একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও বিএনপি কাছাকাছি এসে জোটের শরিকে পরিণত হলেও সম্প্রতি দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
নানা সময় বিএনপিকে উদ্দেশ করে পত্রিকায় খোলা চিঠি ও নানা বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আসা জাফরুল্লাহ যখন নেতৃত্ব থেকে তারেক রহমানকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিতে শুরু করেন, তখন থেকেই দেশের অন্যতম বৃহৎ দলটির সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে।
গত ২৬ জুন জাফরুল্লাহ প্রথমবার তার পরামর্শটি দেয়ার পর থেকে বিএনপির বা দলটির সমর্থক কোনো সংগঠনের আয়োজনে জাফরুল্লাহকে না ডাকতে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়। এর মধ্যেও গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে তাকে আমন্ত্রণ করে বসে সংগঠনটি।
এই আয়োজনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিতিতে আবার তারেক রহমানকে সরিয়ে তার মেয়ে জাইমা রহমানকে নেতৃত্বে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন জাফরুল্লাহ।
২৬ জুনের বক্তব্যের পর জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথমে সোচ্চার হয় ছাত্রদল নেতারা। পরে এতে যোগ দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নাম উল্লেখ না করে জাফরুল্লাহর কড়া সমালোচনা করেন।
তবে মির্জা ফখরুল এবার রাখঢাক না রেখে বলে বসেন, ‘জাফরুল্লাহর বয়স হয়ে গেছে বলে উল্টাপাল্টা বকেন।’
এমন বক্তব্যের পর জাফরুল্লাহ চৌধুরী যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তা বিএনপির জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বিব্রতকর। জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুলকে ‘চাকর-বাকর’ বলে বসেন তিনি।
পরে এক অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ ক্ষমা চাইলেও তিনি তাতে যে ভাষা ব্যবহার করেন, তা বিএনপির জন্য আরও বিব্রতকর হয়। তিনি বলেন, ‘আমি চাকর-বাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি।’
কেন বিএনপির ওপর অসন্তোষ জাফরুল্লাহর
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর বিএনপিপন্থি চিকিৎসকরা জাফরুল্লাহর ফাঁসি চেয়ে পোস্টার প্রকাশ করেছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের দ্বিতীয় মেয়াদ থেকে বিএনপি ও জাফরুল্লাহ কাছাকাছি আসেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক বিস্তারের আগে একটি জাতীয় দৈনিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে এক পাতার খোলা চিঠি লেখেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এমন চিঠি পরে তিনি আবার লেখেন।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের এক বছর পূর্তির দিন ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে বেগম খালেদা জিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ ডাকার পর যখন অকার্যকর কর্মসূচি থেকে বের হয়ে আসতে পারছিলেন না, তখন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন সে সুযোগ করে দেয়। অবরোধের সময় বিএনপিকে ভোটে আনতে যারা ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদের একজন ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের আগে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বিএনপির জোটবদ্ধ হওয়ার পেছনেও ভূমিকা রাখেন জাফরুল্লাহ। তিনি নিজেও যোগ দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে। তবে নিজে ভোটে অংশ নেননি।
তবে গত বছরের শেষ মাস থেকেই দুই পক্ষে সন্দেহ-অবিশ্বাস শুরু হয়।
গত ৪ ডিসেম্বর মুক্তাঙ্গনে সরকার পতনের দাবিতে হঠাৎ অবস্থান নেয় বিএনপি ও তার জোটের শরিকদের একটি অংশ। তবে এমন কর্মসূচির কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না বিএনপির। তখন যুক্তরাজ্য থেকে তারেক রহমানের কাছ থেকে আসে জরুরি নির্দেশ। মুক্তাঙ্গন থেকে নেতা-কর্মীদের সরে যেতে বলা হয়।
এ ঘটনায় বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি। তারা সে নোটিশের জবাব দিয়েছেন। তবে বিএনপিতে আগের অবস্থান আর ফিরে পাননি।
বিএনপির ধারণা, হঠাৎ এই কর্মসূচির পেছনে ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে যে কর্মসূচি শেষ করে নেতা-কর্মীরা মুক্তাঙ্গনে অবস্থান নেন, সেখানে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতাও। তবে তিনি নিজে মুক্তাঙ্গনে যাননি।
এর আগে থেকেই জাফরুল্লাহ বিএনপিকে বারবার আন্দোলনে নামতে তাগাদা দিয়ে এসেছেন, যেমনটি এখনও বারবার বলছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য সে সময় নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন, জাফরুল্লাহর সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখতে দলের নেতা-কর্মীদের বলে দেয়া হয়েছিল।
ওই নেতা এমনও জানান, তারেক রহমানের নির্দেশ ছিল জাফরুল্লাহর কোনো পরামর্শ গ্রহণ করা যাবে না।
কেন বিএনপিকে আন্দোলনে নামাতে চান জাফরুল্লাহ?
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এই প্রশ্নে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি যা বলেছি, তা নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই। আমি তাদের পরামর্শ দিয়ে এসেছি, তাদের ভালোর জন্য বলেছি। আর সামনেও বলব।
‘আমি তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। তারা অ্যাপ্রিশিয়েট (প্রশংসা) না করলেও আমি তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী। ভালো চাইতে গেলে অনেক সময় অপ্রিয় সত্য কথাও বলতে হয়। তাতে তাদের মনে কষ্ট লাগলে আমি দুঃখ প্রকাশ করতে পারি। তবে তাদের ভালো চাই যেহেতু, এমন তেতো সত্য আমি বরাবরই বলব।’
বয়স নিয়ে তার প্রতি বিএনপির খোঁটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে এটা তো সত্য। তবে আমার তো আলজাইমার হয় নাই। আমি এখনও দূরের সব দেখতে পারি। বিএনপি না করেও বিএনপির অবস্থান বুঝতে পারি।’
জাফরুল্লাহকে প্রশ্ন করা হয়, বিএনপি তো আপনার পরামর্শ নিচ্ছে না। তাও কেন বারবার তাদের উদ্দেশ করে একই ধরনের বক্তব্য রাখছেন?
এর জবাবে বলেন, ‘সে জন্যই আমি চাকর-বাকর বলেও আবার চাকর-বাকরদের কাছেই ক্ষমা চেয়েছি। কারণ চাকর-বাকররাও বিরক্ত হয়ে একসময়ে প্রতিবাদ করতে পারে। কিন্তু এই রাজনৈতিক কর্মীরা নড়েচড়েও বসেন না। আমি আমার পরামর্শ জনগণের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে দিই। সেটা আমি দেবই।’
তারেককে কেন নেতৃত্ব ছাড়তে হবে?
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি কী এমন ভুল বলেছি? তারেক রহমান কি দেশে আছেন? হাওয়াতে বসে থেকে তিনি কী করতে পেরেছেন? তিনি তার মাকে পর্যন্ত বের করতে পারেননি। তাই আমি বলেছি, জাইমাকে দেশে এনে নতুন নেতৃত্ব বানান।’
বিএনপি নেতারা কথা বলতে চান না
জাফরুল্লাহর প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা নিউজবাংলাকে এড়িয়ে গেছেন। তারা বলেছেন, দলের মহাসচিবের প্রতিক্রিয়াই তাদের বক্তব্য।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে এগুলো তো কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য না। তাই এ নিয়ে আলাদা কোনো প্রতিক্রিয়া আসলে নেই। তবে আমাদের মহাসচিব তো দিয়েছেন প্রতিক্রিয়া। ব্যাপারটা অমনই, বয়স হয়েছে, কখন কী বলছেন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে না। আবার কেন বলছেন, তাও বোঝা যাচ্ছে না।’
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মহাসচিব যা বলার বলেছেন। ওনার বয়সটা ওনার মাথায় রাখা উচিত। ওনার এখন ঘরে বিশ্রাম নেয়ার সময়।’
বাকযুদ্ধের শুরু
বিএনপি ও জাফরুল্লাহর মধ্যকার ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ উত্তেজনায় রূপ নেয় গত ২৬ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক আলোচনায়।
বিএনপিপন্থি একটি সংগঠনের আলোচনায় সেদিন তিনি বলেন, ‘বিএনপির ওহি আসে লন্ডন থেকে। তারেক রহমানের দুই বছর চুপ করে থাকা উচিত। তার যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা উচিত।’
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রদলের এক নেতা তাকে থামিয়ে দিয়ে সতর্ক করেন, তিনি (জাফরুল্লাহ) যেন বিএনপি নেতার সমালোচনা না করেন। আর করলে যদি তার কিছু হয়ে যায়, তবে তারা দায়ী থাকবেন না।
এ ঘটনার পরে বিএনপির অঙ্গসংগঠন থেকে জাফরুল্লাহর সমালোচনা করে বিবৃতি দেয়া হয়। এমনকি স্থায়ী কমিটির এক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ও জাফরুল্লাহর সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন।
পরে জাফরুল্লাহ নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বিএনপি গোঁয়ার।’
তারপরে দীর্ঘদিন বিএনপির বা সহযোগী সংগঠনের কোনো আয়োজনে জাফরুল্লাহকে দেখা যায়নি। তবে ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের আলোচনায় মির্জা ফখরুলের উপস্থিতিতে আবারও তারেক রহমানকে বিএনপির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল সেদিন কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও ৬ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে নিজ বাসভবনে কথা বলেন জাফরুল্লাহ প্রসঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ সাহেব যে কথা বলেছেন… তার আসলে বয়স হয়ে গেছে। উনি অত্যন্ত সম্মানিত লোক, অত্যন্ত গুণী লোক, কিন্তু বয়স হয়ে গেলে মানুষ কিছু উল্টাপাল্টা কথা বলতেই পারেন। এটা স্বাভাবিকভাবে বলেছেন আরকি।
‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার (জাফরুল্লাহ) মন্তব্যটা যুক্তিসংগত না। তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, কথা বলছেন। কিন্তু তিনি একবারও ভাবছেন না, এসব কথা বললে ফ্যাসিবাদীবিরোধী আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হবে।’
এরপর জাফরুল্লাহর ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বেচারা বাড়ির চাকর-বাকরের মতো আছে। ভাবছে, চাকরি চলে যাবে৷ তার বক্তব্যে আমার হাসি পেয়েছে।’
গত শুক্রবার শহীদ মিনারে এক আয়োজনে মির্জা ফখরুলদের কাছে ক্ষমা চেয়ে জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমার সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে আমার স্নেহাস্পদ ব্যক্তিদের চাকর-বাকর হিসেবে তুলনা করায় তারা মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন। কষ্ট পেয়েছেন। আমি এসব চাকর-বাকরের কাছে ক্ষমা চাইছি।
‘এসব রাজনৈতিক কর্মীর চাকর-বাকরের গুণাবলিও নেই। তাদের না কবজিতে জোর আছে, না মাথা ঘোরানোর অধিকার আছে। চাকর-বাকর ভাইরা, আপনাদের কাছে আমি ক্ষমা চাই।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেন, অথচ বিএনপি দেশের উন্নয়ন দেখতে পায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এতটা হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বোঝা উচিত।’
শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। খবর বাসসের
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে বিএনপি নেতাদের প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি ও উচ্চতা, এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত। তখন পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে তাদের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।
বৃহস্পতিবার করাচিতে সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দেয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে তাকালে এখন তাদের লজ্জা হয়। সে সময় ‘পূর্ব পাকিস্তানকে’ দেশের বোঝা মনে করা হতো। কিন্তু তারা শিল্পায়নের প্রবৃদ্ধিতে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ-সংঘাতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সব প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া বিএনপি নেতারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এমনকি জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।’
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বোধগম্য হয় না যে আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে, জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। তাই জনগণকে হাতিয়ার করে নয়, জনকল্যাণের রাজনীতি করে জনগণের মন জয় করেই তাদেরকে ক্ষমতায় যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে তারা শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তারা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ। দলটি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধ্যগ্রন্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
‘সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি-সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত জনগণের নিরাপত্তা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নিলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালান।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।
‘সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন:পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ‘প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলাগুলোতে যেখানে হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেয়া হয়, সেখানে তিনদিনের পরিবর্তে পাঁচদিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য তারা বলেছেন। কমিশন তাতে সম্মত হয়েছে।
‘পার্বত্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা বলেছেন যে ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটা বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসনে যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন বিষয়টি নিয়ে আপিল করবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আদেশের কপি এখনও আমরা পাইনি। পেলে আপিল করা হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া হবে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।’
জাহাংগীর আলম বলেন, ‘কর্মকর্তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেননি। তারা বলেছেন- স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে তাই সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে। এজন্য তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। সহিংসতার আশঙ্কা করেননি। এ বিষয়টা গোয়েন্দা রিপোর্টে থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পার্বত্য জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’
নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব খাটানো নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কমিশনও আশ্বস্ত করেছে যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত চার ধাপে দেশের পৌনে পাঁচ শ’ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, কারণ দর্শানো নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়া নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সহ-দপ্তর সম্পাদক জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিএনপির ৬৪ জন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সল চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সহ-সভাপতি সাদেক আলী, উত্তর চট্টগ্রামের চিকনন্দী ইউনিয়নের সহকারী আহ্বায়ক রাশেদ আলী মাহমুদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতা জহুরুল আলম ও কক্সবাজার জেলা মৎস্যজীবী দলের নেতা এম হান্নান মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলায় আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে প্রথমে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’
ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করার দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনসহ আরও তিনজন ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের দিন বিষয়টি নিয়ে অনেক হট্টগোল হয়। একাধিক প্রার্থী হওয়ায় লটারির মাধ্যমে আলী হোসেন ঘোড়া প্রতীক পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য