রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় অস্ত্রের মুখে গরু ব্যবসায়ীদের টাকা ডাকাতি করে পালানোর সময় ধাওয়া করে সাত ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে নৌ–পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এ কল পেয়ে নৌ–পুলিশের বেশ কয়েকটি থানা ও ফাঁড়ির সম্মিলিত অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. মহসিন সরকার, মো. তাজুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান মোল্লা, মো. শাহিন বেপারী, মো. মেহেদী, মো. সিহাব ও মো. এবাদুল বেপারী।
এ সময় গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেয়া নগদ ৩৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে চারটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১১ রাউন্ড গুলি, একটি কাটার, ছয়টি ছেনি ও নয়টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান -১–এ সংস্থাটির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নৌ–পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম।
শফিকুল ইসলাম জানান, কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী আরিচা গরুর হাটে গরু বিক্রি শেষে আরিচা থেকে দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরিঘাটের সামনে আসার পরপরই স্পিডবোটে করে আসা ২০-২২ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর করে। এ সময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে থাকা গরু বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা।
খবর পেয়ে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা অভিযান শুরু করে। পাশাপাশি নৌ পুলিশের সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুম বিষয়টি ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর অঞ্চলের বিভিন্ন নৌ থানাসহ ফাঁড়িকে জানায়। নৌ পুলিশ ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ডাকাতেরা মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ডহুরীর খাল দিয়ে দীঘিরপাড় হয়ে মেঘনা নদীতে প্রবেশ করে। তখন মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ও চর আব্দুল্লাহপুর নৌ পুলিশ সম্মিলিতভাবে ডাকাতদের পিছু নেয়।
ডাকাতেরা পথ পরিবর্তন করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার বাঘাইকান্দি গ্রামের খালে ঢোকার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকলে পুলিশও ডাকাতদের লক্ষ্য করে পাল্টা ১৬টি গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে নৌ পুলিশের চতুর্মুখী হামলায় টিকতে না পেরে ডাকাত দল মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর থানার বাঘাইকান্দি গ্রামের খালের পাড়ে স্পিডবোটটি রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় গ্রামবাসী ও জেলা পুলিশের সহায়তায় সাত ডাকাতকে আটক করা হয়।
আটক ডাকাত সদস্যরা এর আগেও বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া ডাকাতিতে জড়িত বাকি ১৩ জনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
নৌ-পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছরের আগস্টে এমন এক ঘটনায় অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ অভিযানে নৌপথ অনেক নিরাপদ। অনেক দিন পর এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে।