ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার মুকুলের কথপোথকন ফাঁসের অডিও রেকর্ডের ফরেনসিক করে সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রীকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ও আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এক ফেসবুক লাইভে এসে মঙ্গলবার তিনি এ আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে অডিও রেকর্ড ফাঁসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকারকে আহ্বান জানান সুমন।
সম্প্রতি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়। সেখানে তাকে অশানীল ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এর পিছনে ভর্তি বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণ উল্লেখ করা হয়।
ব্যারিস্টার সুমন ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা ছিল খুব অ্যাডভান্সড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখলাম ভিকারুননিসার মেয়েরাই সব জায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়, বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায়।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
‘আজকে আমি দেখলাম ভিকারুননিসার যিনি প্রিন্সিপাল তার একটা অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। অডিও রেকর্ড শুনে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। আমি যে বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই তা হলো, উনার যে অডিও রেকর্ড ফাঁস করা হইলো, এই ফাঁস করা কিন্তু আইনবিরুদ্ধ। মানুষের ব্যক্তিগত এমন কথাবার্তা ফাঁস হওয়া উচিত না। এটা আইনবিরুদ্ধ, সংবিধানবিরুদ্ধ।’
সুমন বলেন, ‘আরেকটা কথা হচ্ছে, আমি মনে করি যারা এই অডিও ফাঁস করেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এটা সরকারকেই করতে হবে। কারা এমন একটি অডিও ভাইরাল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ে আসছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে।
‘সরকারের এখানে আরেকটা দায়িত্ব হচ্ছে, যদি অডিওটি সঠিক হয়ে থাকে, এটা যদি প্রিন্সিপাল সাহেবের অডিও বা কথোপকথন হয়ে থাকে তাহলে আমি বলব, এখানে আইনের বিষয় না, নৈতিকতার গ্রাউন্ডে একজন শিক্ষকের যে লেভেলের কথাবার্তা বলা উচিত তা তিনি মানেননি।’
সুমন আরও বলেন, ‘এই কথাবার্তাগুলো যদি সত্য হয়ে থাকে, উনি এক জায়গায় বলেছেন, আমি পিস্তল বালিশের নিচে নিয়ে ঘুমাই। এ ছাড়া বিভিন্ন কথা বলেছেন যেগুলো আসলে উচ্চারণ করার মতো না।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক এই প্রসিকিউটর বলেন, ভিকারুননিসার যারা সফল তারা আজকে কী কথা বলছেন, এক সময় হামিদা ম্যাডাম ছিলেন, তার সময় কী ভিকারুননিসা ছিল আর আজকে কী অবস্থা।’
শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সুমন বলেন, ‘অডিওতে যে কথাবার্তা এগুলো যদি সঠিক হয়ে থাকে তবে আমি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, অডিওটির ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতে উনার ব্যক্তিগত কথোপকথন ফাঁস করার জন্য আইনের আওতায় আনতে হবে। আমার আবেদন নৈতিক গ্রাউন্ডে তিনি যেন নিজে রিজাইন করেন, যদি উনি এই কথা বলেন থাকেন।
‘আর প্রমাণ যদি হয়, তাহলে আপাতত উনাকে ভিকারুননিসা থেকে সরিয়ে দেয়াটাই ভিকারুননিসার ভবিষ্যতের জন্য, বাংলাদেশে ভিকারুননিসার যেসব স্টুডেন্টরা নেতৃত্ব দেবে তাদের জন্য ভালো হবে।’
সরকারের উদ্দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল জনপ্রিয় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘যদি অডিও সত্যি হয় তাহলে এরকম কোনো মহিলা এমন একটা স্কুল ও কলেজের প্রিন্সপাল হতে পারেন না।
‘নৈতিক গ্রাউন্ডে যদি রিজাইন করার ন্যূনতম জায়গা থাকে তাহলে যেন এই ভদ্রমহিলা রিজাইন করেন, তাহলে ভালো একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেঁচে যাবে। ভিকারুননিসার সম্মান রক্ষা পাবে।’