খাদ্য চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে ফোন পেয়ে যাচাইবাছাই করে প্রতি তিনজনের একজনকে সহায়তা পাঠানো হয়েছে। যাচাইবাছাই করে বাকি দুই-তৃতীয়াংশকে বাদ দেয়া হয়েছে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে রাতে। এর উদ্দেশ্য দুটি। প্রথমত. যাচাইবাছাই, দ্বিতীয়ত. যাদের সহায়তা করা হবে, তাদের সম্মান রক্ষা।
কর্মকর্তারা বলছেন, ফোন পেয়েই খাদ্য না দিয়ে সহায়তা বিতরণের কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক নানা ধাপে আবেদনটি যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। এ কারণে অবশ্য খাবার পৌঁছাতে সময়ও লাগছে বেশ কয়েক দিন।
৩৩৩ হচ্ছে সরকারের জরুরি তথ্য ও স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ পাওয়ার কেন্দ্র। গত ২৫ এপ্রিল থেকে এই সেবাটিতে যোগ হয় করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা সরবরাহ দেয়ার প্রাথমিক নিবন্ধনের ক্ষেত্র হিসেবে।
সেদিন সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্যাকেটজাত খাবার কেনা হয়েছে।
প্রতিটি প্যাকেটে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, নুডলস, চিড়াসহ বিভিন্ন পণ্য আছে। ১০ কেজি চালসহ প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যে প্রায় ১৭ কেজি ওজনের খাদ্যসামগ্রী থাকবে, যা দিয়ে একটি পরিবারের প্রায় এক সপ্তাহ চলবে।
আরও ১০ কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী কেনা হবে। সেই খাবার দিয়ে চলা যাবে আরও এক সপ্তাহের বেশি।
সেবাটি তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের আওতায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়াধীন
অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।
কতজনকে সহায়তা
প্রকল্পটির পরিচালক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে জানান, গত ২৫ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত সারা দেশ থেকে মোট ৪৮ হাজার কল এসেছে। সব কটি কলের তথ্যই ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, এনডিআরসিসি) শাহ্ মোহাম্মদ নাছিম নিউজবাংলাকে জানান, ৭ মে পর্যন্ত সারা দেশে ১৬ হাজার ১৭৪টি পরিবারকে ৩৩৩-এর কল নিবন্ধন তথ্য যাচাইবাছাই করে জরুরি খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।
বাকিদের বাদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক-দেশে এই করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই অনেকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এটা বিশ্বজুড়েই দৃশ্যমান। কিন্তু দেশের এবং সরকারের সক্ষমতার কথাও মাথায় রাখতে হবে। সবাইকে তো সহায়তা দেয়া সম্ভব নয়।
‘যে আবেদনগুলো আসছে তা প্রযুক্তির মাধ্যমে এবং মাঠপর্যায়ে যাচাইবাছাই করেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ও অপক্ষোকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্তকে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করে নিউজবাংলাকে জানান, এটা ঠিক, কল নিবন্ধনপ্রক্রিয়ায় প্রাথমিক ক্যাটাগরি বাছাইয়ে মাসিক আয় যে ৫ হাজার টাকার কম বেশি বলা হচ্ছে, তাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা অসহায় হয়ে পড়ছে তারা এই আবেদনে যোগ্য বলে বিবেচিত না-ও হয়ে থাকতে পারে। তবে একটা উদ্যোগ শুরু হয়েছে। পরীক্ষা ক্ষেত্রে না নামলে প্রকৃত চিত্র ধরা পড়ে না।
‘আমরাও বিষয়টির খোঁজখবর রাখছি। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে, যাতে মাসিক আয়ের সিলিংটি আরও বাড়ানো হয়।’
অর্থাৎ কল করে প্রতি তিনজনের একজন পেয়েছেন খাদ্য সহায়তা। তবে মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রযুক্তি জ্ঞানের অভাব, আর হটলাইন নম্বরের অপ্রতুলতার কারণে বহু মানুষ কল করতেই পারছেন না।
‘মনে করছি পামু না, কইতে গেলে লটারির মতো কলডা দিছি’
বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের তিলক গ্রামের বাসিন্দা গৃহিণী নাসরিন আক্তারও ফোন করার দুই দিনের মধ্যেই পেয়ে গেছেন খাবার। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজে গিয়ে দিয়ে আসেন খাবার।
‘৩৩৩ তে কল দেয়ার সময় মনে করছি পামু না। কইতে গেলে লটারির মতো কলটা দিছি। কিন্তু সত্যিই যে পামু হেয়া কল্পনায়ও ভাবিনাই।’
খাবার চেয়ে মিলল বাড়ি
কাশিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বিল্ববাড়ি গ্রামের লতা আক্তারের এখন সুখের দিন।
স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। দরজির কাজ করে সংসার চলে। তবে লকডাউনের কারণে কাজ তেমন নাই। তিনি ফোন করার পর বিস্ময়ের ঘোরের মধ্যে পড়েছেন।
ইউএনও তার ছাপরাঘর দেখে বাড়ি দেয়ার কথা বলে গেছেন। দিয়ে গেছেন ফোন নম্বরও।
তার জন্য খাদ্য দিয়ে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যাদের সহায়তা করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের কথা শুনে তাকে জমিসহ ঘর দেয়ার কথা বলেছি। আমাদের সকল প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হয়েছে, ১০-১৫ দিনের মধ্যে তাদের ঘর দেয়া হবে বলে জানিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি।’
‘এই সাহায্য গরিবের লাইগ্যা না’
তবে সবার ভাগ্য নাসরিন আক্তার বা লতা আক্তারের মতো নয়।
রাজধানীর মধুবাগের বাসিন্দা কুলসুম বেগম। ছুটা বুয়ার কাজ করেন মানুষের বাসাবাড়িতে। দ্বিতীয় দফা লকডাউনের প্রথম দিকে তার ভ্যানচালক স্বামীকেও বসে থাকতে হয় ঘরে। কুলসুমেরও তিনটি কাজের দুইটিই হারাতে হয়।
আয়ে ভাটা পড়ায় কুলসুমের সংসারে দেখা দেয় খাদ্য-সংকট। তিনি যে বাসায় কাজ করতেন সেই বাসার গৃহকর্তা তাকে পরামর্শ দেন ৩৩৩-এ কল দেয়ার।
কুলসুম কল দেন সেই নম্বরে। প্রথম দফায় সংযোগ না পেয়ে একাধিকবারের চেষ্টায় হটলাইনের সংযোগ পান। সেখানে চাহিদা অনুযায়ী তিনি সব তথ্য দেন। তার রিকোয়েস্টটি রাখা হয়েছে এবং তা বিবেচনার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠিয়ে দেবেন বলে হটলাইন থেকে জানানো হয়। এরপর কেটে যায় প্রায় দেড় সপ্তাহ। তিনি কোনো খাদ্য সহায়তা পাননি।
এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘এই সাহায্য গরিবের লাইগ্যা না। হইলে তো পাইতামই। আমাগো চাইতে গরিব আর ক্যাডা?’
একই অভিজ্ঞতা কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী ইউনূস সর্দারের। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তি ডায়াবেটিসের কারণে মাস দেড়েক ধরে দোকানে বসতে পারেননি।
একই এলাকার আলমগীর হোসেন কাজ করতেন একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় টিউশনিতে মনোযোগী হন। কিন্তু যে কয়টি বাসায় টিউশনি করেন, তার বেশির ভাগই নিম্নমধ্যবিত্তের। বেতন কম। সেটিও হয় অনিয়মিত। কারও কাছে দুই মাস, কারও কাছে আরও বেশি বকেয়া। এমন পরিস্থিতিতে পরিবার নিয়ে আর্থিক সংকট তাকে দিনের খাবার সংকটেও ফেলে দেয়।
সংকটের কথা জানিয়ে তার স্ত্রী ফোন করেন ওই হটলাইনে। তিনি সংযোগ পান এবং সমস্যার কথা খুলে বলেন। হটলাইন থেকে জানানো হয়, তার আবেদনটি তারা নিবন্ধন করেছেন। এরপর কেটে গেছে ৫ দিন। আলমগীরের ঠিকানায় আসেনি কোনো সহায়তা।
‘শুধু বইলল ১ ছাপেন ২ ছাপেন, খাবার তো পাইলাম না’
বিবি হাজেরা। তিনিও মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করেন। গৃহকত্রীর নম্বর থেকে ফোন করেন। সেখান থেকে যেভাবে যত নম্বর চাপতে বলেছে, তত নম্বরই প্রেস করলেন। সর্বশেষ একজন প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বললে হাজেরা অপেক্ষায় থাকেন। ৭ মিনিট ১৯ সেকেন্ড অপেক্ষায় থাকার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইন কেটে যায়।
হাজেরা ফেনী শহরের পাঠানবাড়ি সড়কের একটি কলোনিতে ভাড়া থাকেন। তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্রম সদস্য। স্বামী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় কাজ করতে পারেন না।
হাজেরা বলেন, ‘যদি সরকার খাবার দিতে চায় তাইলে সোজাসুজি নম্বর দিলে হইত। কম্পিউটারে বলে ১ ছাপেন ২ ছাপেন। এসব তো আমরা বুঝি না। এগান মশকারি।’
জামাল উদ্দিন। ফেনী শহর থেকে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দিনমুজুরের কাজ করেন। লকডাউনের কারণে প্রতিদিন কাজ পান না।
৩৩৩ নম্বরে কল করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শুধু বইলল ১ ছাপেন ২ ছাপেন, খাবার তো পাইলাম না। এসব কথা বোগাস। বাউতাবাজি।’
একই জেলার সদর উপজেলার অলিপুর গ্রামের মিঞা। এলাকায় ছোট মিঞা নামে পরিচিত। কখনও দিনমুজুর আবার কখনও গাড়ির হেলপার। ৩৩৩ নম্বরে কল করে কিছু না বুঝে লাইন কেটে দেন।
ছোট মিঞা বলেন, ‘আন্ডা গরিব মানষ। কম্পিটারের (কম্পিউটার) এগান বুঝি না। আগের মতো বোর্ড অফিস থেকে চাইল-ডাইল দিলে আইনতে হাইত্তাম।’
কিসের ত্রাণ-ট্যান, খোঁজ এ নিল না কেউ
২৬ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের রবিউল ইসলাম নামে এক রিকশাভ্যান চালক ফোন করেন খাদ্য সহায়তার জন্য। কিন্তু একাধিকবার ফোন করে সেবাকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হন।
পরদিন বেলা ১১টার দিকে আবার কল দেন। কিছুক্ষণ পরপর কল কেটে যায়। পরে তিনি আর ফোনই করেননি।
পরে তার ক্ষোভ দেখে প্রতিবেশী এক যুবক প্রথমে তার নম্বর থেকে জরুরি সেবা নম্বর ৩৩৩-ফোন করেন তিনবার। কিন্তু সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হন। পরে চতুর্থবার সংযোগ স্থাপন হলে তিনি রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে দেন সেবাকেন্দ্রের অপারেটরের সঙ্গে।
রবিউল ইসলাম ও অপারেটরের সেই দিনের কথোপকথন তুলে ধরা হলো:
রবিউল ইসলাম: ম্যাডাম। আমার খাবারটাবার এনা কিছু নাই তো। আমি দুই দিন থাকি মনে করেন না খায়া আছি। এ রকম পরিস্থিতি।
অপারেটর: স্যার, আপনার কি ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন?
রবিউল: হ্যাঁ-হ্যাঁ।
অপারেটর: জি; আমরা ত্রাণ সহায়তার জন্য রিকোয়েস্ট রাখছি। আপনি আমাদের মাধ্যমে রিকোয়েস্ট রাখতে পারছেন। এই রিকোয়েস্টটি রাখার জন্য আপনার নামসহ তথ্য বলুন।
পরে নাম-ঠিকানা দিয়ে দেন রবিউল ইসলাম।
অপারেটর: আপনার রিকোয়েস্টটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিচ্ছি। আশা করছি, অতি দ্রুত আপনার বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
ফোন কেটে দিয়ে রবিউল ইসলাম আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন। ত্রাণ সহায়তা পাবেন ভেবে। কিন্তু না; জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা পাওয়ার কথা থাকলেও গত চার দিন অতিবাহিত হলেও রবিউলের খোঁজ বা ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়নি।
রবিউলের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা। এই বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, 'দূর! এগলে ভুয়ে। কিসের ত্রাণ-ট্যান। খোঁজ এ নিল না কেউ।'
ওই দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তার প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রি আতাউর রহমান, তার স্ত্রী আরজিনা বেগম ও এক বৃদ্ধা বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করেন ৩৩৩ি-এ। কিন্তু অনেকবার চেষ্টা করেও সেবাকেন্দ্রের এই হটলাইনে সংযোগ স্থাপন করতে পারেননি তারা।
এ নিয়ে আতাউর রহমান বলেন, 'তোমরাই কও। এগলে ফাজলামি ছাড়া কী? হামরা আছি না খায়া; আর ওমরা পুটুর পুটুর করি এটা ওটা কয়া কাটি দেয়। সরকার যে এমাঘরক (আমাদের) কিসক রাখছি।’
কী বলছে কর্তৃপক্ষ
স্থানীয় পর্যায়ের এসব সমস্যার বিষয়ে নিয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল মান্নান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হটলাইনটি যেহেতু অনেকগুলো সেবা একসঙ্গে দিয়ে থাকে, তাই নানা প্রয়োজনে মানুষ নানা প্রান্ত থেকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কল করে থাকে। সে কারণে ক্ষেত্রবিশেষে হয়তো কল প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকতে পারে।’
সেটি সাময়িক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হটলাইনে সংযোগ পাওয়ার সিস্টেম আরও আপগ্রেডের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা হবে, যাতে সবাই সহজেই সেবা পেতে পারে।’
নাম নিবন্ধন করার পরেও অনেকের সহায়তা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘প্রাথমিক ক্যাটাগরি বাছাইয়ে মাসিক আয় পাঁচ হাজার টাকার কমের সিলিংয়ের কারণে যারা অসহায় হয়ে পড়ছে তারা এই আবেদনে যোগ্য বলে বিবেচিত না-ও হয়ে থাকতে পারে। তবে আমরাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে, যাতে মাসিক আয়ের সিলিংটি আরও বাড়ানো হয়।’
আরও পড়ুন:দেশের তিন জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র এবং পাঁচ জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ এবং টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলার পাশাপাশি রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ। একই দিনে পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।
শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’
এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হয়। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন:মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য