অভিনেত্রী পরীমনি, কথিত মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে দেখা যাচ্ছে নানা প্রতিক্রিয়া। তবে বেশির ভাগ মানুষই বিষয়টা ট্রোল হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনার বাসায় অভিযান চালালে কী পাওয়া যাবে? চলমান অভিযান প্রসঙ্গে ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে এমনসব পোস্ট। এসব পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পড়ছে রম্য রসাত্মক জবাব।
আপনার বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কী পাবে? ফলোয়ার সমৃদ্ধ ফেসবুকের কোনো একটি গ্রুপ থেকে এমন প্রশ্ন ছোড়া হলে মন্তব্য আসে শত শত; অনেক ক্ষেত্রে মন্তব্যের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।
তেমনই একজনের মন্তব্য, ‘আমার আম্মার জমানো বিপুল সংখ্যক প্লাস্টিকের বোতল, মগ ও বালতি ভাঙা, সিলভারের চেপ্টা ডেক, সরা, মাথার চুল, ছেড়া প্লাস্টিকের সেল্ডেল, আর বিপুল পরিমাণ শেম্পুর খালি বোতল, বডি স্প্রের শিশি এই জাতীয় আবর্জনা পাওয়া যাবে।’
আরেকজন লিখেছেন তার বাসায় ‘জয়কলির’ এক সেট বই পাওয়া যাবে।
চিত্রনায়িকা শাবানার বাসায় অভিযান চালালে নাকি অনেকগুলো ‘সেলাই মেশিন’ পাওয়া যাবে।
মন্তব্যের ঘরে আরেকজন লিখেছেন, ‘ও হ্যাঁ, তোশকের তলে বিপুল পরিমাণ শপিং ব্যাগ পাইবো।’
চলমান অভিযান প্রসঙ্গে ‘ডু সামথিং অ্যাকসেপশনাল (ডিএসই)’ নামে একটি গ্রুপে প্রশ্ন রাখা হয় ‘কোনো বাহিনীর অভিযান হলে ‘বিপুল পরিমাণ’ কী উদ্ধার হবে আপনার বাসা থেকে?’
একজন লিখেছেন, ‘মাথার চুল’।
শাটডাউন উঠিয়ে সরকার যে শর্তে গণপরিবহন চালুর উদ্যোগ নিয়েছে একজনের পোস্টে উঠে এসেছে সে বিষয়টিও। লিখেছেন, ‘প্রজ্ঞাপনের বাসায় রাতভর অভিযান, বিপুল পরিমাণ অর্ধেক বাস উদ্ধার।’
‘স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে গ্রুপের একটি পোস্ট এমন- ‘রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এ র্যাবের অভিযান, বিপুল পরিমাণে লাঞ্চ উদ্ধার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে টিপ্পুনি কেটে দেয়া হয়েছে এমন পোস্ট- ‘ভিসির বাড়িতে র্যাবের অভিযান, বিপুল পরিমাণের বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম উদ্ধার।’
সিটিজেন জার্নালিজমের যুগে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ট্রোল কিংবা মিমের মাধ্যমেও মানুষ তাদের চিন্তা ভাবনা তুলে ধরেন। ট্রোলের মাধ্যমে প্রকাশ পায় সমসাময়িক ও প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো।
এই যেমন চলমান অভিযান নিয়ে ট্রোলের মাধ্যমে করোনার কারণে নিজের আর্থিক দৈন্যদশা তুলে ধরে ফেসবুকে একজন লিখেছেন, “‘আমার বাসায় আর কি পাবে? করোনায় দেউলিয়া অবস্থা, বিপুল পরিমাণে ‘কিছুই নাই’ পাবে।”
আরেকজন লিখেছেন, ‘কী উদ্ধার হবে? সেটা তো বাহিনীর ইচ্ছা। আমার কী?’
এরকম মন্তব্য করা একাধিক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, উদ্ধার অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যা উদ্ধার করে দেখাচ্ছে তা অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বাসযোগ্য না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাসায় কী পাওয়া যাবে, সেটা তো তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) ঠিক করবেন। তাদের মর্জির ওপর ডিপেন্ড করে। ললিপপও পাইতে পারে, আবার এলএসডিও পাইতে পারে।’
আরেকজন বলেন, ‘অবস্থা এমন দেখতেছি যে অভিযান দিল, আর ধরে নিয়ে গেল। অপরাধ হিসেবে হয়ত বলবে, উনি একজন ব্ল্যাকমেইলার। উনার বাসায় আপেল আর কমলা পাওয়া গেছে। একটা ফ্যানও ছিল, সেটা ঘুরে। এসব অভিযান নিয়ে মানুষ হাসাহাসি করে। আবার ভয়ও পায়।’
ওই ব্যক্তি নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখালেন। পোস্টে লিখেছেন, ‘আমার বাসায় অভিযান চালানোর পর আমাকে জঙ্গি বলে চালায় দিতে পারে। কারণ আমার বাসা থেকে বিছানার আশেপাশে, উপর নিচে সব খান থেকে প্রচুর তার আর ভাঙাচোরা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস বা সার্কিট বের হবে। যাকে খুব সহজেই বোমা বানানোর সরঞ্জামাদি বলে চালানো যাবে।’