শুক্রবার বায়তুল মোকাররম এলাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতার পর ফেসবুক ও মেসেঞ্জার কার্যত অকার্যকর হয়ে যাওয়ার পরিস্থতি তৃতীয় দিনে এসে কাটতে শুরু করেছে।
সোমবার রাত ১১টার দিকে মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠানো যাচ্ছে। যাচ্ছে ছবিও।
শুক্রবার থেকে সামাজিক মাধ্যমে অচলাবস্থা কীভাবে এবং কার কারণে হয়েছে, সে বিষয়ে সরকার বা কোনো সংস্থার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। তবে এ কারণে মানুষের যোগাযোগ ও ব্যবসা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটেছে।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ফেসবুকে তাদের পণ্য বা আধেয়ের প্রচার চালিয়ে আসছে। এর পাশাপাশি ফেসবুককেন্দ্রিক নানা পেজে বহু পণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আর গত বছর করোনা সংক্রমণের পর থেকে শিক্ষা কার্যক্রমসহ নানাভাবে ফেসবুকের ব্যবহার হয়ে আসছে।
গত দুই দিন ধরে সবকিছুই কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবহারকারীরা বিকল্প পথে ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুক ব্যবহার করলেও এটি বৈধ নয়। পাশাপাশি নিরাপত্তার ঘাটতিও আছে।
শনিবার ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নিউজবাংলাকে জানিয়েছিলেন দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সেদিন তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের সিদ্ধান্ত না। এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করেছে। তারাই বলতে পারবেন কেন বন্ধ আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারেরই অংশ। তারা নিঃসন্দেহে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই এটা নিয়ন্ত্রণ করছে।’
মন্ত্রীর কথা ধরে ফেসবুক বন্ধ রাখার কারণ জানতে টেলিফোন করা হয় আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তাকে। কিন্তু তাদের কারও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। তবে তিনি সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, ‘এটি যান্ত্রিক ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। বিটিআরসি জানতে পারে।’
যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বিটিআরসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনও কিছু বলতে পারেননি।
ফেসবুক বন্ধের কারণ কী, এই প্রশ্নে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তা আমাদের জানা নেই। ফেসবুক বন্ধের কারণ আমাদেরও অফিশিয়াল অনেক কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা নিজেরাই খুব ঝামেলায় পড়েছি। যত তাড়াতাড়ি এই সংকটের অবসান হবে ততই আমাদের নিজেদের জন্যই লাভ। তবে আশা করছি, যে কারণেই ফেসবুক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুতই সমাধান হবে।’
আইটি বিশেষজ্ঞ সাবির আহম্মেদ সুমন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ পাই নাই। তা ছাড়া অফিশিয়ালি কোনো নির্দেশনা নাই। তবে ফেসবুকে ঝামেলা হচ্ছে, এটা আমরা সবাই লক্ষ করছি।
‘এটা দুটি কারণে হতে পারে। আমাদের সরকার থেকে ফিল্টারিং হতে পারে অথবা ওখানে কোনো মিস কনফিগারেশনের ব্যবহারের কারণে হতে পারে। এ ছাড়া আর কোনো সমস্যা খুঁজে পাচ্ছি না।’