রাজধানীর শাজাহানপুরের গুলবাগে যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার কারণ জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
র্যাব ও ডিবি কার্যালয়ে রোববার সংবাদ সম্মেলন ও ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
অলিউল্লাহ হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে ডিবি আটজনকে এবং র্যাব-৩ দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
ডিবি যাদের গ্রেপ্তার করে তারা হলেন হাবিব আহসান, আলিফ হোসাইন, রবিউল সানি, মেহেদী হাসান, মো. শাহজালাল, রফিকুল ইসলাম, নুর আলম ও মো. সুমন মীর।
র্যাব গ্রেপ্তার করেছে আদনান আসিফ ও মো. শাকিলকে।
এ ঘটনায় অলিউল্লাহর স্ত্রী তানজিনা দেওয়ান বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় মামলা করেছেন।
র্যাব বলছে, পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চেষ্টা করছিলেন যুবলীগ নেতা রুবেল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে নিয়ে শাহজালাল নামের ব্যক্তির সঙ্গে তার শত্রুতার তৈরি হয়। এরপর উচিত শিক্ষা দিতে যুবলীগ নেতাকে হত্যা করা হয়।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলনে দুইজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
একই ঘটনায় দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আটজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।
যা জানাল র্যাব
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, হত্যার শিকার অলিউল্লাহ রুবেল রাজধানীর শাহজাহানপুরে সপরিবারে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। শান্তিবাগ এলাকায় ইন্টারনেট ও ডিমের পাইকারি ব্যবসা করতেন তিনি। সম্প্রতি ওই এলাকায় পানির ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চেষ্টা করছিলেন। মূলত স্থানীয় এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে শাহজালাল নামক ব্যক্তির সঙ্গে তার শত্রুতা তৈরি হয়। এর জেরে তাকে হত্যা করা হয়।
ডিবির ভাষ্য
আটজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিএমপি ডিবির প্রধান বলেন, ‘ভিকটিম রুবেলের সঙ্গে নিবিড় ও শাহজালালের এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ হয়। আধিপত্য বিস্তারের জেরে নিবিড় এবং শাহজালাল দুজন মিলে রুবেলকে মারার জন্য হাবিবকে ঠিক করে। তারই ধারাবাহিকতায় নিবিড় হাবিবকে চাপাতি কেনার ৪ হাজার টাকা দেয়। টাকা দিয়ে হাবিব খিলগাঁও বাজার থেকে দুটি চাপাতি কেনে। পরবর্তী সময়ে ঘটনার আগের দিন শাহজালাল ও হাবিব দুজনে রুবেলকে মারার পরিকল্পনা করে।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন হাবিব, আলিফ চাপাতি নিয়ে রুবেলের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। মেহেদী হাসান ও সানি দুই পাশে লোকজনের পাহারায় থাকে। রুবেল রিকশাযোগে বাসার দিকে রওনা দিলে অনন তার মোটরসাইকেল চালিয়ে হাবিবকে দিলে হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। ইতোমধ্যে রুবেলকে রিকশায় দেখেতে পেয়ে হাবিব এবং আলিফ চাপাতি নিয়ে এগিয়ে আসলে রুবেল দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে পেছন থেকে হাবিব ও আলিফ তাকে ধাওয়া করে।’
ডিএমপি ডিবির প্রধান আরও বলেন, ‘আলিফ রুবেলের মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে সে মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় হাবিব ও আলিফ চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে একসঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় চাপাতি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে যায়। পরে ভিকটিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’