পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কয়েক হাজার কোটি টাকার যে তহবিল গঠন করা হচ্ছে তার কত অংশ কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে, সেটি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এই অর্থের ৯০ শতাংশই সরাসরি পুঁজিবাজারে ব্যবহার করা হবে। বাকি অর্থ পুঁজিবাজারের বাইরেও বিনিয়োগ করা যাবে।
কোথাও বিনিয়োগ করে লোকসান হলে সমপরিমাণ অর্থ অন্য বিনিয়োগের মুনাফা থেকে সঞ্চিতি হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।
এই তহবিল কত টাকার হবে, সেটি এখন চূড়ান্ত না হলেও সেটি কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি, সেটি নিশ্চিত।
এই তহবিলে তিন বছর ধরে অদাবিকৃত লভ্যাংশ আর আইপিও আবেদনের অফেরত টাকা যুক্ত হবে।
২৭ জুন জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই তহবিলের ৪০ শতাংশ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত শেয়ারে। ৫০ শতাংশ অর্থে বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ দেয়া হবে। আর ১০ শতাংশ অর্থ অতালিতাভুক্ত কোম্পানি বা সরকারি সিকিউরিটিজ, স্থায়ী আমানত ও বেমেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা যাবে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট কাটাতে এ তহবিল সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’
কবে থেকে তহবিলের কাজ শুরু হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যেহেতু প্রজ্ঞাপন হয়ে গেছে, ধরে নিন আজ থেকেই শুরু হয়ে গেছে।’
এই তহবিলের ব্যবস্থাপনায় থাকবে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ বা আইসিবি।
কিছু কাজ অবশ্য আগেই এগিয়ে রাখা হয়েছে। যেমন প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা ফান্ড নামে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হবে। একই নামে থাকবে একটি বিও হিসাব। কোনো শেয়ারে লোকসান হলে অন্য শেয়ারের মুনাফা থেকে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।
এরই মধ্যে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে এবং সেখানে কিছু অর্থ জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
ভারতে অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশ সাত বছর পর্যন্ত সাসপেন্ডেড থাকতে পারে। এরপর সেটা চলে যায় বিনিয়োগকারী সুরক্ষা তহবিলে। কিন্তু বাংলাদেশের ওই ধরনের কোনো তহবিল বা নীতিমালা এতদিন ছিল না।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ফান্ডের ওপর পুঁজিবাজারে পুরোপুরি স্থিতিশীলতা হবে বা এই ফান্ডের মাধ্যমে পুঁজিবাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে এটা বলা ঠিক হবে না। তবে এর মাধ্যম পুঁজিবাজারে তারল্য সমস্যা কিছুটা কাটবে।’
মার্জিন ঋণের সুদহার কত
বিএসইসি মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১২ শতাংশ নির্দিষ্ট করে দিয়ে আরও একটি শর্ত দিয়েছে যে, কস্ট অফ ফান্ডের চেয়ে ঋণের সুদহার ৩ শতাংশ বেশি হতে পারবে না। দুইবার পিছিয়ে এই সুদহার কার্যকর আগামী জানুয়ারি থেকে করেছে বিএসইসি।
এই তহবিলের মার্জিন ঋণের সুদহার কতো হবে, সেটি অবশ্য প্রজ্ঞাপনে বলা নেই। তবে এর কস্ট অব ফান্ড প্রায় শূন্য থাকায় সুদহারও কম হওয়া উচিত বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কমর্কতা দেবব্রত কুমার সরকার।
তিনি বলেন, ‘এই ফান্ড ব্যবহার করা হলেও কিন্ত দাবিদারদের টাকা পরিশোধ করতে হবে। ফলে খালি চোখে কস্ট অব ফান্ড দেখা না গেলেও কিছুটা তো ম্যাইনটেন্যান্স কস্ট থাকবে। তাই একেবারে ফ্রিও বলা যাবে না।’
তিনি মনে করেন, বিএসইসি যে মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ১২ বেঁধে দিয়েছে, সেটি নিশ্চিত করতে এই তহবিলকে ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তারা ১২ শতাংশের শর্ত বাস্তবায়ন করতে পারবে। এতে এই ফান্ডের বিনিয়োগের ঝুঁকিও কমবে। এখান থেকে তারা নিশ্চিত আয় পাবে।’
অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি ফান্ড, তাই কিছু হলেও সুদ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে সুদের বাজারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এই ফান্ডের সুদ হার নমনীয় রাখা উচিত।
বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত কারা নেবে?
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তহবিল ব্যবস্থাপনায় একাধিক কমিটি করবে তহবিল পরিচালনায় ১১ সদস্যের বোর্ড। এর মধ্যে থাকবে পরিচালন ব্যবস্থাপনা কমিটি, নিরীক্ষা ও হিসাব ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটি।
এ ছাড়াও প্রয়োজন বোধ করলে আরও সাব কমিটি করতে পারবে বোর্ড।
তহবিল পরিচালন ব্যবস্থাপনা কমিটিই শেয়া কেনাবেচা, বিনিয়োগ, পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে ঋণ বা অন্য কোনো কাজ করবে।
তহবিল পরিচালনায় বোর্ডে কারা
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তহবিল পরিচালনা করবে ১১ সদস্যের একটি বোর্ড।
এর চেয়ারম্যান ও তিন জন সদস্যকে নিয়োগ দেবে বিএসইসি। একজন সদস্য হবেন একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, যাকেও মনোনয়ন দেবে কমিশন।
একজন করে সদস্য দেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। একজন সদস্য মনোনয়ন দেবে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএল, একজন মনোনয়ন দেবে সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিসিবিএল, একজন সদস্য মনোনয়ন দেবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানি বিএপিএলসি।
তহবিলের চিফ অফ অপারেশন বা সিওও হবেন একজন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা।
এই সদস্যের সবার পুঁজিবাজার, হিসাববিজ্ঞান, ফিনান্স ও অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আর অন্তত ৫ বছর অবশ্যই পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করতে হবে।
এই সদস্যদের কারও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শীর্ষ পদে পূর্ব ইতিহাস থাকা চলবে না।
একজন সদস্য তিন বছরের জন্য দায়িত্ব পাবেন। তবে মেয়াদ বাড়ানো যাবে।
নিয়মিত চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে বোর্ড সদস্যরা একজনকে চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেবেন। একটি অর্থবছরে তারা কমপক্ষে ছয়টি বৈঠক করবেন।
তহবিলের জন্য সম্মিলিতভাবে জবাবহিদি করতে হবে বোর্ডকে। আর তারা বিএসইসির কাছেও দায়বদ্ধ থাকবে।
বোর্ড কবে গঠন করা হবে, জানতে চাইলে আইসিবির মুখপাত্র বিভাস সাহা বলেন, ‘গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এখন সে অনুযায়ী পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হবে। বিএসইসি, আইসিবি, ডিএসই, সিএসইসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করে বোর্ড গঠন করা হবে। তখনই বলা যাবে, কে কী হচ্ছে।’
কেউ টাকা চাইলে?
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোনো শেয়ারধারী বা তার উত্তরাধিকার নগদ বা বোনাস লভ্যাংশ অথবা রাইট শেয়ার দাবি করলে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে শেয়ার বা টাকা পরিশোধ করতে হবে।
বিএসইসি মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘এজন্য দাবিদারের নামে আলাদা একটি বিও হিসাবে যাচাই বাছাই শেষ দাবিকৃত বোনাস শেয়ার প্রদান করা হবে। এতে জটিলতার কিছু নেই।’
যেভাবে এলো তহবিলের ভাবনা
নিয়মিত লেনদেন না করা বা দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থানের কারণে ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। এতে নগদ লভ্যাংশ ব্যাংক হিসাবে জমা হয় না। একই কারণে বিও হিসাব নবায়ন না করলে শেয়ার (স্টক) লভ্যাংশ জমা না হয়ে তা কোম্পানির কাছে ফেরত চলে যায়। কোম্পানি এগুলো সাসেপেন্ডেড হিসাবে জমা দেখিয়ে আর্থিক বিবরণী তৈরি করে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ২১ হাজার কোটি টাকার মতো অবণ্টিত লভ্যাংশ পড়ে থাকার খবর আসে। তখন এই অর্থ ব্যবহার করে কীভাবে পুঁজিবাজারকে উন্নত করা যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়।
তখনই এই তহবিল গঠনের আলোচনা উঠে। আর ২৭ জুন প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে এই তহবিল গঠন নিশ্চিত হয়।
বিএসইসির ’ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবলাইজেশন ফান্ড’ খসড়া নীতিমালার উপর মতামত জন্য উন্মুক্ত করে গত ৮ মার্চ। এরপর এ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নীতিমালার উপর মতামত দেয়।
খসড়া নীতিমালার উপর বিএসইসিতে লিখিত প্রস্তাব পাঠায় তালিকাভুক্ত কোম্পানির সমিতি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেট কোম্পানি-বিএপিএলসি। তাদের বেশ কিছু আপত্তি বিবেচনায় নেয়া হয়।
ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে নানা আলোচনার পর অবশেষে নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য পাঠানো হয় বিজিপ্রেসে।
বিএসইসি দেখেছে, টাকার অঙ্কে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ১১ হাজার কোটি টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৬৩৪ কোটি টাকা।
সিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে অবণ্টিত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ৮ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৩২১ কোটি টাকা।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮ হাজার ৮০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার অদাবিকৃত লভ্যাংশ রয়েছে তামাক খাতের বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড-বিএটিবিসির। এর মধ্যে ৮ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বোনাস লভ্যাংশ এবং ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নগদ লভ্যাংশ।
এটি ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাব। এরপর ব্যাংক খাতের ৩০ কোম্পানি, আর্থিক খাতের বেশ কিছু কোম্পানি ও বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ফলে তহবিলের অঙ্কটা বড় হতে পারে।
তবে এই অবণ্টিত লভ্যাংশের মধ্যে নগদ অর্থ ব্যবহার করা যাবে যে কোনো সময়, কিন্তু বোনাস শেয়ার ব্যবহার করতে চাইলে সেগুলো টাকায় রূপান্তর করতে হবে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য