স্বল্প মূলধনি ও দুর্বল কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর যখন কেবল বেড়েই চলছিল, তখন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক থেকে শুরু করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও বিনিয়োগকারীদের নানাভাবে বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা গা করেননি।
প্রতিবছর ভালো লভ্যাংশ দেয়, মৌলভিত্তি ভালো, এমন কোম্পানির শেয়ারদর তলানিতে পড়ে থাকা অবস্থায় লোকসানি, লভ্যাংশ পাওয়ার আশাও নেই- এমন কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়তে থাকে তরতর করে।
পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজগুলোতে এসব দুর্বল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে নানা কথাবার্তা লেখা হতে থাকে। যারা সাবধান করেছে, তাদের আক্রমণ করে নানা কটূ কথা লেখা হয়। বলা হয়, যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, সেই সঙ্গে দাম আরও বাড়বে, এমন কথা বলে প্রলুব্ধ করা হতে থাকে।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার এক দিনের লেনদেনের চিত্রেই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। লোকসানি প্রায় সব কোম্পানির দর হারানোটা প্রধান খবর নয়, প্রধান খবর হচ্ছে দরপতনের হার।
শতকরা ৫ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে ৫৪টি কোম্পানি। এর মধ্যে ১০ শতাংশের আশপাশে দর কমেছে ১০টির মতো।
এসব কোম্পানির দর যখন ক্রমেই বাড়ছিল, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি তিনটি উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রথমে ৯টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গঠন করা হয় আরও একটি কমিটি।
তবে এই কমিটি গঠনের পর গুজব ছড়ানো হয় যে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। ফলে বোনাস ও রাইট শেয়ার দিতে হবে। আর বাংলাদেশে বোনাস ও রাইট শেয়ার দেয়া মানেই শেয়ারের উল্লম্ফন। এসব গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর আরও তেতে ওঠে এসব কোম্পানির শেয়ার দর।
কিন্তু বিষয়টি এমন নয়। কারণ বিএসইসি এও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে কোনো কোম্পানি চাইলেই আর বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে কমিশনের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
এরপর পিই রেশিও ৪০-এর বেশি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি এসব শেয়ারে মার্জিন ঋণ দেয়া হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ আসে।
এর মধ্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে বিনিয়োগকারীদের মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার দর হঠাৎ বেড়ে গেলেও এতে ঝুঁকি থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, যাদের ঝুঁকি মোকাবিলার সামর্থ্য নেই, তারা যেন সেসব শেয়ারে বিনিয়োগ না করেন।
কিন্তু এতেও থামার নাম ছিল না দুর্বল কোম্পানির উত্থান।
কখনও লভ্যাংশ না দেয়া, লোকসানে জর্জরিত, শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য তো নেই-ই, সেই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ দায়ে ভোগা শ্যামপুর সুগারের মূল্য গত তিন মাসে তিন গুণ হয়েছে।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ মিথুন নিটিংয়ের শেয়ারদর এই সময়ে ১০ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৬ টাকা ৪০ পয়সা।
শেয়ারপ্রতি চার টাকার মতো লোকসান থাকা অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ আর প্রায় সমপরিমাণ লোকসানে থাকা সাফকো স্পিনিং মিলসের শেয়ারদরও এই সময়ে বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
শেয়ারপ্রতি ১০০ টাকার বেশি লোকসান থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, চার বছর ধরে হিসাব না দেয়া ও বিপুল পরিমাণ লোকসান থাকা বিআইএফসি, তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১০ টাকার বেশি লোকসান দেয়া ফাস ফাইন্যান্স, চার বছর ধরে বন্ধ থাকা সিএনএ টেক্সটাইল, কোম্পানি বন্ধ করে মালিকপক্ষ উধাও হয়ে যাওয়া ফ্যামিলিটেক্সের শেয়ারদরও গত তিন মাসে কোনোটি হয়েছে দ্বিগুণ, কোনোটি তিন গুণ, কোনোটি চার গুণ।
এমন কোম্পানি আছে ৪০টির বেশি, যেগুলোর শেয়ারদর কেবল বেড়ে চলা নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন। কিন্তু থামার নাম ছিল না।
অবশেষে একটি দিন এলো, যেদিন ঢালাও পতন হলো এমন শেয়ারের, যা অবশ্যম্ভাবী বলেই এত দিন বাজার বিশ্লেষকরা বলে আসছিলেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান যে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, তাই ফলল রোববার। আর লেনদেন চলাকালেই পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজগুলোতে উঠতে থাকে হতাশার নানা পোস্ট। একজন লেখেন, যখন শেয়ারদর বাড়ছিল, তখন অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু আজ তারা কোথায়।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, ‘এসব কোম্পানির শেয়ার কেনা নিয়ে আগেই বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়েছিল। এখন দর কমে যে পর্যায়ে নেমে এসেছে, সে দামে যদি আবার ফেরত যায়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন। কিন্তু দর যদি সেখানে আর না যায়, তাহলে বিনিয়োগ আটকে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘মুনাফা পাওয়া গেলেও এসব স্বল্প মূলধনি ও দুর্বল ক্যাটাগরির কোম্পানিতে বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত নয়। বিনিয়োগকারীদের শেয়ারে বিনিয়োগ করার আগে কোম্পানির অবস্থা আগে থেকে দেখে নিতে হবে।’
বিএসইসি চলতি বছরের শুরু থেকেই দুর্বল ও লোকসানি কোম্পানিগুলোর বোর্ড ভেঙে নতুন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়া শুরু করে। এমন উদ্যোগে প্রায় ১২টি কোম্পানির মধ্যে রিংশাইন ও আলহাজ টেক্সটাইল ছাড়া বাকিগুলো এখনও আলোর মুখ দেখেনি। আর একটি কোম্পানি কেবল উৎপাদন শুরু করার মতো পর্যায়ে এসেছে। সেটি হলো এমারেল্ড অয়েল।
কিন্তু বাকি ৯টি কোম্পানির শেয়ারদরও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
আবার সম্প্রতি ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরা চার কোম্পানির দুটির দর বাড়ছে রকেট গতিতে। গত ১৩ জুন লেনদেন শুরু করা দুটি কোম্পানির শেয়ারদর তিন মাসে বেড়েছে দেড় হাজার শতাংশের বেশি। একটি হচ্ছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, অন্যটি পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড।
তমিজউদ্দিনের দর ১৩ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে ২০২ টাকা হয়ে যায়। আর পেপার প্রসেসিংয়ের দর ১৬ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে হয়ে যায় ২৪৭ টাকা।
মনোস্পুল পেপার ও মুন্নু ফেব্রিক্সের শেয়ারদরও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
৫০ টাকায় মূল মার্কেটে ফেরা মনোস্পুলের সর্বোচ্চ দর ওঠে ২৪৯ টাকা ৮০ পয়সা, আর ১০ টাকায় ফেরা মুন্নু ফেব্রিক্সের দর ওঠে ৩৭ টাকা ২০ পয়সা।
আরও কোম্পানির যে অবস্থা
শ্যামপুর সুগার মিলের শেয়ার উত্থান শুরু ২০ জুন। সেদিন দাম ছিল ৪২ টাকা ১০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে উঠে যায় ১৪১ টাকা ২০ পয়সায়।
তবে এখন কমতে কমতে দাঁড়িয়েছে ১১০ টাকা ৭০ পয়সায়।
মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেডের শেয়ারদরের উত্থান শুরু ২৭ জুলাই থেকে। যখন এর শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১০ টাকা ৫০ পয়সা। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে হয়ে যায় ২৬ টাকা ৩০ পয়সা।
তারপর দর পতনের মুখে পড়ে কোম্পানিটি। সাত কার্যদিবস শেষে রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর নেমে আসে ১৯ টাকা ৮০ পয়সা।
বিচ হ্যাচারি লিমিটেডের শেয়ার দরের উত্থান শুরু ৪ মে। সেদিন শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১১ টাকা ৭০ পয়সা।
সেখান থেকে দর বেড়ে ১ সেপ্টেম্বর শেয়ারদর পৌঁছে ৩১ টাকা ২০ পয়সায়। তারপর পতন শুরু। সাত কার্যদিবসে দর নেমে এসেছে ২৪ টাকা ৪০ পয়সায়।
কখনও লভ্যাংশ না দেয়া সাভার রিফ্যাক্টরিজের শেয়ারদরের উত্থান শুরু ২১ জুন থেকে। সেদিন দর ছিল ১৫৫ টাকা। শেয়ারপ্রতি মাত্র ৬ টাকা সম্পদমূল্য থাকা কোম্পানিটির দর এত কীভাবে হয়, এ নিয়ে প্রশ্নের মধ্যে সেটি বেড়ে হয়ে গেছে দ্বিগুণ।
৯ সেপ্টেম্বর শেয়ারপ্রতি দর পৌঁছে ২৯৯ টাকা ৯০ পয়সায়। সেখান থেকে এক দিনের ব্যবধানে শেয়ারদর কমে নেমে এসেছে ২৭৩ টাকা ৭০ পয়সায়।
এক দশকেও লভ্যাংশ না দেয়া মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের উত্থান শুরু ২১ জুন থেকে। সেদিন শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১১ টাকা ৬০ পয়সা। ক্রমাগত বেড়ে ২ সেপ্টেম্বর শেয়ারদর পৌঁছে ২৯ টাকা ২০ পয়সায়। তারপর পাঁচ কার্যদিবসে কমে দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ২০ পয়সায়।
তাল্লু স্পিনিং মিলসের দর বাড়তে শুরু করে ৩ মে থেকে। সেদিন শেয়ারদর ছিল ৪ টাকা। ৬ সেপ্টেম্বর পৌঁছে ১৫ টাকা ৮০ পয়সায়। তারপর দর পতন শুরু। রোববার কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ টাকা ১০ পয়সা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য