ভারতের কেরালায় গত বছরের জানুয়ারিতে প্রথম একজন মেডিক্যাল শিক্ষার্থীর শরীরে করোনা ধরা পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে দেশটিতে বাড়তেই থাকে সংক্রমণ। এখন ভারতে দৈনিক মৃত্যু ছাড়িয়েছে তিন হাজার। আর শনাক্ত হচ্ছে প্রায় চার লাখ রোগী।
এই মহামারিতে দেশটিতে স্বাস্থ্যসেবা ঠিক রাখতে দিন-রাত পরিশ্রম করছেন চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা। এ কাজ করতে গিয়ে তারা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে।
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বা পিপিই পরে থাকায় শারীরিকভাবে নানা সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে এই পোশাকে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা।
গুজরাটের এক তরুণ চিকিৎসক সহিল মাকওয়ানা তার টুইটারে এমন একটি ছবি শেয়ার করেছেন। ছবিতে দীর্ঘ সময় পিপিই পরার পর ঘামে ভেজা দেখা যায় তার শার্ট।
ছবিটি প্রকাশের পরপরই নেট দুনিয়ায় তা ভাইরাল হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি ১৭ হাজার বার রিটুইট করা হয়েছে।
জিএমইআরএস মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সহিল এনডিটিভিকে বলেন, ‘এটি খুবই গরম ও আর্দ্র দিন ছিল। আমি পিপিই পরে রাউন্ড শেষ করে আমার কক্ষে গিয়ে রোগীর ওষুধ লিখি।
‘আমি ভাবলাম, এ সময় একটি ছবি নিই যে, আমরা স্বাস্থ্যকর্মীরা কী কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।’
প্রথম ছবিটি সহিলের পিপিই পরা অবস্থার। দ্বিতীয়টি পিপিই ছাড়া। এতে দেখা যায়, ঘামে তার শরীর ভেজার পাশাপাশি চুল ছিঁড়ে গেছে।
তিনি টুইটে লেখেন, ‘দেশের জন্য কাজ করতে পেরে গর্বিত।’
এনডিটিভিকে সহিল স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ওপর চাপের বিষয়ে বলেন, ‘এত এত চাপ নিয়ে কাজ করতে হয় যে, আমরা এখন বাড়িতেও যেতে পারি না। বাড়ি গেলেও পরিবারের সবাইকে আক্রান্ত করার শঙ্কা থাকে। আমরা একটা যুদ্ধ করছি; আমরা পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারছি না।
‘আপনারা দেখেছেন, আমাদের এখানে কিছুই নেই। আমার মা-বাবা আহমেদাবাদে। আমি সাধারণত প্রায় প্রতি সপ্তাহে সেখানে যেতাম। এখন পারি না।’
সহিল তার কথায় নারী সহকর্মীদের অবস্থা তুলে ধরে বলেন, ‘অনেকের ছোট ছোট বাচ্চা আছে। বাচ্চাদের ছাড়াই তাদের এখানে দিনের পর দিন থাকতে হচ্ছে; এত কষ্ট করে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, নারীদের আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।
মহামারিতে সুরক্ষিত থাকতে সহিল লোকজনকে বাসায় অবস্থানের অনুরোধ জানান। সেই সঙ্গে সুযোগ হলেই টিকা নেয়ারও অনুরোধ করেন তিনি।