বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জয়পুরহাটে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে করলার চাষ

  • রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট   
  • ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:৫১

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার কৃষকদের কাছে করলা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ধান আর আলু প্রধান উপজেলার প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে নিজস্ব মেধা আর প্রযুক্তিতে করলা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এলাকার কয়েকশ কৃষক। ফলে ধান ও আলুর স্থান দখল করে নিয়েছে করলা চাষ। বিঘার পর বিঘা মাঠের জমিতে মাচায় ঝুলছে সবুজ করলা।

এ দৃশ্য ক্ষেতলাল উপজেলার হাটশহর, বাখরা, মুনঝাড়সহ কয়েকটি (কলিঙ্গা, ঘুগোইল, কুসুমশহর, আঁটিদাশড়া, কোনিয়াপাড়া) গ্রামের মাঠগুলোতে। এক সময় এখানকার দুই-এক জন কৃষক করলা চাষ করলেও এখন শতভাগ পরিবার কোনো না কোনোভাবে যুক্ত করলা চাষের সঙ্গে। বছরের বেশিরভাগ সময়জুড়ে মাটি, মানুষ আর প্রকৃতি কথা বলে করলা নিয়ে। মানুষ এই গ্রামগুলোকে চিনে এখন করলা গ্রাম নামে।

কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি, এছাড়া স্বল্প সময়ে এ ফসল উঠানো যায় বলে করলা চাষে দিন দিন ঝুঁকে পরছেন তারা। তা ছাড়া কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় কৃষকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে বেশি উৎপাদনের পাশাপাশি এলাকায় করলা চাষে আরও সফলতা মিলবে।

সরেজমিনে জানা যায়, অধিকাংশ কৃষক বাণিজ্যিকভাবে করলা চাষ করে বদলে গেছে তাদের ভাগ্য। এখানকার উৎপাদিত করলা যাচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে। প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকাররা আসেন এই গ্রামগুলোতে। একদিকে যেমন ফুটেছে কৃষকের মুখে হাসি। অন্যদিকে কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার কৃষকদের।

শুধু তাই নয়, জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি হয়ে থাকে। এখানকার করলা গুণগত মানে বেশ ভালো হওয়ায় অন্য জেলায় এর চাহিদা অনেকটায় বেশি। আর এ কারণে ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। এসব করলা বাজারজাত করতে স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে কয়েকটি স্থানে করলার হাট।

উপজেলার হাটশহর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে অন্য ফসলের চেয়ে করলার ফলন বেশি হয়ে থাকে। এতে সেচ খরচ যেমন কম তেমনি রোগবালাই আর পোকা-মাকড়ের আক্রমণ নেই বললেই চলে।’

উপজেলার মুনঝাড় গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এক সময় অভাবের কারণে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটলেও করলা চাষে সফলতা আসায় এখন তারা অনেকটায় স্বাবলম্বী। বীজ, জৈবসার, বালাইনাশক, করলার মাঁচাসহ সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করতে খরচ হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ফলন ভালো হলে এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ২ লাখ টাকা পর্যন্ত করলা বিক্রি করা যায়।

উপজেলার কলিঙ্গা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘করলা রোপণের ২ মাসের মধ্যে করলা তোলা শুরু হয়। টানা ৫ মাস করলা তোলা যায়। আর করলার চাহিদা সারা বছরই থাকে।

অন্য ফসলের চেয়ে করলা চাষে লাভ বেশি। আর সে কারণেই করলা চাষে ঝুঁকছি। বর্তমানে প্রতি কেজি করলা প্রকারভেদে ৫০-৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।’

ঘুগইল গ্রামের কৃষক আব্দুল কাফি বলেন, ‘প্রতি বছর ১ থেকে দেড় বিঘা জমিতে করলা চাষ করি, এ বছর ২ বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কম হলেও দামে খুশি কৃষক।’

আটি গ্রামের কৃষক সিরাজ বলেন, আমি প্রতি বছর ২ থেকে ৩ বিঘা জমিতে করলা চাষ করি কোনো সমস্যা হলে উপজেলা কৃষি অফিসে অবগত করলে কোনো প্রকার পরামর্শ না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করছেন।

কৃষকরা আরও বলছেন সরকারি প্রনোদনা সার বীজ বিতরণেও কৃষি অফিস বৈষম্য করছেন। অসংখ্য কৃষকের অভিযোগ কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এবার করলার চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় করলা চাষ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাবে।

এ বিভাগের আরো খবর