দেন।’

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটির পেছনের বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছি। তবে ধর্ষণের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই আমরা একটি ব্রিফিং করতে পারি।’

ওই নারীর স্বামী নিজ এলাকা ছাড়েন ২ বছর আগে

ওই নারী ও তার স্বামী প্রাথমিকভাবে র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, তারা ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকা থেকে ভ্রমণের উদ্দেশে বুধবার কক্সবাজার আসেন।

ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলেও দাবি করেন ওই নারীর স্বামী।

তবে মামলার এজাহারে ওই নারীর স্বামী কিশোরগঞ্জ পৌরসভার একটি ঠিকানা দিয়েছেন।

সেই ঠিকানায় গিয়ে ওই নারীর স্বামীর বড় ভাইসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা জানান, দ্বিতীয় শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেননি ওই নারীর স্বামী। এরপর তিনি পরিবারের একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
তিন মাস আগে কক্সবাজার সৈকতে স্বামী-সন্তানের সঙ্গে ওই নারীর তোলা ছবি

দুই বছর আগে ঢাকায় চলে যান ওই ব্যক্তি। পরিবারের দাবি বছর খানেক আগে তার বিয়ের খবর জানতে পারলেও মেয়েটির পরিচয় সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।

মাস তিনেক আগে কক্সবাজার সৈকত থেকে স্ত্রী ও সন্তানের ছবি বড় ভাইয়ের স্ত্রীর ইমো নম্বরে পাঠিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এ ধরনের কিছু ছবি পেয়েছে নিউজবাংলা।

স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় থাকার সময়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির বেশ কিছু অভিযোগ ছিল।

আরও পড়ুন:
কক্সবাজারে ‘ধর্ষণের’ ঘটনা প্রকাশ হলো যেভাবে
পর্যটককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, মামলার আসামি ৭
তরুণীকে সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণ’
পর্যটককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, হোটেল ম্যানেজার আটক
পুলিশকে জানিয়েও সাড়া পাননি কক্সবাজারে ‘ধর্ষণের শিকার’ নারী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত সংবাদ

বাংলাদেশ
Hundreds of houses were destroyed in Kamalganj in the rampage of Kalbaisakhi

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কমলগঞ্জে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কমলগঞ্জে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে ঝড়ে বিধ্বস্ত পরিবারগুলোকে। ছবি: নিউজবাংলা
ঝড়ে গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

আকস্মিক কালবৈশাখীর তাণ্ডবে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ও শমশেরনগর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও বেশ কিছু বাড়িঘর। ঝড়ের পর খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে অর্ধশতাধিক পরিবার।

এ ছাড়াও গাছপালা উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে এবং তার ছিঁড়ে পড়ে। এতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় সাড়ে ১৫ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের পতনঊষার, ধূপাটিলা, উসমানগড়, ব্রাহ্মণঊষারসহ ৮টি গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘর এবং শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি, ভাদাইরদেউল গ্রামে আরও কয়েকটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছ-বাঁশ উপড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কমলগঞ্জে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত

পতনঊষার ইউনিয়নের নেছার মিয়া, ময়নুল মিয়া, খুশবা বেগম, লিপি বেগম, রহমান মিয়া, সুফিয়ান মিয়া, কালাম মিয়া, আনু মিয়া, ফখরুল মিয়াসহ অসংখ্য পরিবার দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।

ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, গতরাতে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তীব্র শিলাবৃষ্টি হয়। মুহুর্তের মধ্যে তাদের ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। সহোযোগিতা না পেলে আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে।’

পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান জানান, আকস্মিক ঝড়ে পতনঊষার গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেসব দরিদ্র পরিবারের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে কমলগঞ্জে শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত

পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান বলেন, ‘কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। তাদের দ্রুত সহায়তার প্রয়োজন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহেবকে অবহিত করা হয়েছে।’

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক গোলাম ফারুক মীর বলেন, ‘ঝড়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে তার ছিঁড়ে গেছে। এসব জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।’

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ইউএনও জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান বাড়িঘর বিধ্বস্তের কথা বলেছেন। তবে পরিপূর্ণ হিসাব জানা যায়নি। চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে দেয়ার জন্য। দ্রুত তাদের সহোযোগিতা করা হবে।’

আরও পড়ুন:
মধ্যরাতের কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুৎহীন কুলাউড়া
বরিশাল বিভাগে কালবৈশাখী ঝড়ে ৭ জনের প্রাণহানি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chuadanga is burning at a temperature of 426 degrees Celsius

৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা প্রখর রোদে মরুর উষ্ণতা অনুভব করছে চুয়াডাঙ্গাবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘এ মাসের শেষের কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।’

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত অতি তীব্র তাপপ্রবাহে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

শনিবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র থেকে অতি তীব্র আকার ধারণ করছে জেলার তাপপ্রবাহ। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। তবে, ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি নেই কোথাও। আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণের সঙ্গে কোনোভাবেই খাপ খাওয়াতে পারছে না জেলাবাসী। কেউ আবার পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।

দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের ইজিবাইক চালক হারেজ আলী বলেন, ‘কঠিন তাপ পড়চি। সূর্য মনে হচ্চি মাতার উপর চলি এসিচে। আমরা গরীব মানুষ, পেটের দায়ে বাইরি বের হয়িচি। মাজে মাজে রাস্তার পাশের দুকান থেকি শরবত খেয়ি ঠান্ডা হচ্চি।’

৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম; নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।

মৌসুমের প্রায় সময়জুড়েই উত্তপ্ত থাকে চুয়াডাঙ্গা। এবারও চৈত্রের মধ্যভাগ থেকে শুরু হওয়া তাপমাত্রার এমন দাপট বৈশাখের আবহাওয়াকে জটিল করে তুলছে। এ যেন মরুর উষ্ণতা অনুভব করছে মানুষ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘এ মাসের শেষের কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।’

আরও পড়ুন:
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ
৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পাবনার তাপমাত্রা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Passenger bus ditches to avoid collision with easy bikes

ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে যাত্রীবাহী বাস খাদে

ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে যাত্রীবাহী বাস খাদে ছবি: নিউজবাংলা
দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রী সজীব হোসেন বলেন, ‘ইজিবাইক পাশ দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ইজিবাইক নছিমন বন্ধ করা উচিত।’

মাদারীপুরে ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে সেটিকে পাশ দিতে গিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস খাড়ে পড়ে যায়। এতে অল্পের জন্যে জীবন রক্ষা পেয়েছে বাসের অন্তত ৬৫ যাত্রীর। তবে এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুর জেলার ঘটকচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে বাস ও আহতদের উদ্ধার করে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাওলাদার পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে বরিশাল থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঘটকচর এলাকায় আসলে একটি ইজিবাইক রাস্তার মাঝে চলে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে ইজিবাইকটিকে পাশ দিতে বাসচালক দ্রুত মোড় নেয়ায় বাসটি রাস্তার পাশের খাদে চলে যায়। তবে খাদটি বেশি গভীর না হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বাসের যাত্রীরা। তবে আঘাত পেয়ে বাসের ভিতরে থাকা যাত্রীদের হাত-পায়ে একাধিক স্থানে কেটে গেছে। এ ঘটনায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে মোস্তফাপুর হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রীদের উদ্ধার করে।

দুর্ঘটনাকবলিত বাসটির যাত্রী সজীব হোসেন বলেন, ‘আমি অফিশিয়াল কাজে সাতক্ষীরা যাচ্ছিলাম। ঘটকচর স্ট্যান্ডের কিছুটা দূরে আসার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ একটা ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে মুচড়ে গেলাম। পরে দেখি বাসটি খাদে পড়ে গেছে। আমার নাকে কিছুটা আঘাত পেয়েছি। অন্য যাত্রীদেরও বেশ আঘাত লেগেছে।’

তিনি বলেন, ‘ইজিবাইক পাশ দিতে গিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ইজিবাইক নছিমন বন্ধ করা উচিত।’

এ ব্যাপারে মোস্তফাপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোহাম্মদ মারুফ রহমান বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে অন্তত ৬৫ জন যাত্রী। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ইজিবাইকটি আটক করা যায়নি।’

আরও পড়ুন:
ময়মনসিংহে অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, নিহত ২

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A 48 hour transport strike has been called in Greater Chittagong from Sunday
চুয়েট শিক্ষার্থীদের গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদ

বৃহত্তর চট্টগ্রামে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

বৃহত্তর চট্টগ্রামে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক
বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু বলেন, ‘চার দফা দাবি আদায়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায় এই ধর্মঘট পালিত হবে।’

বৃহত্তর চট্টগ্রামে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ।

বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত ও অপর একজন আহত হওয়ার ঘটনার জের ধরে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক ও হাটহাজারী পৌরসভার প্রশাসক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী মঞ্জু শনিবার বলেন, ‘কয়েক দিনে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল (রোববার) সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায় এই ধর্মঘট পালিত হবে।’

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সোমবার বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসে আগুন দেয়া হয়।

বুধবার ওই বাসের চালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ১১ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সে সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Mango pulp is falling in flames

দাবদাহে ঝরছে আমের গুটি

দাবদাহে ঝরছে আমের গুটি গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের গুটি ঝড়ে পড়েছে নওগাঁয়। ছবি: নিউজবাংলা
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমের উৎপাদনে বিপর্যয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ আমের গুটি ঝরে যাওয়ার পরও যে পরিমাণ আম থাকবে তা দিয়েই আমাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব, তবে এমন পরিস্থিতিতে আমরা আম চাষিদের মাঠ পর্যায়ে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আশড়ন্ড গ্রামের আম চাষি রবিউল ইসলাম ১০ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছেন। গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের গুটি ঝড়ে পড়েছে। পানি ও ওষুধ স্প্রে করেও মিলছে না সুফল।

শুধু রবিউল নয়, নওগাঁর সব আম বাগানগুলোতে বর্তমানে একই অবস্থা।

আমের নতুন রাজধানী হিসেবে খ্যাত নওগাঁর আম চাষিরা জানান, টানা দুই সপ্তাহ ধরে গরম ও তাপপ্রবাহে কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পানি সেচসহ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও ঝরে পড়া থেকে ঠেকানো যাচ্ছে না আমের গুটি। তাই চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

এমন অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন বাড়তি যত্ন নিলে গুটি পড়া রোধ অনেকটাই সম্ভব।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর নওগাঁয় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ হেক্টর বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ দশমিক ২৪ টন হিসেবে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, এবার আশানুরূপভাবে আমের দেখা নেই। আমের গুটি ঝরে পড়ে আছে রোদের তীব্রতায়।

চাষিরা জানান, খরা দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকলে গুটিও ঝরতে থাকবে।

বৈশাখের শুরু থেকে তাপদাহে পুড়ছে নওগাঁ। শনিবার বেলা ১১টায় নওগাঁয় তাপমাত্রার পারদ উঠে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানায় জেলার বদলগাছী স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘১২ বিঘা জমিতে আমের বাগান আছে আমার। এবার সব গাছে মুকুল কম এসেছিল। যেটুকু ছিল, তা নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তীব্র গরমে অধিকাংশ গাছের গুটি ঝরে গেছে। অনেক গাছ গুটিশূন্য হয়ে আছে। এতে উৎপাদন অনেক কম হবে বলে ধারণা করছি।’

পোরশা উপজেলার আম চাষি মোজাম্মেল ইসলাম বলেন, ‘এবার ৩০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। গাছে গুটি কম থাকায় হতাশা ও দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। গত বছর প্রচুর আম হয়েছিল। সে তুলনায় এবার অনেক কম পাব। অধিকাংশ গুটি ঝরে গেছে। ফলনে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেবে বলে মনে করছি।’

নিয়ামতপুর উপজেলার আম চাষি বিজন ঘোষ বলেন, ‘এবার ১৫ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছি। গুটি পড়া রোধে পানি, ওষুধ দেয়ার পরও তীব্র গরম আর রোদের কারণে আমগুলো ঝরে পড়ছে। গাছে আম টেকানো যাচ্ছে না। আবার কালবৈশাখি ঝড় হলে আম নষ্ট হতে পারে মারাত্মকভাবে।’

সাপাহার উপজেলার স্থানীয় বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্কের উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, ‘এ এলাকা এমনিতেই পানি সংকটাপন্ন এলাকা। এর মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ, কোনো বৃষ্টি নেই। এ অবস্থা আরও কয়েকদিন চলতে থাকলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে যাবে।

‘যে সব বাগানগুলোতে সেচের ব্যবস্থা আছে সে সব বাগানগুলোতে সেচ দেয়া হচ্ছে। আর যে সব বাগানে সেচের ব্যবস্থা নেই, সে সব বাগানগুলো থেকে আম ঝরে যাচ্ছে।’

এমন অবস্থায় তিনি সরকারের কাছে বাগানগুলোতে যেন সেচের ব্যবস্থা করে দেয়া হয় তার দাবি জানান।

এ বিষয়ে নিয়ে কথা হলে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি বছরই স্বাভাবিকভাবে এমন সময় গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়ে, তবে এই সময়ে গাছে বাড়তি পরিচর্যা করলে অস্বাভাবিকভাবে গুটি ঝরে পড়া বন্ধ হবে।

‘আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচের পাশাপাশি প্রয়োজনে গাছের পাতায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আমের গুটি ঝরা রোধে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমের উৎপাদনে বিপর্যয়ে কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ আমের গুটি ঝরে যাওয়ার পরও যে পরিমাণ আম থাকবে তা দিয়েই আমাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব, তবে এমন পরিস্থিতিতে আমরা আম চাষিদের মাঠ পর্যায়ে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, পাবনায় অতি তীব্র দাবদাহ
দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে পাটক্ষেত
আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে দাবদাহ
কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাতারের আমির

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A mother and two children died due to a broken electric wire

ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে প্রাণ গেল মা দুই সন্তানের

ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে প্রাণ গেল মা দুই সন্তানের বরিশালের বাকেরগঞ্জে শনিবার পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারানো নারী ও তার দুই শিশু সন্তান। ছবি: নিউজবাংলা
পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে পৃথক দুইটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বরিশালের বাকেরগঞ্জে শনিবার পল্লী বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে স্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশু সন্তানসহ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

প্রাণ হারানো তিনজন হলো উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সনিয়া বেগম (২৫), তার ৯ বছর বয়সী ছেলে সালমান ও ১২ বছরের মেয়ে রেজবীনা।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে রয়েছি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবু গাছ রয়েছে।

‘প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে।’

ইউএনও জানান, ঘটনাস্থলে তিনিসহ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম রয়েছেন। তারা ঘটনার তদন্ত করছেন। এ ঘটনায় দায়িত্বের অবহেলার প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিয়ামতি ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোস্তফা কামাল হাওলাদারের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, বাড়ির পাশে বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ডোবায় পড়ে ছিল। দুই ভাই-বোন লেবু ছিঁড়ে খেলছিল। ওই সময় লেবু ডোবায় পড়ে যায়। ওই লেবু আনতে ছেলে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মেয়ের চিৎকারে মা এসে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তখন মাকে ধরে মেয়েও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়।

তার কীভাবে ছিঁড়ে পড়ে ছিল, তা কেউ জানাতে পারেনি জানিয়ে মমতাজ বেগম বলেন, ‘বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে, কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।’

পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘটনা তদন্তে পৃথক দুইটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন না পেলে বিষয়টি বলতে পারব না।’

আরও পড়ুন:
সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্টে কৃষকের মৃত্যু
এসির সুইচ অন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারীর মৃত্যু
ববি ছাত্রলীগের কমিটি শিগগিরই: ইনান
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছয়জনের মৃত্যু: পবিসের তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত
ঈদের আগে-পরে ১৯ দিনের ছুটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
2 killed in Mymensingh autorickshaw hit by bus

ময়মনসিংহে অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, নিহত ২

ময়মনসিংহে অটোরিকশায় বাসের ধাক্কা, নিহত ২ দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা। ছবি: নিউজবাংলা
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মাঈন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জেলার তারাকান্দা থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। ময়মনসিংহ সদরের আলালপুর এলাকা পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে আসা শেরপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে।’

ময়মনসিংহ সদরে বাসের সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশার ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।

উপজেলার আলালপুর এলাকা শনিবার বেলা ১১টার দিকে সদরের আলালপুর এলাকায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মাঈন উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘জেলার তারাকান্দা থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ময়মনসিংহের দিকে যাচ্ছিল। ময়মনসিংহ সদরের আলালপুর এলাকা পর্যন্ত আসতেই বিপরীত দিক থেকে আসা শেরপুরগামী একটি বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন মারা যান।’

তিনি জানান, এ সময় আশপাশের লোকজন আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

নিহতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি মাঈন উদ্দিন।

আরও পড়ুন:
বাগেরহাটে ট্রাকচাপায় তিন ভ্যানযাত্রী নিহত
খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে শিশু নিহত
মানিকগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদ থেকে পড়ে ছাত্রী নিহত
কাভার্ড ভ্যানের চাপায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত
ময়লার গাড়ির ধাক্কায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ছাত্র নিহত

মন্তব্য

p
উপরে