আলোচিত ৪৯ মামলার আসামি একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন তার মা কমরের নেহার।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
কমরের নেহার রাজারবাগ দরবার শরিফের পির দিল্লুর রহমানের মুরিদ। সংবাদ সম্মেলনের সময় তার সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে আকতার ই কামাল, ছোট মেয়ে ফাতেমা আক্তার, কাঞ্চনের মামাতো ভাই শাকেরুল কবির ও তার দুই বোন।
৮৪ বছর বয়সী কমরের নেহারের পক্ষে তার লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মেয়ে ফাতেমা আক্তার।
কমরের নেহার তার লিখিত অভিযোগে বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর কাঞ্চন সবার সম্পদ আত্মসাৎ করতে উঠেপড়ে লাগে। সম্পদ নিয়েই তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কাঞ্চন নানা সময় ভুয়া দলিল তৈরি করে মা ও অন্য ভাই-বোনদের সম্পদ দখল করার পাঁয়তারা করে। সম্পদের জন্য কাঞ্চন মায়ের বিরুদ্ধেই দুটি মামলা করে। এমনকি নিজের মায়ের নামের সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে অন্য নারীকে মা বানিয়ে জাল দলিল তৈরি করে। এ ঘটনা সামনে আসার পর কাঞ্চনের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে।
স্বামী ডা. আনোয়ার উল্লাহ ১৯৮৬ সালে রাজারবাগ পিরের মুরিদ হয়েছিলেন দাবি করে কমরের নেহার বলেন, ‘তিনি (স্বামী) জীবিত থাকার সময় আমি আমার বড় ছেলে ও মেয়ে রাজারবাগ পিরের মুরিদ হই।’
কমরের নেহার তার স্বামীর সম্পদের বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘আমার স্বামী আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ছিলেন। তিনি অনেক জমিজমা ক্রয় করেন। তার ঢাকার শেওড়াপাড়া, শাহজাহানপুর থানার শান্তিবাগে বাড়ি, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবাইলে ফ্যাক্টরি, তক্কার মাঠে জমি, পিলকুনিতে ৪টি প্লট রয়েছে। এ ছাড়া তিনি নোয়াখালীতে পৈতৃক সূত্রে অনেক জমিজমা লাভ করেন। তার মৃত্যুর পর এই সম্পত্তিগুলো কাঞ্চনসহ সবার মধ্যে বণ্টন হয়, যা প্রত্যেকের সচ্ছল জীবনযাপনের জন্য যথেষ্ট।
‘আমার স্বামী আমার জন্যও আলাদা কিছু সম্পত্তি কিনেছিলেন। আমার ও স্বামীর ইচ্ছা অনুযায়ী, কিছু জমি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করার নিয়ত করেছিলাম। কিন্তু আমার দানের বিষয়টি অন্য সন্তানরা মেনে নিলেও কাঞ্চন মানতে পারেনি। সে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে যেন আমি আমার ভাগের সম্পত্তিটুকু পুরোটাই তাকে লিখে দিই; কোনোভাবেই যেন মাদ্রাসায় জমি দান না করি। কাঞ্চন সম্পত্তির ওপর লোভ সামলাতে পারে না পেরে অন্য এক মহিলাকে মা বানিয়ে আমার জমির জাল দলিল তৈরি করে। ওই জাল হেবা দলিলের জন্য আমরা ২০০৯ সালে একটি মামলাও করেছিলাম যার নং ১৩৯২৬।’
কমরের নাহার বলেন, ‘…এক যুগ আগে কাঞ্চন আমাকে মৃত দেখিয়ে এবং তার একমাত্র বোন ফাতেমা আক্তারকে বাদ দিয়ে সকল সম্পদের ওয়ারিশনামা তৈরি করে। কাঞ্চনের বানানো জাল দলিল বাতিল করতে এবং আমার মেয়ের ওয়ারিশসত্ব ফিরিয়ে আনতে আমি আদালতের দ্বারস্থ হই। তখন কাঞ্চন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা শুরু করে। আমি তার মা হওয়া সত্ত্বেও আমার বিরুদ্ধে দুটি, বড় ভাই আকতার ই কামালের বিরুদ্ধে সাতটি, বোনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং তার মামাতো ভাই শাকেরুল কবিরের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে।’
২০১৪ সালে নিজের অংশ থেকে মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ মাদ্রাসার নামে ৭৬ শতাংশ জমি দান করেন বলে উল্লেখ করেন কমরের নেহার।
তিনি বলেন, ‘এটা কাঞ্চন মেনে নিতে পারেনি। সে ওই জমিসহ আমার অংশের সম্পদ তার নামে লিখে দিতে আমাকে চাপ দিতে থাকে। সেই সাথে দানের জমি ফিরিয়ে দিতে রাজারবাগ দরবার শরিফ ও মুহম্মদীয়া জামিয়া শরিফ মাদ্রাসার সংশ্লিষ্ট লোকজনের ওপর মামলা-হামলা করতে থাকে। অনেককে সে রক্তাক্ত করে হাসপাতালে পাঠায়। এমনকি মাদ্রাসায় যাওয়া বোরকা পরিহিতা নারীদেরও সে উত্ত্যক্ত করত। এরপর সে রাজারবাগ পিরের সম্পর্কে উল্টাপাল্টা বক্তব্য প্রচার করতে থাকে।
‘পির সাহেব নাকি আমাকে বাইয়াত করে ভুলভাল বুঝিয়ে আমার সব সম্পত্তি লিখে নিচ্ছেন। আমি নাকি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে তাদের বঞ্চিত করে পির সাহেবকে সব সম্পত্তি লিখে দিচ্ছি। এমন মিথ্যা সে মিডিয়ায় প্রচার করতে থাকে। আমি কোনো সম্পত্তি পির সাহেবকে লিখে দিইনি। যতটুকু সম্পত্তি আমি দান করেছি, সেটা একটা মাদ্রাসা ও এতিমখানার জন্য; পির সাহেব বা দরবার শরিফের নামে নয়। আমি স্বেচ্ছায় ওই সম্পদ দান করেছি।’
পিরের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাঞ্চন কুৎসা রটাচ্ছেন উল্লেখ করে কমরের নেহার বলেন, ‘সে প্রচার করে, আমি নাকি আমাদের শান্তিবাগের বাড়ি পির সাহেবকে লিখে দিয়েছি, পির সাহেবের মেয়ের বিয়েতে স্বর্ণের মুকুট দিয়েছি, জাপান থেকে তার পাঠানো একটা গাড়ি পির সাহেবকে দিয়ে দিয়েছি। এসবই ভিত্তিহীন, মিথ্যা কথা। কাঞ্চনের সাথে আমাদের পারিবারিক বিরোধ। সেটার সাথে পিরকে জড়িয়ে মাদ্রাসার জায়গাটা দখল করতে চায় সে।’
কাঞ্চনের মায়ের দাবি, জাপান থেকে ফিরে এসে তার ছেলে ১৯৯৫ সালে রাজারবাগ পিরের মুরিদ হন। এমনকি তার দ্বিতীয় বিয়ের অনুষ্ঠানও রাজারবাগ দরবার শরিফে হয়।
ছেলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ অভিযোগ পাঠ করার পর কমরের নেহার ও তার পরিবারকে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করতে চাইলে তারা জানান, কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে তারা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেননি। তারা শুধু তাদের বক্তব্য তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
এরপরও কাঞ্চনের জাল হেবা দলিল সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর না দিয়ে সংবাদ সম্মেলনস্থল ছাড়েন।
পরিবারের সব অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে একরামুল আহসান কাঞ্চন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মা-ভাই-বোন পির সাহেব দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। পিরের কয়েকজন সহযোগী মাদ্রাসার দানের বাইরেও আমাদের আরও জায়গা হাতিয়ে নিবার পাঁয়তারা করছিল, এটা আমি বুঝতে পেরেছিলাম। তখন আমি বাধ্য হয়ে আমার মায়ের কাছ থেকে গোপনে স্বাক্ষর নিয়ে আমাদের নারায়ণগঞ্জের ১৭১ শতাংশ জায়গার হেবা দলিল তৈরি করি। আর তাতে উল্লেখ করা হয়, আমার মায়ের মৃত্যুর পর আমার মায়ের অংশের ওই জমির মালিক হব আমি, আমার বড় ভাইয়ের দুই ছেলে ও আমার ছোট ভাই বাদল।
‘আমার মা, বড় ভাই ও বোন যেহেতু পিরের মুরিদ। আর তারা ওই সম্পদ পিরকে দিয়ে দিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাই আমি এই কাজ করেছিলাম। আমার যদি সম্পদের প্রতি লোভ থাকত তাহলে তো সব আমার নিজ নামেই নিতাম। আমার ছোট ভাই আর ভাতিজাদের নাম রাখতাম না।’
কাঞ্চনের দাবি, ‘পিরের লোকেরা যে আমাদের সম্পদ নিয়ে যাচ্ছিল তার প্রমাণও মিলে ওই হেবা দলিল করার কিছুদিন পর। আমার মায়ের কাছ থেকে ওই ১৭১ শতাংশ জমির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে নেয় পিরের লোকজন। তখন তারা সেই অংশের কিছু জমি একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়।
‘তখন আমার তৈরি করা হেবা দলিল সামনে আসলে তারা বিপদে পড়ে যায়। তখন মাকে দিয়ে আমিসহ আমার ছোট ভাই ও দুই ভাতিজার নামে দুটি মামলা করানো হয়। একটি মামলায় জমি ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে মায়ের সাথে আমাদের আপস হয়। অন্যটি এখনও চলছে।’
মাকে মৃত দেখিয়ে বোনের অংশ বাদ দিয়ে ওয়ারিশনামা তৈরির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কাঞ্চন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। যদি এমনটা হতো তাহলে তো আমার মা আমার বিরুদ্ধে মামলা করত। তাদের জিজ্ঞেস করেন মামলা কেন করল না।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যের শেষ দিকে কমরের নেহার বলেন, ‘সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক এই বিরোধে কাঞ্চন একটি পক্ষে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে পুরো পরিবার এক আছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে কমরের নেহারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার বড় ছেলে, মেয়ে, ভাগ্নে, ভাগ্নিরা। তিনি দাবি করেছিলেন, ভিডিও কলের মাধ্যমে ওই সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন ছোট ছেলে কামরুল আহসান বাদল ও তার পরিবারের সদস্যরা। তবে বাদল ও তার পরিবারের সদস্যদের সেখানে যুক্ত থাকার দৃশ্য চোখে পড়েনি।
নিউজবাংলা যোগাযোগ করে বাদলের পরিবারের সঙ্গে। টেলিফোনে কথা হয় বাদলের স্ত্রী তসলিমার সঙ্গে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ওই সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলাম না। আমাদের কাছে তো ভিডিও কল করার মতো কোনো ফোনই নাই।’
ভিডিও কলে যুক্ত থাকার কথা কেন বলা হলো, তা জানতে চাইলে তসলিমা বলেন, ‘তা বলতে পারব না। আমরা কাঞ্চন ভাই বা আমার শাশুড়ির বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। আমাদের এসব থেকে দূরে রাখেন।’
চলমান তাপপ্রবাহে সারা দেশের সঙ্গে পুড়ছে রাজধানী ঢাকাও। প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ নগর জীবন। এ অবস্থায় রাজধানীর সড়ক-মহাসড়কে পানি ছিটাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির চিফ হিট অফিসারের পরামর্শে এমন উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বায়ু দূষণ রোধ ও তীব্র দাবদাহে শহরকে ঠাণ্ডা রাখতে ডিএনসিসির ওয়াটার স্প্রে (পানি ছিটানো) কার্যক্রম পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ‘দুটি স্প্রে ক্যানন প্রধান সড়কে পানি ছিটাবে। এগুলো বেশ বড় হওয়ায় গলির সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না৷ গলির সড়কে পানি ছিটানোর জন্য দশটি ব্রাউজার কাজ করবে। এগুলোর মাধ্যমে সড়কগুলো ভিজিয়ে ঠাণ্ডা রাখা হবে।
‘এছাড়াও ডিএনসিসির পার্কগুলোতে স্প্রে ক্যাননের মতো কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। এক সপ্তাহের মধ্যে পার্কগুলোতে কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার (সিএইচও) বুশরা আফরিনের পরামর্শে চলমান তীব্র দাবদাহে জনগণকে স্বস্তি দিতে সড়কে পানি ছিটানো এবং ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে খাবার পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে তিনটি বিশেষ ভ্যানগাড়ি (৫০০ লিটার পানির ট্যাংক সংবলিত) পথচারীদের পানি পান করানোর জন্য নামানো হয়েছে। ভ্যানগুলো বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরবে। এই ভ্যানগুলো ছোট আকারে করা হয়েছে যেন শহরের অলিগলিতে প্রবেশ করতে পারে।’
চিফ হিট অফিসারের কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘চিফ হিট অফিসার আমাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। হিট অফিসার একজন একক ব্যক্তি। তিনি তো কাজগুলো বাস্তবায়ন করবেন না। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কাজগুলো আমাদের সবাইকে করতে হবে। তার পরামর্শেই জনগণকে স্বস্তি দিতে আমরা এই কাজগুলো করছি।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন যে চিফ হিট অফিসার সিটি করপোরেশন থেকে বেতন পাচ্ছেন। বাস্তবে সিটি করপোরেশন থেকে তিনি একটি টাকাও পান না। এমনকি সিটি করপোরেশনে তার কোনো বসার ব্যবস্থাও নেই।
‘হিট অফিসার নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেসিলিয়েন্স সেন্টার (আরশট-রক)। প্রতিষ্ঠানটি সারা বিশ্বে সাতজন চিফ হিট অফিসার নিয়োগ করেছে এবং তারা সবাই নারী।’
ওয়াটার স্প্রে পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসি'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর বনানীতে মাঝ সড়কে চলন্ত অবস্থায় যাত্রীবাহী বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নির্বাপনে কাজ করে।
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একটি বাস বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেলের ট্যাঙ্কি বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন জানান, বিকেল ৪টা ২ মিনিটে যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন লাগার খবর আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নির্বাপন করে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-শেরপুর রুটে চলাচল করা জে কে এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসটি বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। পরে মোটরসাইকেলটিকে টেনে-হিঁচড়ে বাসটি অনেক দূর নিয়ে আসে। এতে মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরিত হয়ে বাসটিতেও আগুন লেগে যায়। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে দাসত্বের তকমা লেগে আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতা পাওয়ার জন্য বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করে সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।
জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিন নেতার মাজারে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘তারা জনগণের সমর্থনকে মূল মনে করে না। তারা মনে করে যে, বিদেশি প্রভুরদের দাসত্ব করলে ক্ষমতা রক্ষা করা যায়, ক্ষমতায় যাওয়া যায়।’
তার অভিযোগ, দাসত্ব করে কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায়, সেই দুরভিসন্ধি করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিএনপিকে গণতান্ত্রিক দল আমি মনে করি না। কারণ তাদের ইতিহাসটাই হলো গণতন্ত্র হত্যার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো নজির নেই। তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, প্রহসনে পরিণত করেছে এবং গণতান্ত্রিক বিধি-বিধান তারা দলের মধ্যে কোনোদিন মানেনি।
‘আজকে দলটির যে নেতারা বড় কথা বলেন, তারা কবে দলীয় কাউন্সিল করেছে এবং তাদের কোথায় কাউন্সিল হয়েছে? সাত-আট বছর আগে লা মেরিডিয়ানে তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হয়েছে। ৫০১ জনের জাম্বুজেট মার্কা কমিটি। কাজেই যাদের নিজেদের দলের ভেতরেই গণতন্ত্র নেই, তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, এ আশা আমরা করি না।’
তিন নেতার মাজারে শনিবার আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ও পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
পরে সাংবাদিকদের কাছে বাংলার সাধারণ মানুষের কল্যাণে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান তুলে ধরেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘তিনি (শেরো বাংলা) আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন। এ দেশে সাধারণ মানুষের মাঝে যারা রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। সাধারণ মানুষকে এই দেশে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন সর্বকালের সবার সেরা বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। শেরে বাংলাকে গ্রাম- বাংলার কৃষকরা কোনোদিন ভুলতে পারবে না।
‘তিনি চিরদিন তাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রজাস্বত্ব আইন এবং ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে তিনি মহাজনদের নিপীড়ন-অত্যাচার থেকে বাংলার কৃষককূলকে রক্ষা করেছিলেন। সে জন্য তিনি এখনও স্মরণীয় হয়ে আছেন। আজকের দিনে আমাদের যে প্রত্যয়, যে অঙ্গীকার, সেটা হচ্ছে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক—অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
গ্যাস পাইপলাইনে জরুরি কাজের জন্য শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ইএনবির
তিতাস জানায়, যেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
এ সময় আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে তিতাস। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে কোম্পানি।
রাজধানীর মুগদায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে।
মুগদার বড়বাজারের সামনে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো মাহিন আহমেদ (১৩) মতিঝিল সরকারি আইডিয়াল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে পরিবারের সঙ্গে উত্তর মুগদার মদিনাবাগে একটি বাসায় থাকত।
মাহিনের খলাত ভাই হিমেল জানান, মাহিনের বাবা একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মাহিন দ্বিতীয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল মাহিন, ওই সময় ময়লার গাড়িটি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে মাহিনের মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য শিশুটির মরদেহ ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িটি জব্দ করে চালককে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য