ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করে সরকার যে আইন করতে যাচ্ছে তাকে ‘ছাত্রলীগের অর্জন’ বলে দাবি করেছেন সংগঠনের এক নেতা।
মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত জানানোর পর সরকারকে নোটিস দেয়া এক ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেছেন, মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তে গ্রহণে তাদের ভূমিকা রয়েছে।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়ে গত ৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবসহ বেশ কয়েকজনকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাৎ। এতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা বলা হয়।
নোটিস দেয়ার দুই দিনের মাথায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ধর্ষণের সাজা বাড়াতে তাদের উদ্যোগের কথা জানান। সোমবার সংশোধিত আইনে সায়ও দেয় মন্ত্রিসভা। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, সংসদে অধিবেশনে না থাকায় মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করবেন। পরে সংসদ বসলে সে অধ্যাদেশ অনুমোদন করে নেবেন তারা।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে যারপরনাই খুশি ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন শাহাদাৎ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আমরাই প্রথম আদালতে গেছি। আর কেউ যায়নি। আমরা লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়ে ছিলাম। যা সরকার গৃহীত করছে। এটা আমাদের অর্জন বলে আমি মনে করি।’
ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে আইনি নোটিস দেয়া ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন শাহাদাৎ
ফুয়াদ বলেন, ‘সবার প্রথমে আমরা এ বিষয়ে দাবি তুলেছি। এ থেকে প্রমাণিত হয় মাঠে ময়দানে ছাত্রলীগই কিন্তু কাজ করে।’
আরও পড়ুন: কেবল সাজা বৃদ্ধি নয়, দ্রুত নিষ্পত্তিতেও জোর: আইনমন্ত্রী
সাম্প্রতিক বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নাম এসেছে। সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে ধর্ষণের মামলার সব আসামি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ছিলেন। পুলিশ এরই মধ্যে সবাইকে গ্রেফতার করেছে। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা উত্তর মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতাও।
আসামিদের সবাইকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। পাশাপাশি ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নিয়েছে সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠনটিও।
আরও পড়ুন: ধর্ষক আমাদের হলেও বিচার করুন: ছাত্রলীগ
গত ৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সমাবেশে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ধর্ষণে জড়িতরা তাদের সংগঠনের হলেও তারা বিচার চান।
জয় বলেন, 'আমরা ধর্ষকদের বিচার চাচ্ছি। ধর্ষক ও নারীর প্রতি নির্যাতনকারী যে দলেরই হোক, আমাদের দাবি থাকবে এদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার।'
মৃত্যুদণ্ডের বিধান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জয়। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, এদেশে আর কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটুক, আর কোনো ধর্ষক থাকুক।’
ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক সমাবেশের ছবি।
‘ছাত্রলীগ ইতিমধ্যেই ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি পাালন করেছে। প্রথম থেকে আমরা বলেছি ধর্ষকদের কোনো দল নেই। ধর্ষক যে দলেরই হোক তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।’
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। সে সময় আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম।’