× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The accused in the rape case in Coxs Bazar are acquaintances of the woman
google_news print-icon

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’

কক্সবাজারে-ধর্ষণে-অভিযুক্তরা-নারীর-পরিচিত
জিয়া গেস্ট ইনে র‍্যাবের সঙ্গে কথা বলেন অভিযোগ তোলা নারী। ছবি: নিউজবাংলা
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।  

কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে এক গৃহবধূর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগটি ‘সাজানো’ বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে মনে করছে পুলিশ।

কক্সবাজার পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নারীর সঙ্গে ধর্ষণে অভিযুক্ত আশিকুল ইসলাম আশিকসহ কয়েক যুবকের পূর্বপরিচয় ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ওই নারী ও তার স্বামীর টানা তিন মাস কক্সবাজারে অবস্থানের তথ্যও পেয়েছে পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকায় থাকার কথা বললেও ওই দম্পতি তাদের সন্তানসহ তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নাম ব্যবহার করতেন। ওই নারী পুলিশের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেছেন কর্মকর্তারা।

তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তদন্তে পাওয়া সব তথ্য শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ওই নারীর স্বীকারোক্তি খতিয়ে দেখছি। গত তিন মাসে তারা কোন কোন হোটেলে ছিলেন, তার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও সিডিআর সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলায় নাম উল্লেখ করা চার আসামি হলেন, কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া, মেহেদী হাসান বাবু ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।

পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত আশিকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই, ইয়াবা ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৬টি মামলা আছে। তার অন্যতম সহযোগী জয়ার বিরুদ্ধেও দুটি মামলা আছে। তারা মূলত কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনের ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তাদের গ্যাংয়ে অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন। তারা গ্রেপ্তারও হয়েছেন একাধিকবার।

ওই নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান নিয়ে বুধবার সকালে তারা কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর শহরের হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। বিকেলে সৈকতে গেলে সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে এক যুবকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
হলিডে মোড়ের সি ল্যান্ড হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষটি স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ভাড়া নেন ওই নারী

এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। আর তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় জোর করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

তারপর ওই নারীকে শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করে। তারপর নেয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে।

সেখানে মাদক সেবনের পর সন্তান ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আবার ধর্ষণ করে এক যুবক। এরপর হোটেল কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে সে চলে যায়।

ওই নারীর দাবি অনুযায়ী, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া এক যুবকের সহায়তা চান। পরে ওই যুবক এসে কক্ষের দরজা খুলে তাকে বের করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী ফোন দেন ৯৯৯-এ।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেল

তিনি বলছেন, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তাকে নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি জানাই। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টো থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন।

‘একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র‍্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন।’

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, শহরের হলিডে মোড়ের হোটেল সি-ল্যান্ডে বুধবার দুপুরে স্বামী ও আট মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে ওঠেন ওই নারী।

তবে এই হোটেলের রেজিস্ট্রার খাতায় তিনি নিজের যে নাম লিখেছেন, মামলার এজাহারের নামের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই।

হোটেল সি-ল্যান্ডের ম্যানেজার আজিজুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টা ৫ মিনিটে তারা ওঠেন। ২০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন তারা। এরপর বিকেলের দিকে বেরিয়ে যান। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর রাত ১১টার দিকে তার স্বামী এসে বলেন স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। আমি তাকে পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলি।

‘এরপর সে (স্বামী) চলে যাওয়ার পর রাতে আর কেউ আসেনি। পরের দিন বৃহস্পতিবার পুলিশসহ এসে তাদের মালামাল নিয়ে যায়।’

র‌্যাবের কাছে দেয়া ওই নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, সৈকতের লাবনী পয়েন্টে বুধবার বিকেলে তার স্বামীর সঙ্গে প্রথমে এক যুবকের বাগবিতণ্ডা হয়। এর পর অভিযুক্ত যুবক ওই দম্পতির পিছু নিয়ে লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট পর্যন্ত যায়। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুজন। এই বিতণ্ডা চলতে থাকে গলফ মাঠের কাছাকাছি পর্যন্ত। সেখানে যুবকদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্ট

এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় স্বামী ও সন্তানকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আরেকটি অটোরিকশায় তিন যুবক ওই নারীকে জোর করে তুলে নেয়।

তবে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেখান থেকে অপহরণের কথা উঠেছে সেখানে সন্ধ্যার দিকে প্রচুর জনসমাগম থাকে। তাছাড়া ওখানে সব সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোরদার টহল রয়েছে। ফলে ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক।’

লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তবে বুধবারের ঘটনাটি নিয়ে কোনো প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।

ওই নারীর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরিয়ে তাকে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে যায় তিন যুবক। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে সেই চায়ের দোকানটি চিহ্নিত করা গেছে।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশে এই সেই চা দোকান

গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশেই চা দোকানটি পাওয়া গেছে। এর উল্টো দিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) সাব-অফিসের অবস্থান।

ঝুপড়ি দোকানটি চালান ছেনুয়ারা বেগম নামের এক নারী। দোকানের পেছনের দিকে কয়েকটি কক্ষ দূরপাল্লার বাসের চালক-সহকারীদের রাতযাপনের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে এলাকাটি সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকটা নির্জন।

ছেনুয়ারা বেগম স্বীকার করেছেন বুধবার রাত ৮টার দিকে এক নারীকে নিয়ে আসেন স্থানীয় আশিক ও জয়া। তাদের সঙ্গে আরও এক যুবক থাকলেও তিনি তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।

ছেনুয়ারা বেগম জানান, আশিক ও জয়ের বাড়ি দোকানের আধ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রায়ই তারা আসতেন বলে দুজনেই ছেনুয়ারারা পরিচিত।

ছেনুয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে আশিক, জয়াসহ তিনজন সিএনজি অটোরিকশায় এসেছিল। তাদের সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল। তারপর আমার দোকানের পেছনের দিকে গাড়ির হেলপারদের ঘুমানোর রুমে মেয়েটিকে নিতে দেখেছি।’

ছেনুয়ারা বলেন, ‘প্রায় আধ ঘণ্টা পর রুম থেকে এসে আশিকরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে আমার দোকান থেকে একটু দূরে যায়। তখন ওই মেয়েটি আমার কাছে এসে তার স্বামী ও সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে আশিককে সুপারিশ করতে বলে। এর কয়েক মিনিট পরেই তারা মেয়েটিকে নিয়ে ওই একই অটোরিকশায় চড়ে কবিতা চত্বরের দিকে চলে যায়।’

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
ঝুপড়ি চা দোকানের মালিক ছেনুয়ারা বেগম

ছেনুয়ারা ঘটনাটি কেন আর কাউকে জানাননি, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা তার কাছে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্তের অংশ হিসেবে ছেনুয়ারাকে ওই নারীর মুখোমুখি করা হবে। এরপর প্রয়োজনে ছেনুয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।’

ওই নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, ঝুপড়ি চা দোকানটি থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে।

জিয়া গেস্ট ইনের রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য অনুযায়ী, ওই নারীকে নিয়ে আশিক বুধবার রাত ৯টা ৮ মিনিটে হোটেলে আসেন। খাতায় দুজনের নামই এন্ট্রি করার পর তাদের তৃতীয় তলার ২০১ নম্বর কক্ষ দেয়া হয়।

ওই সময়ে হোটেল ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন রিয়াজ উদ্দিন ছোটন। তাকে বুধবার গভীর রাতে আটক করে র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি, আশিকের সঙ্গে ছোটনের আগে থেকেই সখ্য ছিল।

ওই নারীকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া এবং বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে লবির সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, হোটেলে যাওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে বেরিয়ে যাচ্ছেন আশিক। তার কিছু সময় পর একাকী নেমে আসেন ওই নারী।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইনের চেক-ইন কাউন্টারে ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত আশিক। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেয়া

ওই নারীর অভিযোগ, রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়ায় তিনি আটকে পড়েছিলেন। এরপর কক্ষের জানালা দিয়ে টেলিভিশনের রিমোটের একটি ব্যাটারি ছুড়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক যুবকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে ওই যুবক এসে দরজা খুলে তাকে বের করেন।

তবে জিয়া গেস্ট ইন-এর আরেক ম্যানেজার আমির হোসেনের দাবি, তাদের হোটেলের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি শুধু ভেতর থেকে বন্ধ করার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই নারীকে উদ্ধারের জন্য বাইরে থেকে কোনো যুবক হোটেলে প্রবেশ করেননি বলেও দাবি করেন আমির।

তিনি দাবি করছেন, কক্ষ ভাড়া নেয়ার সময়ে আশিকসহ দুজনকেই ‘স্বাভাবিক’ মনে হয়েছে হোটেলকর্মীদের।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষের দরজা

নিয়ম অনুযায়ী কক্ষ ভাড়া দেয়ার সময় দুজনের পরিচয়সূচক নথি কেন জমা রাখেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ, তেমন প্রশ্নের জবাব দেননি আমির। তবে তিনি বলেন, ‘আশিকের সঙ্গে ম্যানেজার ছোটনের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। এর আগেও আশিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছেন।’

ওই নারী র‌্যাবকে জানিয়েছেন, আশিক হোটেলে ঢোকার পর তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ম্যানেজার ছোটনের কাছে জমা রেখেছিলেন। তিনি কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর সেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রথমে স্বামীকে ফোন করেন। দুর্বৃত্তরা ইতোমধ্যে তার স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে দিয়েছিল।

ফোন করার পর সন্তানকে নিয়ে তার স্বামী ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তারা আলোচনা করে ৯৯৯-এ ফোন করেন।

তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে না এসে থানায় গিয়ে জিডি করতে বললে তারা র‌্যাবকে ঘটনাটি জানান। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে র‌্যাব ওই হোটেলে আসে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হোটেল-মোটেল জোনে যে নারী ধর্ষণের অভিযোগে ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার কথা বলছেন, তা আমরা জানি না। কারণ ৯৯৯ থেকে জেলা পুলিশের কাছে কোনো ফোন আসেনি। তারপরেও ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলেছেন।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা নারীর সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল অভিযুক্তদের। তাদের মধ্যে একটি লেনদেনও রয়েছে। এ ছাড়া হোটেল ও মামলার নথিতে স্বামী-স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করেছেন। এসব আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে আটক করেছে র‍্যাব

তিনি বলেন, ‘এর আগেও ওই নারী দুই ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন। তিনি এর আগেও কক্সবাজারে ছিলেন। এ জন্য ঢালাওভাবে তাকে পর্যটক হিসেবে দাবি করা যাচ্ছে না। ৯৯৯-এর বিষয়টিও তিনি গণমাধ্যমে ভুল বলেছেন। এর পেছনের কারণ পেয়ে গেছে পুলিশ। তবে আমরা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযানও অব্যাহত রেখেছি।’

পুলিশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশিক ও তার গ্যাং ওই দম্পতির কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। ওই টাকা না পাওয়ায় আশিকসহ আরও দুইজন তাকে হোটেলে নিয়ে যান। এরপর হোটেল থেকে বের হয়ে ওই নারী র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দেন।’

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটির পেছনের বিষয় সম্পর্কে আমরা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছি। তবে ধর্ষণের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। শিগগিরই আমরা একটি ব্রিফিং করতে পারি।’

ওই নারীর স্বামী নিজ এলাকা ছাড়েন ২ বছর আগে

ওই নারী ও তার স্বামী প্রাথমিকভাবে র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন, তারা ঢাকার যাত্রাবাড়ীর জুরাইন এলাকা থেকে ভ্রমণের উদ্দেশে বুধবার কক্সবাজার আসেন।

ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলেও দাবি করেন ওই নারীর স্বামী।

তবে মামলার এজাহারে ওই নারীর স্বামী কিশোরগঞ্জ পৌরসভার একটি ঠিকানা দিয়েছেন।

সেই ঠিকানায় গিয়ে ওই নারীর স্বামীর বড় ভাইসহ স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তারা জানান, দ্বিতীয় শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেননি ওই নারীর স্বামী। এরপর তিনি পরিবারের একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করেন।

‘কক্সবাজারে ধর্ষণে অভিযুক্তরা নারীর পরিচিত’
তিন মাস আগে কক্সবাজার সৈকতে স্বামী-সন্তানের সঙ্গে ওই নারীর তোলা ছবি

দুই বছর আগে ঢাকায় চলে যান ওই ব্যক্তি। পরিবারের দাবি বছর খানেক আগে তার বিয়ের খবর জানতে পারলেও মেয়েটির পরিচয় সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।

মাস তিনেক আগে কক্সবাজার সৈকত থেকে স্ত্রী ও সন্তানের ছবি বড় ভাইয়ের স্ত্রীর ইমো নম্বরে পাঠিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এ ধরনের কিছু ছবি পেয়েছে নিউজবাংলা।

স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় থাকার সময়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির বেশ কিছু অভিযোগ ছিল।

আরও পড়ুন:
কক্সবাজারে ‘ধর্ষণের’ ঘটনা প্রকাশ হলো যেভাবে
পর্যটককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, মামলার আসামি ৭
তরুণীকে সংঘবদ্ধ ‘ধর্ষণ’
পর্যটককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, হোটেল ম্যানেজার আটক
পুলিশকে জানিয়েও সাড়া পাননি কক্সবাজারে ‘ধর্ষণের শিকার’ নারী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Snake panic in Feni after flood

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

বন্যার পর ফেনীতে সাপ আতঙ্ক, গৃহবধূর মৃত্যু

ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The creation of waterlogging at Benapole ports

পানি নিষ্কাশনের অভাবে  বেনাপোল বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

ব্যাহত হচ্ছে বন্দরে খালাশ প্রক্রিয়া
পানি নিষ্কাশনের অভাবে  বেনাপোল বন্দরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি

টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।

ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।

তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chakrias escaped accused Sajjad was detained in Coxs Bazar DB

চকরিয়ার সেই পালাতক আসামি সাজ্জাদ কক্সবাজারে ডিবির জালে আটক

চকরিয়ার সেই পালাতক আসামি সাজ্জাদ কক্সবাজারে ডিবির জালে আটক

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।

চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।

এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Panchagarh has fined Tk 2 lakh in a joint operation at night 

পঞ্চগড়ে রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে  ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বালু উত্তোলনকারীকে 

পঞ্চগড়ে রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে  ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বালু উত্তোলনকারীকে 

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।

দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two maternity deaths at the same clinic in Kushtia Attack on the home of the clinic owner

কুষ্টিয়ায় একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যু: ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা

কুষ্টিয়ায় একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যু: ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।

সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।

মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The allegation of BNP leader Hafiz Ibrahim to the home adviser is false and fabricated

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিমের নামে অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে বিএনপি নেতা হাফিজ ইব্রাহিমের নামে অভিযোগটি মিথ্যা ও বানোয়াট

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।

এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।

হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।

মন্তব্য

রাজশাহীতে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

রাজশাহীতে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৫।

রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

সোমবার সকালে র‌্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য

p
উপরে