কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে এক গৃহবধূর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগটি ‘সাজানো’ বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মনে করছে পুলিশ।
কক্সবাজার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিকুল ইসলাম আশিকসহ কয়েক যুবকের পূর্বপরিচয় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ওই নারী ও তার স্বামীর টানা তিন মাস কক্সবাজারে অবস্থানের তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে পাওয়া সব তথ্য শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ওই নারীর স্বীকারোক্তি খতিয়ে দেখছি। গত তিন মাসে তারা কোন কোন হোটেলে ছিলেন, তার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও সিডিআর সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা চার আসামি হলেন, কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত আশিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই, ইয়াবা ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা আছে। তার অন্যতম সহযোগী জয়ার বিরুদ্ধেও দুটি মামলা আছে। তারা মূলত কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তাদের গ্যাংয়ে অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন। তারা গ্রেপ্তারও হয়েছেন একাধিকবার।
ওই নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান নিয়ে বুধবার সকালে তারা কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর শহরের হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। বিকেলে সৈকতে গেলে সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে এক যুবকের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। আর তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় জোর করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
তারপর ওই নারীকে শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করে। তারপর নেয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে।
সেখানে মাদক সেবনের পর সন্তান ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আবার ধর্ষণ করে এক যুবক। এরপর হোটেল কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে সে চলে যায়।
ওই নারীর দাবি অনুযায়ী, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া এক যুবকের সহায়তা চান। পরে ওই যুবক এসে কক্ষের দরজা খুলে তাকে বের করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী ফোন দেন ৯৯৯-এ।
তিনি বলছেন, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তাকে নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি জানাই। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন।
‘একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন।’
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহরের হলিডে মোড়ের হোটেল সি-ল্যান্ডে বুধবার দুপুরে স্বামী ও আট মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে ওঠেন ওই নারী।
তবে এই হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় তিনি নিজের যে নাম লিখেছেন, মামলার এজাহারের নামের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই।
হোটেল সি-ল্যান্ডের ম্যানেজার আজিজুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টা ৫ মিনিটে তারা ওঠেন। ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন তারা। এরপর বিকেলের দিকে বেরিয়ে যান। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে তার স্বামী এসে বলেন স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি তাকে পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলি।
‘এরপর সে (স্বামী) চলে যাওয়ার পর রাতে আর কেউ আসেনি। পরের দিন বৃহস্পতিবার পুলিশসহ এসে তাদের মালামাল নিয়ে যায়।’
র্যাবের কাছে দেয়া ওই নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বুধবার বিকেলে তার স্বামীর সঙ্গে প্রথমে এক যুবকের বাগবিতণ্ডা হয়। এর পর অভিযুক্ত যুবক ওই দম্পতির পিছু নিয়ে লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট পর্যন্ত যায়। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুজন। এই বিতণ্ডা চলতে থাকে গলফ মাঠের কাছাকাছি পর্যন্ত। সেখানে যুবকদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।
এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় স্বামী ও সন্তানকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আরেকটি অটোরিকশায় তিন যুবক ওই নারীকে জোর করে তুলে নেয়।
তবে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেখান থেকে অপহরণের কথা উঠেছে সেখানে সন্ধ্যার দিকে প্রচুর জনসমাগম থাকে। তাছাড়া ওখানে সব সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোরদার টহল রয়েছে। ফলে ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক।’
লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তবে বুধবারের ঘটনাটি নিয়ে কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।
ওই নারীর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরিয়ে তাকে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে যায় তিন যুবক। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে সেই চায়ের দোকানটি চিহ্নিত করা গেছে।
গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশেই চা দোকানটি পাওয়া গেছে। এর উল্টো দিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) সাব-অফিসের অবস্থান।
ঝুপড়ি দোকানটি চালান ছেনুয়ারা বেগম নামের এক নারী। দোকানের পেছনের দিকে কয়েকটি কক্ষ দূরপাল্লার বাসের চালক-সহকারীদের রাতযাপনের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে এলাকাটি সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকটা নির্জন।
ছেনুয়ারা বেগম স্বীকার করেছেন বুধবার রাত ৮টার দিকে এক নারীকে নিয়ে আসেন স্থানীয় আশিক ও জয়া। তাদের সঙ্গে আরও এক যুবক থাকলেও তিনি তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।
ছেনুয়ারা বেগম জানান, আশিক ও জয়ের বাড়ি দোকানের আধ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রায়ই তারা আসতেন বলে দুজনেই ছেনুয়ারারা পরিচিত।
ছেনুয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে আশিক, জয়াসহ তিনজন সিএনজি অটোরিকশায় এসেছিল। তাদের সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল। তারপর আমার দোকানের পেছনের দিকে গাড়ির হেলপারদের ঘুমানোর রুমে মেয়েটিকে নিতে দেখেছি।’
ছেনুয়ারা বলেন, ‘প্রায় আধ ঘণ্টা পর রুম থেকে এসে আশিকরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে আমার দোকান থেকে একটু দূরে যায়। তখন ওই মেয়েটি আমার কাছে এসে তার স্বামী ও সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে আশিককে সুপারিশ করতে বলে। এর কয়েক মিনিট পরেই তারা মেয়েটিকে নিয়ে ওই একই অটোরিকশায় চড়ে কবিতা চত্বরের দিকে চলে যায়।’
ছেনুয়ারা ঘটনাটি কেন আর কাউকে জানাননি, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা তার কাছে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের অংশ হিসেবে ছেনুয়ারাকে ওই নারীর মুখোমুখি করা হবে। এরপর প্রয়োজনে ছেনুয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।’
ওই নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, ঝুপড়ি চা দোকানটি থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে।
জিয়া গেস্ট ইনের রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য অনুযায়ী, ওই নারীকে নিয়ে আশিক বুধবার রাত ৯টা ৮ মিনিটে হোটেলে আসেন। খাতায় দুজনের নামই এন্ট্রি করার পর তাদের তৃতীয় তলার ২০১ নম্বর কক্ষ দেয়া হয়।
ওই সময়ে হোটেল ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন রিয়াজ উদ্দিন ছোটন। তাকে বুধবার গভীর রাতে আটক করে র্যাব। র্যাবের দাবি, আশিকের সঙ্গে ছোটনের আগে থেকেই সখ্য ছিল।
ওই নারীকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া এবং বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে লবির সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, হোটেলে যাওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে বেরিয়ে যাচ্ছেন আশিক। তার কিছু সময় পর একাকী নেমে আসেন ওই নারী।
ওই নারীর অভিযোগ, রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়ায় তিনি আটকে পড়েছিলেন। এরপর কক্ষের জানালা দিয়ে টেলিভিশনের রিমোটের একটি ব্যাটারি ছুড়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক যুবকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে ওই যুবক এসে দরজা খুলে তাকে বের করেন।
তবে জিয়া গেস্ট ইন-এর আরেক ম্যানেজার আমির হোসেনের দাবি, তাদের হোটেলের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি শুধু ভেতর থেকে বন্ধ করার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য বাইরে থেকে কোনো যুবক হোটেলে প্রবেশ করেননি বলেও দাবি করেন আমির।
তিনি দাবি করছেন, কক্ষ ভাড়া নেয়ার সময়ে আশিকসহ দুজনকেই ‘স্বাভাবিক’ মনে হয়েছে হোটেলকর্মীদের।
নিয়ম অনুযায়ী কক্ষ ভাড়া দেয়ার সময় দুজনের পরিচয়সূচক নথি কেন জমা রাখেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ, তেমন প্রশ্নের জবাব দেননি আমির। তবে তিনি বলেন, ‘আশিকের সঙ্গে ম্যানেজার ছোটনের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। এর আগেও আশিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন।’
ওই নারী র্যাবকে জানিয়েছেন, আশিক হোটেলে ঢোকার পর তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ম্যানেজার ছোটনের কাছে জমা রেখেছিলেন। তিনি কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর সেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রথমে স্বামীকে ফোন করেন। দুর্বৃত্তরা ইতোমধ্যে তার স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে দিয়েছিল।
ফোন করার পর সন্তানকে নিয়ে তার স্বামী ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তারা আলোচনা করে ৯৯৯-এ ফোন করেন।
তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে না এসে থানায় গিয়ে জিডি করতে বললে তারা র্যাবকে ঘটনাটি জানান। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে র্যাব ওই হোটেলে আসে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হোটেল-মোটেল জোনে যে নারী ধর্ষণের অভিযোগে ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার কথা বলছেন, তা আমরা জানি না। কারণ ৯৯৯ থেকে জেলা পুলিশের কাছে কোনো ফোন আসেনি। তারপরেও ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছেন।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারীর সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল অভিযুক্তদের। তাদের মধ্যে একটি লেনদেনও রয়েছে। এ ছাড়া হোটেল ও মামলার নথিতে স্বামী-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করেছেন। এসব আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও ওই নারী দুই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। তিনি এর আগেও কক্সবাজারে ছিলেন। এ জন্য ঢালাওভাবে তাকে পর্যটক হিসেবে দাবি করা যাচ্ছে না। ৯৯৯-এর বিষয়টিও তিনি গণমাধ্যমে ভুল বলেছেন। এর পেছনের কারণ পেয়ে গেছে পুলিশ। তবে আমরা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযানও অব্যাহত রেখেছি।’
পুলিশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশিক ও তার গ্যাং ওই দম্পতির কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। ওই টাকা না পাওয়ায় আশিকসহ আরও দুইজন তাকে হোটেলে নিয়ে যান। এরপর হোটেল থেকে বের হয়ে ওই নারী র্যাবের কাছে অভিযোগ দেন।’
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটির পেছনের বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছি। তবে ধর্ষণের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই আমরা একটি ব্রিফিং করতে পারি।’
ওই নারীর স্বামী নিজ এলাকা ছাড়েন ২ বছর আগে
ওই নারী ও তার স্বামী প্রাথমিকভাবে র্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, তারা ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকা থেকে ভ্রমণের উদ্দেশে বুধবার কক্সবাজার আসেন।
ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলেও দাবি করেন ওই নারীর স্বামী।
তবে মামলার এজাহারে ওই নারীর স্বামী কিশোরগঞ্জ পৌরসভার একটি ঠিকানা দিয়েছেন।
সেই ঠিকানায় গিয়ে ওই নারীর স্বামীর বড় ভাইসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা জানান, দ্বিতীয় শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেননি ওই নারীর স্বামী। এরপর তিনি পরিবারের একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন।
দুই বছর আগে ঢাকায় চলে যান ওই ব্যক্তি। পরিবারের দাবি বছর খানেক আগে তার বিয়ের খবর জানতে পারলেও মেয়েটির পরিচয় সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
মাস তিনেক আগে কক্সবাজার সৈকত থেকে স্ত্রী ও সন্তানের ছবি বড় ভাইয়ের স্ত্রীর ইমো নম্বরে পাঠিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এ ধরনের কিছু ছবি পেয়েছে নিউজবাংলা।
স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় থাকার সময়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির বেশ কিছু অভিযোগ ছিল।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ঢলে পড়া এক পর্যটককে মৃত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ওই পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান সাগরে গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।
প্রাণ হারানো মতিউর রহমানের (৪০) বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায়।
ওসমান গণি বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত ছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক ঘোরাঘুরি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় তিনি বালিয়াড়িতে ঢলে পড়ে অবচেতন হন।’
তিনি জানান, লাইফ গার্ড কর্মীরা ঘটনাটি দেখে তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা এক পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন, কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।’
আরএমও বলেন, তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকে নাকি অন্য কোনো কারণে ওই পর্যটক মারা গেছেন, তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মতিউরের মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে বলেও জানান এ চিকিৎসক।
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের খুলনা-মোংলা মহাসড়কে ট্রাকের চাপায় তিন ভ্যানযাত্রী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার চেয়ারম্যান বাড়ি মোড় এলাকায় শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ঝনঝননিয়া গ্রামের সাঈদ মোড়ল (৪৫), একই গ্রামের মো. আজাদ (৩৫) ও কুমরাই গাববুনিয়া গ্রামের মো. মনি (৪৫)।
এ ঘটনায় ট্রাকটির চালক যশোরের চৌগাছার চানাদা-আফরা গ্রামের বাসিন্দা গাজি সাফায়েত হোসেনকে (১৮) আটক ও ট্রাকটি জব্দ করা হয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মোংলাগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও দুইজন গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের রামপাল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাঈদ মোড়লের মরদেহসহ আহত দুইজনকে ট্রাকের চাকার নিচ থেকে উদ্ধার করে রামপাল উপজেলা হাসপাতালে পাঠায়।
খুলনা-মোংলা জাতীয় মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করায় ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় ‘হাতবোমার’ আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কানাইপুরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় দক্ষিণ কানাইপুরের প্রয়াত মালেক সরদারের ছেলে দুবাই প্রবাসী রিপন সরদার বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ একই এলাকার আনসার হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হাওলাদার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে গত ২৩ এপ্রিল রিপন সরদারের স্ত্রী রুনিয়া বেগম বাদী হয়ে কালকিনি থানায় ২২ জনের নামে একটি মামলা করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, এরই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় রিপনের চাচাত ভাই ও আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহীদ পারভেজের সমর্থক জামাল সরদার স্থানীয় বাজারে যান। মাঝপথে সাবেক চেয়ারম্যান মিলন সরদারের কর্মী মহসিন লোকজন নিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এলাকায় উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রিপন হাওলাদারের আগের ঘটনার মামলা দায়েরকে কেন্দ্র করেই এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন:দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটক্ষেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।
এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের।
সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না।
অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।
খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’
আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে, কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ‘এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না।’
মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গত বছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
আরও পড়ুন:তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য