বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নয়াপল্টনে গেলেন না? বিএনপিকে কাদের

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:৫১

‘নয়াপল্টনের অফিস… ১০ তারিখে সমাবেশ, অনুমতি পায়নি। অনুমতি পাওয়ার আগেই তারা কী করেছে? তারা সেখানে প্রস্তুতি নিয়েছে।…আজকে কী? পল্টনে গেলেন না? গেলেন না? হাফ ডিফিট হয়ে গেছে।’

অনুমতি ছাড়া সমাবেশের ঘোষণা দিলেও নয়াপল্টনে জমায়েত হতে না পেরে গোলাপবাগে সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে বিএনপির অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের দিন সাভারের রেডিও কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা বিরোধী দলটিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আজকে কী? পল্টনে গেলেন না? গেলেন না? হাফ ডিফিট হয়ে গেছে।’

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দবিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোতে ধারাবাহিক যে সমাবেশ করছে, তার শেষ কর্মসূচি হিসেবে ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে জমায়েতের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

আগের সমাবেশগুলো নির্বিঘ্নে হলেও রাজধানীর সমাবেশস্থল নিয়েই তৈরি হয় বিরোধ। বিএনপি জমায়েত হতে চেয়েছিল নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে যেতে আপত্তি জানায় দলটি।

বুধবার দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এসে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, পুলিশের কাজ পুলিশ করবে, তাদের জমায়েত হবে নয়াপল্টনেই।

এর কিছুক্ষণ পর বিএনপির কর্মীরা সড়কে অবস্থান নিতে থাকলে বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় সংঘর্ষ। প্রাণ হারান একজন। বিএনপির কার্যালয় থেকে আটক হন কয়েক শ নেতা-কর্মী, যাদের পরে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা করেন, ‘সমাবেশ নয়াপল্টনেই, বাধা দিলে ব্যবস্থা নেবে জনগণ।’

তবে রাতে বরফ গলার ইঙ্গিত মেলে। বিএনপির সমাবেশ কমলাপুর স্টেডিয়াম বা মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ- যেকোনো এক জায়গায় হবে বলে দলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু সেই রাতে গ্রেপ্তার হয়ে যান ফখরুল-আব্বাস দুইজনই। এরপর উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার দুপুরের পর ঠিক হয় সমাবেশটি হবে নয়াপল্টন থেকে কিলোমিটার পাঁচেক দূরে ঢাকার কেন্দ্রস্থলের বাইরে গোলাপবাগ মাঠে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নয়াপল্টনের অফিস… ১০ তারিখে সমাবেশ, অনুমতি পায়নি। অনুমতি পাওয়ার আগেই তারা কী করেছে? তারা সেখানে প্রস্তুতি নিয়েছে। পুলিশ পরে তল্লাশি করে সেখানে কী পেল? ১৬০ বস্তা চাল, ওই যে হান্ডি পাতিল, মশারি-বিছানা, সব নিয়ে পিকনিক পার্টি শুরু করেছে এই নয়াপল্টনকে ঘিরে।’

সাভার আওয়ামী লীগের সমাবেশে নেতা-কর্মীদের একাংশ

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের জন্য বিএনপিকেই দায়ী করেন কাদের। তার অভিযোগ, পুলিশের ওপর বিএনপিই হামলা করে সেদিন।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশ কি দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবে? পুলিশের ওপর হামলা চালাবে, পুলিশ কি দাঁড়িয়ে চুপ করে থাকবে? আত্মরক্ষা তাদেরও করতে হবে।’

সংসদের পদত্যাগের ঘোষণায় অনুতাপ করবে বিএনপি

গোলাপবাগের সমাবেশে বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্যের পদত্যাগের যে ঘোষণা এসেছে, তা দলটির ভুল সিদ্ধান্ত বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলেন। আপনারা সাতজন গেলে জাতীয় সংসদ অচল হয়ে পড়বে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এই ভুলের জন্য অনুতাপ বিএনপিকে করতে হবে।’

‘বিএনপিকে কোন ব্যবসায়ী, কোন শিল্পপতি টাকা দিচ্ছে জানি’

বিএনপির এই বিভাগীয় সমাবেশগুলোকে পিকনিকের সঙ্গেও তুলনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, যারা এই পিকনিকে টাকা দিচ্ছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

কাদের বলেন, ‘কোথা থেকে আসে টাকা, ফখরুল সাহেবদের? খবর নেয়া হচ্ছে কোথা থেকে টাকা আসে। কোন ব্যবসায়ী, কোন শিল্পপতি কত টাকা দিয়েছে, সে খবর আমরা জানি। টাকা দিয়ে পিকনিক করাচ্ছে বিএনপি।’

বিএনপির সমাবেশকে পিকনিকের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি। বলেন, ‘পিকনিক পার্টি, যাকে বলে বনভোজন। বনভোজন করছিল তারা, বিভিন্ন জেলার সমাবেশেও তারা এ কাজটি করেছে।’

‘বিএনপির লবিস্ট প্রকাশ পেয়ে গেছে’

র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পেছনে বিএনপির লবিস্ট কলকাঠি নেড়েছিলেন বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা। দাবি করেন, তার সবই এখন প্রকাশ পেয়ে গেছে।

সাভারের রেডিও কলোনি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভায় উপস্থিত নেতাদের একাংশ

তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে র‍্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে না? বেড়িয়ে গেছে ফাঁস হয়ে গেছে। ব্রিটিশ এক আইনজীবী তার নাম টবি ক্যাডম্যান। সে আল জাজিরায় বলেছে, ‘আমি লবি করেছি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যাতে বাংলাদেশে র‍্যাব আর পুলিশের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র আমার কথা শুনেছে কিন্তু যুক্তরাজ্য শোনেনি।’ এ কথা ওই টবি স্ময়ং আল জাজিরাকে বলেছে।”

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে জনসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও কামরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বাহাউদ্দিন নাছিম।

সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী এনামুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর