১০ মাসের প্রস্তুতি শেষে স্থিতিশীলতা ফান্ড যখন পুঁজিবাজারে কাজে লাগানোর প্রস্তুতি শেষ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানের কারণে এই তহবিলের আকার নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অবণ্টিত লভ্যাংশ দিয়ে তহবিল গঠনের প্রাথমিক পরিকল্পনা যখন করা হয়েছিল, সে সময় নগদ ও বোনাস শেয়ার মিলিয়ে ২১ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন হবে বলে হিসাব করা হয়েছিল।
এর মধ্যে বোনাস শেয়ার ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর নগদ লভ্যাংশ পাওয়ার আশা করা হয়েছিল বাকিটা।
তবে এই তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনা এবং কোম্পানিগুলো শেয়ারধারীদের নোটিশ করার পর বহুজন তাদের লভ্যাংশ নিয়ে গেছেন বলে জানানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত নগদ লভ্যাংশ হিসেবে ৪০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে হিসাব করেছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
অবণ্টিত বোনাস শেয়ার মিলিয়ে তহবিল ৫ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলেও সবশেষ হিসাব বলছে।
এই তহবিলের মধ্যে একটি বড় অংশ আসার কথা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি এই অর্থ না আসে, তাহলে আরও ছোট হতে পারে কমিটি।
সোমবার বিএসইসি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ কয়েকটি সংস্থার মধ্যে যে ভার্চুয়াল আলোচনা হয়, তাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অবণ্টিত লভ্যাংশ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
এর কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, তিন বছর ধরে অবণ্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজার তহবিলে দেয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা আছে। ব্যাংক কোম্পানি আইনে বলা আছে, কেউ ১০ বছর লভ্যাংশ না নিলে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হবে। পরে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
যদিও বিএসইসি এখনও আশাবাদী, এই আইন তাদের তহবিল গঠনে বাধা হবে না। এর কারণ, এই অর্থ বা শেয়ারের মালিকানা চাওয়া হচ্ছে না। এই তহবিল কেবল অর্থের জিম্মাদার হবে। মালিকরা চাওয়ামাত্রই সেই অর্থ সংক্ষিপ্ততম সময়ে দিয়ে দেয়া হবে।
বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা তহবিল যেটি চাচ্ছি সেটি আমাদের জন্য চাচ্ছি না। এবং এই তহবিলে কার কত টাকা জমা হচ্ছে, তার পরিপূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে থাকবে। কেউ চালে তা এক মাসের মধ্যে তাকে বুঝিয়ে দেয়ার বিধান আছে।
‘বাকি সময়টিতে এই অর্থ পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতার জন্য ব্যবহার করা হবে। এর জন্য আলাদা পরিচালনা পর্ষদও গঠন করা হয়েছে। এবং খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে তা পরিচালনা করার নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে। ফলে এ নিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।‘
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে এ নিয়ে আমাদের আলোচনার সুযোগ আছে।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সমিতি ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিক লিস্টেট কোম্পানিজ’-এর মহাসচিব আমজাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে সমস্যাটি দেখা দিয়েছে, তা দুই সংস্থার পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।’
ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ কত
বিএসইসির চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী ঢাকা ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে শেয়ার আছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৪২টি।
মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৯ লাখ ৩২ হাজার ৩৭০টি।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪৭টি।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৬২ লাখ ৮০ হাজার ১২৪টি।
মার্কেন্টাইলে ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৭ লাখ ৬৫ হাজার ২৮৯টি।
এক্সিম ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ১ লাখ ৮২৯টি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৮৪টি।
ওয়ান ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৩৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯৮৮টি।
ইস্টার্ন ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৯টি।
ইসলামী ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৯ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৫৫৩টি।
পূবালী ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৫ কোটি ১১ লাখ ৯১ হাজার ৮১০টি।
সিটি ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৬১ লাখ ২৬ হাজার ৬২৩টি।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ১২ লাখ ৩৯ হাজার ৮৭৯টি।
ব্যাংক এশিয়ার অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ২ কোটি ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪৮৭টি।
যমুনা ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৩৬ হাজার ৪১৯টি।
এবি ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৬২ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৯টি।
ব্র্যাক ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৫ লাখ ৬২ হাজার ৯৪টি।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৪৮ হাজার ৯৬৪টি।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ২ লাখ ১ হাজার ৩৫টি।
উত্তরা ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৬৬ হাজার ১১৯টি।
ট্রাস্ট ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৩৭ হাজার ৪৮৭টি।
রূপালী ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫৮টি।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৯১ হাজার ৭৩১টি।
এনআরবিসির অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ১ হাজার ৩৯৭টি।
নতুন তালিকাভুক্ত সাউথবাংলা ব্যাংকের অবণ্টিত লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার আছে ৩৪ হাজার ২২১টি শেয়ার।
এসব ব্যাংকের হাতে অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশ কত আছে, সেটি অবশ্য গত ১ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবণ্টিত লভ্যাংশ কত
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৪টি।
ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫১৯টি।
পিপল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ১ কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার ১৬টি।
মাইডাস ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৬৬ হাজার ১৪৭টি।
উত্তরা ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৫ হাজার ৬২৯টি।
প্রাইম ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৩ হাজার ৪০৯টি।
প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৭৯ হাজার ৩৯টি।
ইসলামী ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ১ হাজার ১৫৬টি।
বিআইএফসির অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৪ কোটি ৪৩ লাখ ৬০ হাজার ৩৭৯টি।
আইপিডিসি ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৬৪৯টি।
ইউনিয়ন ক্যাপিটালের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৪ হাজার ৭৮৩টি।
বিডি ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৪ হাজার ৪২২টি।
ফিনিক্স ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৮ হাজার ৭৬টি।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ৬ হাজার ২৮টি।
ফাস ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ১ হাজার ২৯৭টি।
ফার্স্ট ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ১৩ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৩টি।
ফারইস্ট ফাইন্যান্সের অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশ আছে ২ হাজার ৫৮৫টি।
এসব কোম্পানির অবণ্টিত নগদ লভ্যাংশ কত, সেটিও ১ সেপ্টেম্বর করা তালিকায় উল্লেখ নেই।
তহবিলের ভাবনা যেভাবে
নিয়মিত লেনদেন না করা বা দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানের কারণে ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। এতে নগদ লভ্যাংশ ব্যাংক হিসাবে জমা হয় না। একই কারণে বিও হিসাব নবায়ন না করলে শেয়ার (স্টক) লভ্যাংশ জমা না হয়ে তা কোম্পানির কাছে ফেরত চলে যায়। কোম্পানি এগুলো সাসপেন্ডেড হিসাবে জমা দেখিয়ে আর্থিক বিবরণী তৈরি করে।
ভারতে এ ধরনের অবণ্টিত লভ্যাংশ পুঁজিবাজারের জন্য ব্যবহার করা হয়। দেশেও এই অর্থ ব্যবহার করে কীভাবে পুঁজিবাজারকে উন্নত করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়।
গত বছরের শেষে এই তহবিল গঠনের আলোচনা ওঠে। আর ২৭ জুন প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে এই তহবিল গঠন নিশ্চিত হয়। কিন্তু এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তির খবর আসেনি।
তহবিল পরিচালনায় পর্ষদ কী করছে
এই তহবিল পরিচালনার জন্য গত ২২ আগস্ট ১০ সদস্যের পরিচালনা পর্যদ গঠন করা হয়েছে, যার চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান।
পরিচালনা পর্ষদে আরও আছেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক তানজিলা দিপ্তী, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া, চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ফজল বুলবুল, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সিডিবিএলের স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ তারেক এবং এ কে এম দেলোয়ার হোসেন ।
এই পর্ষদ এখন পর্যন্ত কেবল একটি বৈঠক করেছে। বৈঠকে যে পরিমাণ অবণ্টিত লভ্যাংশ জমা পড়ার কথা, তার চেয়ে কম পড়ার বিষয়টি নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত হয়েছে, শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়ে দেয়া হয়েছে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছে, সেটি যাচাই করে দেখা হবে। এ জন্য নিরীক্ষা করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৪০ শতাংশ শেয়ারে বিনিয়োগ, ৫০ শতাংশে মার্জিন ঋণ
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এই তহবিলের ৪০ শতাংশ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শেয়ারে। ৫০ শতাংশ অর্থে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দেয়া হবে। আর ১০ শতাংশ অর্থ অতালিকাভুক্ত কোম্পানি বা সরকারি সিকিউরিটিজ, স্থায়ী আমানত ও বেমেয়াদি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যাবে।
এই তহবিলের মার্জিন ঋণের সুদহার কত হবে, সেটি অবশ্য প্রজ্ঞাপনে বলা নেই।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য