নিজেদের ‘শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ বলে উল্লেখ করায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দুই বিচারকের পদত্যাগ দাবি করে ফের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, সোমবার কালো পতাকা মিছিল ও মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে রোববার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত শোক সভায় আপিল বিভাগের দুজন বিচারকের বক্তব্য বিচারপতি হিসেবে নেয়া শপথের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সাধারণত কোনো রাজনৈতিক কর্মী যে ভাষায় তার দলীয় বক্তব্য প্রদান করেন, অনেক মাননীয় বিচারপতির বক্তব্যে তেমন একজন রাজনীতিবিদের বক্তব্যের প্রতিফলন আমরা লক্ষ্য করেছি। তাদের এই বক্তব্য কোনো বিচারেই বিচারকসুলভ নয়। যারা মানসিকভাবে নিজেদের রাজনীতিবিদ বলে বিবেচনা করেন, সেই সমস্ত মাননীয় বিচারকদের মাধ্যমে অতীতে কতটুকু ন্যায়বিচার সম্পন্ন হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়।
‘ভবিষ্যতেও তারা বিচারিক কার্য পরিচালনা করলে কী ধরনের বিচার করবেন, তা বলাই বাহুল্য। এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধান বিচারপতি মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন। আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি যেহেতু শপথভঙ্গের মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার আইনি ও নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন, তাই মাননীয় প্রধান বিচারপতির স্বউদ্যোগে তাদের বিচারিক কাজ থেকে বিরত রাখবেন।’
কায়সার কামাল বলেন, বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের রোষানলে পড়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দেশত্যাগ ও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে কথিত ‘অজানা’ অভিযোগে হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতিকে বিচারকার্য থেকে প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় বিরত রাখা হয়েছে।
গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বক্তব্যের পরই আন্দোলনের নামেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। ওই সময় তারা দুই বিচারকের পদত্যাগ দাবি করেন; অন্যথায় আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর নতুন কর্মসূচি পালন করা হবে।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কায়সার কামাল বলেন, ‘বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে নির্বাচিত কোনো কমিটির অস্তিত্ব নাই। বর্তমানে একটা এডহক কমিটি আছে। তারাও আমাদের সঙ্গে আছেন। এখন কেউ যদি বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে, সেটা হলো অবৈধ সরকার যেভাবে গণভবনে বসে আছে, জোর করে তারই ধারাবাহিকতায় বারেও তারা ডাকাতি করে বসে আছেন। তাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কোনো প্রশ্নের জবাব আমরা দিব না।’
ওই সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের এ বিষয়ে বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এটা দুঃখজনক। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, আমরা নাকি সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করছি। আমরা বলতে চাই তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা নষ্ট করেছেন। আব্দুল মতিন খসরু মারা যাওয়ার পরে ভোটারবিহীনভাবে তিনি এ সভাপতির পদ জোর জবরদস্তি করে দখল করেছিলেন। তার মুখে এসব কথা মানায় না।’