বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দাম বাড়লেও ধরে রাখতে পারে না ব্যাংকের শেয়ার

  •    
  • ৪ আগস্ট, ২০২১ ১৭:৪৯

এক বছরে সূচক বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি, লেনদেন বেড়েছে চার গুণের বেশি, আর প্রতিদিনই এখন সূচক আর বাজার মূলধনের রেকর্ড হচ্ছে। এর মধ্যেও ব্যাংকের শেয়ারের দর তলানিতে থাকা নিয়ে আলোচনা চলছেই। লভ্যাংশের ইতিহাস, আগামীতে আরও ভালো লভ্যাংশের সম্ভাবনাসহ নানা ইতিবাচকতার মধ্যেও বিনিয়োগকারীরা সেভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে কথা হচ্ছে। শেয়ার প্রতি আয়, সম্পদের বিবেচনায় এই শেয়ারগুলোর সিংহভাগই অবমূল্যায়িত এ বিষয়ে কোনো সংশয় নেই বাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে।

পুঁজিবাজারে উত্থানের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম বাড়েনি এমন নয়। তবে কোম্পানিগুলো যে লভ্যাংশ দিয়েছে এবং চলতি বছর যে হারে তারা আয় করেছে, শেয়ার প্রতি যে সম্পদ মূল্য আছে, এসবের বিবেচনায় শেয়ার দর অবমূল্যায়িত বলেই মত দিয়ে থাকেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।

মাঝেমধ্যে ব্যাংকগুলোর শেয়ার দর দল বেঁধে বাড়ে, কিন্তু তা ধরে রাখা যায় না। যেসব গত ২৭ মে এক দিনে সবগুলো ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়ে যে অবস্থানে পৌঁছে, সেখান থেকে কমে লেনদেন হচ্ছে ২০টি ব্যাংকের দর। আর বেড়েছে ১০টির। একটির দর অপরিবর্তিত।

অবশ্য এই সময়ে ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ সমন্বয় হয়েছে। এবার শেয়ার দরের তুলনায় অভাবনীয় নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন বেশিরভাগ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা। সঙ্গে আবার বোনাস শেয়ারও দিয়েছে কোনো কোনো ব্যাংক।

বোনাস হিসেবে পাওয়া শেয়ারের সঙ্গে সমন্বয় করে শেয়ার দরও কমে। তবে নগদ লভ্যাংশ সমন্বয় হয় না। তার পরেও বিশেষ করে ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে দর সমন্বয় হতে দেখা যায়।

গত এক বছরে পুঁজিবাজারে উল্লম্ফনের প্রভাব কম ব্যাংক খাতে

বাজারে প্রথমে বিমা খাত, পরে বস্ত্র খাত ব্যাপকভাবে চাঙা হয়েছে। শেয়ার দর দ্বিগুণ, তিনগুণ, চার গুণ, ছয় গুণ এমনকি কোনো কোনো কোম্পানির ১০ গুণ হয়েছে এই সময়ে।

মাত্রাতিরিক্ত দর বাড়ারে পেছনে গুজব, আরও দাম বাড়বে আশায় ক্রমাগত কিনতে থাকা এসব দায়ী বলে ধারণা করা হয়। তার পরেও সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার দরই অবমূল্যায়িত ছিল বছরের পর বছর আর এই দাম বাড়াটা বিনিয়োগকারীদের জন্য তো বটেই, দেশের আর্থিক খাতের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

চাঙা বা স্থিতিশীল পুঁজিবাজার একটি দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও ২০১০ সালের মহাধসের পর এই বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি।

২০১২ সালের দিকে একবার আর ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের দিকে দ্বিতীয় বার কিছুদিন বাজারে স্থিতিশীলতা থাকলেও কিছু দুর্বল কোম্পানি আইপিওতে এসে টাকা তুলে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের শুরু পর্যন্ত আবার দেখা দেয় মন্দাভাব।

এরপর ২০২০ সালের মার্চে আসে করোনার আঘাত। শুরু হয় আতঙ্ক। শেয়ার দরে নামে আবার ধস। এর মধ্যে সাধারণ ছুটিতে বাজার বন্ধ রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

সবচেয়ে বেশি শেয়ার সংখ্যা যেসব ব্যাংকের, বিশ্লেষকদের ধারণা, এই বিপুল পরিমাণ শেয়ারের জন্যেই দাম ধরে রাখতে পারে না কোম্পানিগুলো

আর সরকারও নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আনে নতুন মুখ। নতুন রক্তে পুঁজিবাজারেও তৈরি হয় আস্থা। জুলাইয়ে পুঁজিবাজার আবার চালু হওয়ার পর বন্ধ কোম্পানিতে উৎপাদন চালুর চেষ্টা, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগসহ নানা কারণে আবার বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ছে।

এর ফল দেখা যাচ্ছে বাজার মূলধন, সূচক আর লেনদেনে। এই এক বছরে সূচক বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি, লেনদেন বেড়েছে চার গুণের বেশি, আর প্রতিদিনই এখন সূচক আর বাজার মূলধনের রেকর্ড হচ্ছে।

এর মধ্যেও ব্যাংকের শেয়ারদর নিয়ে আলোচনা চলছেই। লভ্যাংশের ইতিহাস, আগামীতে আরও ভালো লভ্যাংশের সম্ভাবনাসহ নানা ইতিবাচকতার মধ্যেও বিনিয়োগকারীরা সেভাবে আকৃষ্ট হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে কথা হচ্ছে।

এখানে একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক আছে। সেটা হলো শেয়ার দর আদৌ ব্যক্তি শ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর নির্ভর করে নাকি প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীরাই এর নিয়ন্ত্রক।

বিপুল পরিমাণ পরিশোধিত মূলধন ও কোটি কোটি শেয়ার বিভক্ত ব্যাংকের দাম যখনই কিছুটা বাড়ে, দেখা দেয় বিক্রয় চাপ। অর্থাৎ দাম বাড়লেও সেটা ধরে রাখা যাবে না, এ বিষয়ে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক-দুই বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই সংশয় থাকে। সে কারণেই অল্প মুনাফায় তারা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।

২০১০ সালের মহাধসের বহু বছর পর গত ২৭ মে ব্যাংক খাতের শেয়ারে একটি দারুণ দিন আসে। সেদিন সাতটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায়। আরও চারটির দর এই সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে কিছুটা কমেছে। আরও তিনটির দর সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি গিয়ে কিছুটা কমে।

সেদিনের পর ধারণা করা হচ্ছিল, এই খাতটি চাঙা হবে কি না। কিন্তু হয়নি।

পরদিনও লেনদেনের শুরুতেই ব্যাংকের শেয়ারের দর বাড়তে থাকে। কিন্তু দিনের শেষ ভাগে আবার কমতে থাকে। কমতে কমতে যতটুকু দাম বেড়েছিল দুই দিনে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার চেয়ে নিচে নেমে আসে। অবশ্য হাতে গোনা দুই একটি ব্যাংকের দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।

যেমন নতুন তালিকাভুক্ত এনআরবিসির দাম গত চার মাসে প্রায় চারগুণ পর্যন্ত হয়েছে। পরে অবশ্য কমেছে। আর দুই মাসে ডাচ বাংলার শেয়ার দরও ৫০ শতাংশের মতো বেড়েছে। প্রায় কাছাকাছি বা কিছুটা বেশিও বেশ বেড়েছে প্রাইম, আইএফআইসি, যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর।

কিন্তু ভালো লভ্যাংশ দেয়া এবং চলতি বছর গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি মুনাফা করা আরও অন্যান্য ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধির হার খুব একটা বেশি নয়।

মাঝেমধ্যে অবশ্য দাম বৃদ্ধির প্রবণতা তৈরি হতে দেখা গেছে, কিন্তু পরক্ষণেই ক্রয়চাপে তা স্থায়ী হয়নি।

১০০ কোটির বেশি শেয়ার আরও যেসব ব্যাংকে

মঙ্গলবারও গেছে এমন একটি দিন।

যেমন এবি ব্যাংকের শেয়ার দর ১৪ টাকা ৭০ পয়সায় উঠেও শেষ পর্যন্ত তা ক্লোজ হয় ১৪ টাকা ২০ পয়সায়।

ডাচ বাংলার শেয়ার দর ৮৭ টাকা ৭০ পয়সা উঠেও লেনদেন শেষ করে ৮৫ টাকা ৯০ পয়সায়।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর ১৬ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত উঠে দিন শেষে ৭০ পয়সা কমে ১৫ টাকা ৮০ পয়সায় শেষ হয় লেনদেন।

এনআরবিসির দর ৩০ টাকায় উঠেও দিন শেষ করে ২৯ টাকা ২০ পয়সায়।

ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর ১৪ টাকায় উঠেও তা দিন শেষ করে ১৩ টাকা ৫০ পয়সায়।

প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর ২৩ টাকা ২০ পয়সায় উঠেও দিন শেষ করে ২২ টাকা ৭০ পয়সায়।

রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা উঠেও দিন শেষ করে ৩২ টাকা ৬০ পয়সায়।

তরে বাড়তি দাম ধরে রাখতে পেরেছে আইএফআইসি ব্যাংক। ১৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত উঠে সেখান থেকে ২০ পয়সা কমে শেষ করেছে লেনদেন।

বাকি ব্যাংকগুলোর দাম বৃদ্ধির হার খুব একটা বেশি ছিল না।

২৭ মের দরের নিচে এখনও যেসব ব্যাংক

বহু বছর পর ব্যাংক খাতে ঝলমলে দিকে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর যতটা উঠেছিল, এখনও সেই পর্যায়ে উঠতে পারেনি।

যেমন এবি ব্যাংকের শেয়ার দর সেদিন উঠেছিল ১৫ টাকা ৭০ পয়সা। কিন্তু এখন তা ১৪ টাকা ২০ পয়সা।

আল আরাফাহ ব্যাংকের শেয়ার দর সেদিন ছিল ২৫ টাকা। এখন তা ২৩ টাকা।

এই ব্যাংকটি থেকে বিনিয়োগকারীরা দেড় টাকা নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন।

সেদিন ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা, এখন তা ৪৯ টাকা ৮০ পয়সা।

ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার দর সেদিন ছিল ১৬ টাকা ৭০ পয়সা, এখন তা ১৪ টাকা ৬০ পয়সা।

এক্সিম ব্যাংকের সেদিন শেয়ার দর ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা, এখন তা ১২ টাকা ১০ পয়সা।

গত তিন বছর ধরে ব্যাংকে নগদ লভ্যাংশ দেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে শেয়ার বৃদ্ধির হার কিছুটা হলেও কমছে

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সেদিন দাম ছিল ১২ টাকা ৩০ পয়সা, এখন দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা।

সেদিন ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ৩০ টাকা ১০ পয়সা, এখন দাম ২৮ টাকা ৯০ পয়সা।

সেদিন এমটিবির শেয়ার দর ছিল ২৩ টাকা ৯০ পয়সা, এখন দাম ২১ টাকা।

সেদিন এনবিএলের শেয়ার দর ছিল ৮ টাকা ৬০ পয়সা, এখন ৮ টাকা ১০ পয়সা।

সেদিন এনসিসি ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১৮ টাকা ৫০ পয়সা, এখন দাম ১৫ টাকা ৫০ পয়সা।

সেদিন এনআরবিসির শেয়ার দর ছিল ৩৬ টাকা ৩০ পয়সা, এখন দাম ২৯ টাকা ২০ পয়সা।

সেদিন ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১৪ টাকা ৩০ পয়সা, এখন দাম ১৩ টাকা ৫০ পয়সা।

সেদিন প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২৬ টাকা ১০ পয়সা, এখন দাম ২২ টাকা ৭০ পয়সা।

সেদিন পূবালী ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২৫ টাকা ৮০ পয়সা, এখন দাম ২৫ টাকা ২০ পয়সা।

সেদিন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২১ টাকা ৪০ পয়সা, এখন দাম ২০ টাকা ৭০ পয়সা।

সেদিন এসআইবিএলের শেয়ার দর ছিল ১৫ টাকা, এখন দাম ১৩ টাকা ৭০ পয়সা।

সেদিন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১০ টাকা ৪০ পয়সা, এখন দাম ৯ টাকা ৫০ পয়সা।

সেদিন ইউসিবির শেয়ার দর ছিল ১৮ টাকা ৯০ পয়সা, এখন দাম ১৬ টাকা ৫০ পয়সা।

সেদিন উত্তরা ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২৪ টাকা, এখন তা ২৪ টাকা ৮০ পয়সা।

২৭ মের তুলনায় দর বেশি যেসব ব্যাংকের

তবে বেশ কিছু ব্যাংকের শেয়ার দর এখন সেই ২৭ মের তুলনায় বেড়েছে।

যেমন, সেদিন ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার দর ছিল ১৯ টাকা ২০ পয়সা, এখন দাম ২০ টাকা।

সেদিন সিটি ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২৭ টাকা ৩০ পয়সা, এখন তা ২৭ টাকা ৯০ পয়সা।

এই সময়ে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ডাচ-বাংলার শেয়ার দর। সেদিন ব্যাংকটির দর ছিল ৬৩ টাকা। তা বেড়ে এখন হয়েছে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা।

ইবিএলের শেয়ার দর সেদিন ছিল ৩৫ টাকা ৭০ পয়সা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ৯০ পয়সা।

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর সেদিন ছিল ৪ টাকা ১০ পয়সা। বর্তমান দাম ৫ টাকা ১০ পয়সা।

সেদিন আইএফআইসির শেয়ার দর ছিল ১৩ টাকা ৬০ পয়সা। বর্তমান দর ১৪ টাকা ৬০ পয়সা।

সেদিন যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ২১ টাকা ৩০ পয়সা। বর্তমান দর ২১ টাকা ৭০ পয়সা।

সেদিন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১৪ টাকা ১০ পয়সা, এখন তা ১৫ টাকা ৮০ পয়সা।

সেদিন রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ৩১ টাকা ৪০ পয়সা, এখন তা ৩২ টাকা ৬০ পয়সা।

সেদিন সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১৭ টাকা, এখন তা ১৭ টাকা ১০ পয়সা।

সেদিন ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ৩৪ টাকা ৮০ পয়সা, এখন তা ৩৫ টাকা ২০ পয়সা।

সেদিন প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ার দর ছিল ১৪ টাকা ১০ পয়সা, এখনও একই দামে আছে।

কেন দর ধরে রাখা যায় না

ব্যাংকের শেয়ারের এই মন্থর গতির বিষয়েও বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম নিউজবাংলার সঙ্গে এক আলোচনায় বলেছিলেন, বিমা বা অন্য খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে সেসব কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা কম। বিনিয়োগকারীরা অংশ বিনিয়োগ করলেই শেয়ার দর বেড়ে যায়। কিন্ত ব্যাংকের শেয়ারের শেয়ার সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় স্বাভাবিক লেনদেনে দর বৃদ্ধির পরিমাণ নজরে আসে না।

২০২০ সালে ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ হিসেবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নগদে বিতরণ করেছে। তার পরেও ব্যাংকের শেয়ারে আগ্রহ কম

পুঁজিবাজারে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি শেয়ার আছে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩০৬ কোটি ৬৪ লাখ, যা পুঁজিবাজারের একক কোনো খাতের সব শেয়ার মিলিয়ে হবে না।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্কর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধি না পাওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে এ খাতের শেয়ারের সংখ্যা অনেক বেশি। যদি কোনো দিন ঢালাওভাবে শুধু ব্যাংকের শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয় তাতেও এ খাতের বড় কোনো উত্থান দেখা প্রায় অসম্ভব।’

তিনি বলেন, `ব্যাংকগুলো ২০১০ সালের পর বোনাস শেয়ার দিয়ে যেভাবে পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধি করেছে তার সবশেষ ফলাফল হচ্ছে এটি। যার কারণে এখন পুঁজিবাজারের সবচেয়ে মৌল বা ফান্ডামেন্টাল খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন না বিনিয়োগকারীরা।’

দেবব্রত বলেন, ‘মূলত বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ প্রদানের সময় বিনিয়োগ আগ্রহী হয়ে থাকেন। বাকি সময়টিতে ডে ট্রেডিং বেশি হয়ে থাকে ব্যাংকে। ফলে শেয়ার দর অল্প কিছু বাড়লেই বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। অন্যান্য খাতের মতো এক মাস বা দুই মাসের জন্য শেয়ার ধরে রাখলে অনেকটাই পরিবর্তন হতো ব্যাংকের শেয়ার দরের।’

যে তিনটি ব্যাংকের শেয়ার সবচেয়ে বেশি

সবচেয়ে বেশি শেয়ার সংখ্যা ন্যাশনাল ব্যাংকের, ৩০৬ কোটি ৬৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৩৯টি। এর ৫ শতাংশ হিসেবে ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ৯৩১টি শেয়ার যোগ হবে এই ব্যাংকে

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক শেয়ার আছে আইএফআইসি ব্যাংকের ১৭০ কোটি ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬১টি।

তৃতীয় সর্বোচ্চ শেয়ার সংখ্যা ইসলামী ব্যাংকের। এই ব্যাংকটি মোট ১৬০ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ৬৬৮টি শেয়ারে বিভক্ত।

শেয়ার সংখ্যা সবচেয়ে কম যেসব ব্যাংকের

শত কোটির বেশি শেয়ার আরও যেসব ব্যাংকে

এক্সিম ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪৫টি।

ব্র্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১৩৯ কোটি ২১ লাখ ৭২ হাজার ৩৯৯টি

ইউনাইটেড কমর্শিয়াল বা ইউসিবির শেয়ার সংখ্যা ১২১ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার ৯০৫টি। এর সঙ্গে ঘোষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ হিসেবে যোগ হবে ৬ কোটি ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৪৫টি।

সাউথ ইস্ট ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১১৮ কোটি ৮৯ লাখ ৪০ হাজার ৫২২টি।

ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার সংখ্যা ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬০টি।

প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১১৩ কোটি ২২ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭৭ঠি

সিটি ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৯৯৪টি।

আল আরাফাহ ইসলাম ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৬ কোটি ৪৯ লাখ ২ হাজার ১৮৫টি।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৪ কোটি ৩০ লাখ ৭০ হাজার ৭২৭টি

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ১০৩ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ২৮টি।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১০৩ কোটি ১১ লাখ ৪০ হাজার ৫৫৮টি।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১০২ কোটি ৯০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৫২টি।

পূবালী ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ১০২ কোটি ৮২ লাখ ৯৪ হাজার ২১৯টি।

শত কোটির কাছাকাছি শেয়ার যেসব ব্যাংকের

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ৯৯ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ২১১টি।

স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ৯৮ কোটি ৪৯ লাখ ৮ হাজার ৮৪৪টি। এর সঙ্গে ২০২০ সালের জন্য লভ্যাংশ হিসেবে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪২টি শেয়ার যুক্ত হবে।

ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ৯৫ কোটি ৩৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪৬৮টি।

ঢাকা ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৪ কোটি ৯৬ লাখ ২৪ হাজার ৭৫৪টি।

এনসিসি ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৪ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৮১টি। এই ব্যাংকটির সাড়ে সাত শতাংশ বোনাস হিসেবে যোগ হবে ৭ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮৬টি।

ওয়ান ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৩ কোটি ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৪৫৬টি।

তুলনামূলক কম শেয়ার যেসব ব্যাংকের

এবি ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৮৩ কোটি ৫৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭১টি।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার সংখ্যা ৮১ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬৬০টি

যমুনা ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৭৪ কোটি ৯২ লাখ ২৫ হাজার ৬৫০টি।

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক বা এনআরবিসির শেয়ার সংখ্যা ৭৩ কোটি ৭৬ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৮টি।

আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ২ হাজার ৩০০টি।

ট্রাস্ট ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৪ কোটি ৩২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭৯টি। এই শেয়ারের সঙ্গে লভ্যাংশ হিসেবে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ২৯ হাজার ৫৯৭টি শেয়ার যুক্ত হবে।

ডাচ বাংলা ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৬৩ কোটি ২৫ লাখ।

উত্তরা ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৬ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৯টি।

রূপালী ব্যাংকের মোট শেয়ার সংখ্যা ৪১ কোটি ৪১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৩৩টি। এই শেয়ারের সঙ্গে ১০ শতাংশ হিসেবে আরও ৪ কোটি ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৮৬৩টি যোগ হবে। কারণ, ব্যাংকটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই শেয়ার এখনও যোগ হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর