কোরবানির জন্য সুস্থ ও উপযুক্ত পশু নির্বাচন করা জরুরি। কাজটা সহজ নয়। সাধারণ কিছু বিষয় জানা থাকলে পশু কিনতে কোনো সমস্যা হবে না।
কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে বয়স গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। গরুর ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে দুই বছর হতে হবে। গরুটির দাঁত দেখে বয়স বোঝা যায়। সুস্থ, পূর্ণবয়স্ক গরুর দাঁত দেখে ৫ বছর পর্যন্ত বয়স শনাক্ত করা যায় নিখুঁতভাবে।
দুই বছর বয়সী একটি সুস্থ গরুর দুইটি স্থায়ী কর্তন দাঁত থাকে। ৩ বছর বয়সে চারটি, ৪ বছর বয়সে ছয়টি ও ৫ বছর বয়সে পুরো মুখে সর্বমোট আটটি স্থায়ী কর্তন দাঁত থাকে। দাঁতগুলো অক্ষত এবং দেখতে সুন্দর হয়।
ছাগলের ক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে এক বছর হওয়া উচিত। উটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ বছর, ভেড়ার ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক বছর বয়স হতে হবে। তবে ছয় মাস বয়সী ভেড়া যদি বড়সড় হয়, অর্থাৎ যদি দেখতে এক বছর বয়সের মতো দেখায় তাহলে সেই ভেড়া কোরবানি করা যাবে।
দিনের আলো থাকতেই পশু কেনা ভালো। কেননা, রাতের বেলায় পশু রোগাক্রান্ত নাকি সুস্থ তা ভালোভাবে বোঝা যায় না। অন্ধকারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অসুস্থ গরু কেনার সম্ভাবনা থাকে।
পশুর মুখের সামনে কিছু খাবার ধরে দেখুন। সুস্থ পশু হলে নিজ থেকে জিভ দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকবে। অসুস্থ পশু সচরাচর খাবার খেতে চায় না।
পশুর নাকের দিকে লক্ষ করুন। সুস্থ পশুর নাকের উপরটা ভেজা ভেজা থাকে।
গর্ভবতী গরু কোরবানি দেওয়া হারাম। তাই সবার আগে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন।
সুস্থ পশুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়।
গরু কেনার ক্ষেত্রে দেশি গরু কেনা ভালো। কেননা, সীমান্ত পার হয়ে আসা বাইরের গরুগুলো দীর্ঘ পথের কারণে বেশ ক্লান্ত থাকে, অনেক সময় ছোটখাটো আঘাতপ্রাপ্তও হয়। এ ধরনের ঝিমাতে থাকা গরু সুস্থ নাকি অসুস্থ সেটা বোঝা বেশ কঠিন।
সাধারণত বড় সাইজের গরুগুলোকে ইনজেকশন বা হরমোন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় বেশি। তাই কোরবানির জন্য বড় গরু না কিনে মাঝারি ধরনের গরু কেনা নিরাপদ।
মোটা গরু মানেই সুস্থ বা ভালো গরু নয়। মোটা গরুতে চর্বি অনেক বেশি থাকে, যা খেলে পর মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আর অস্বাভাবিক মোটা গরু বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করে মোটাতাজা করা হতে পারে। তাই এ ধরণের গরু বর্জন করুন।
শরীরে অতিরিক্ত পানি জমার কারণে হরমোন দেয়া গরু বেশি মোটা দেখায়। এদের গায়ে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে সেখানে দেবে গর্ত হয়ে যায় অথবা সাথে সাথে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে না।
পশু কেনার আগে এর শরীরের কোথাও ক্ষত আছে কিনা পরীক্ষা করে নিন। শিং ভাঙা আছে কিনা, লেজ, মুখ, দাঁত, খুর এসব কিছুই পরীক্ষা করে দেখুন, কোনো খুঁত চোখে পড়ে কিনা। খুঁত থাকলে সেটা কেনা থেকে বিরত থাকুন।