বুধবারের সংঘর্ষের পরও বিএনপি নয়াপল্টনেই তার বিভাগীয় সমাবেশ করতে চায়। সরকারের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য বিকল্প না এলে সেদিন সকালে জনগণ নয়াপল্টনেই যাবে বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি বাধা আসে, তাহলে জনগণই ঠিক করবে তারা কী করবে।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের জবাবে বারবার তিনি এ কথাটিই বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গত ১২ অক্টোবর থেকে বিএনপি ৯টি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে, কোনো সমাবেশে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। এখানেও হওয়ার কারণ ছিল না। যা হয়েছে, তার জন্য সরকারই দায়ী সরকারই।
এই সমাবেশের দিন দাবি আদায়ে রাজপথে অবস্থান নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, এ বিষয়ে যে প্রচার চলছে, সেটি আওয়ামী লীগের অপপ্রচার।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারদিকে দেয়াল আর নানা স্থাপনার কারণে সেটি আর বড় সমাবেশ করার উপযোগী নয় বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা।
এই সমাবেশস্থল হিসেবে বিএনপির প্রথম চাওয়া এখনও নয়াপল্টনই বলে জানান ফখরুল। বলেন, ‘আমরা তো বলছিই, নয়াপল্টনকে সমাবেশের জন্য জায়গা করে দেন। নয় তো এর দায় সম্পূর্ণভাবে সরকারের।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরাকরের দবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি বিভাগীয় শহরগুলোতে ধারাবাহিক যে সমাবেশ করছে, তার শেষ কর্মসূচি হিসেবে রাজধানীর এই জমায়েতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
আগের সমাবেশগুলো নির্বিঘ্নে হলেও রাজধানীর সমাবেশস্থল নিয়েই তৈরি হয়েছে বিরোধ। বিএনপি সেদিন জমায়েত হতে চায় নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে যেতে আপত্তি আছে দলটির।
নয়াপল্টন না পেলে আরামবাগে অনুমতি দিতে বিএনপির মৌখিক অনুরোধ মৌখিকভাবেই ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার বিএনপির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়েছে, গ্রহণযোগ্য বিকল্প স্থানের প্রস্তাব দেয়া না হলে সমাবেশ হবে নয়াপল্টনেই।
সেদিন দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি যেখানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে, সেখানেই হবে সমাবেশ। গ্রহণযোগ্য বিকল্প প্রস্তাব করতে চাইলে সেটা করতে করতে হবে আওয়ামী লীগ ও সরকারকেই। তিনি এ-ও বলেন, ‘পুলিশের কাজ পুলিশ করবে, বিএনপির কাজ বিএনপি।’
তার এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। নয়াপল্টনের সামনের সড়কে জড়ো হওয়া নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। প্রাণ হারায় একজন, পুলিশ গ্রেপ্তার করে সাড়ে চার শ ব্যক্তিকে। দলীয় কার্যালয়ে চালানো হয় অভিযান, জব্দ করা হয় চাল, ডাল, তেল, মসলা এবং রান্না করা কয়েক ডেকচি খিচুড়ি।
সংঘর্ষের পর মির্জা ফখরুল নয়াপল্টনে গিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের ফুটপাতে বসে থাকেন সাড়ে তিন ঘণ্টা। পরদিন সকালে তিনি সেখানেও যেতে পারেননি। তাকে বিজয়নগরেই আটকে দেয়া হয়।
আগের রাতেই সংবাদ সম্মেলনে আসার কথা জানানো হয়। সেখানে বিএনপি আসলে শনিবার কী করবে, সে বিষয়ে বক্তব্য আসবে বলে গণমাধ্যমের দৃষ্টি ছিল। স্থানীয় নানা গণমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরাও এতে উপস্থিত হয়ে নানা প্রশ্ন রাখেন।
নয়াপল্টন নিয়ে কী কথা
৩৮ মিনিটের এই সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ফখরুল বুধবারের সংঘর্ষের বর্ণনা দেন। এরপর নেন প্রশ্ন। একের পর এক প্রশ্ন আসলেও মূল জিজ্ঞাসা একটিই ছিল। সেটি হলো, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি আসলে কোথায় হবে।
-১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের ব্যাপারে পূর্বের অবস্থানে অটল আছেন কি না এবং নয়াপল্টনেই করবেন কি না- এমন প্রশ্ন ছিল এক গণমাধ্যমকর্মীর।
জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এক কথাই বলেছি আমরা। আমরা নয়াপল্টনের কথাই বলেছি। সরকারের কাছে আমরা এটাও বলেছি, আপনাদের যদি কোনো বিকল্প প্রস্তাব থাকে এবং সেটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে আমরা সেটা বিবেচনা করব।’
-সেটা যদি মতিঝিল বা আরামবাগ হলেও করবেন?
ফখরুল বলেন, ‘আমি তো সে স্থান বলিনি আপনাকে। যেখানেই…
-আলোচনায় আসছে.. বলতে থাকেন সেই সাংবাদিক।
প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই ফখরুল বলেন, ‘আলোচনার মধ্যে আসতে পারে। আরামবাগে যাওয়া যেতে পারে।’
অন্য এক প্রশ্নে বিএনপি নেতা বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমরা সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করে আমরা গণসমাবেশ করব। এই গণসমাবেশ যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, তার সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার দায়িত্ব সরকারের। অন্যথায় এই দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’
-নয়াপল্টন তো অবরুদ্ধ, অলিগলি বন্ধ। তাহলে সমাবেশ কোথায় হবে?
জবাব আসে, ‘আমরা সে জন্য দাবি করেছি যে অবিলম্বে সব বাধা দূর করতে হবে। সেখানে সমাবেশের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নইলে সব দায়িত্ব সরকারের।’
-বুধবারের ঘটনার পর এখন যে পরিস্থিতি, তাতে নয়াপলটনে বা আশেপাশে সমাবেশ কি করতে পারবেন?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এক শ ভাগ। কারণ, এটা আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি।’
-যদি সরকার অ্যালাউ না করে, তাহলে কী করবেন?
ফখরুল বলেন, ‘জনগণই তখন তার মতো করে ব্যবস্থা নেবে। আমরা স্পটে যাব। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে তারা কী করবে।’
-আপনারা কী করবেন পার্টি হিসেবে?
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘সব দায়িত্ব সরকারের। এটা বিরোধী দল ও জনগণের অধিকারের বিষয়।’
তখন আরেকজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, ‘পুলিশ তো বলছে রাস্তায় দাঁড়াতে দেবে না। কীভাবে প্রোগ্রাম করবেন? আপনারা বলছেন, কোনো সংঘাত চান না, সহিংসতা চান না। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করতে চান। সরকার বা পুলিশের অবস্থান তো তারা স্পষ্ট করেছে। আপনাদের অবস্থান তাহলে কী?’
জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো স্পষ্ট করেছি। আমরা আমাদের যে সমাবশ, সেটা আমরা অনুষ্ঠান করব। সে জন্য আমরা চেয়ছিলাম নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে। এখন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এই সমাবেশটাকে শান্তিপূরণভাবে পালন করতে দেবে। আমরা অবশ্যই আমাদের সমাবেশস্থলে যাব। আর জনগণ কী করবে সেটা তারা ঠিক করবে।’
শেষে অন্য একজন গণমাধ্যম কর্মী জানতে চান, ‘গতকালকের ঘটনা এবং আজকে পল্টনের যে অবস্থা, সব মিলিয়ে যদি বলতে চাই। ১০ তারিখ আপনারা যাবেন। যদি সরকার ব্যবস্থা না করে, তাতে করে কী সংঘাত তৈরি হতে পারে এবং পরে কী হবে?
ফখরুল বলেন, ‘২২ আগস্টের আগে আপনারা বলেছেন, বিএনপি কিছুই পারে না, দাঁড়াতে পারে না। ২২ আগস্টের পর ৯টি সমাবেশ হয়েছে। আপনারা নিজেরাই দেখেছেন জনগণ কীভাবে উঠে দাঁড়াছে। আমি নিজেই বিশ্বোস করি, এই দেশ বাংলাদেশ গণতন্ত্রের জন্য আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। সেই গণতন্ত্রকে লুট করে নিয়ে গেছে। জনগণ ঘুরে দাঁড়চ্ছে। নদী সাঁতরে পার হচ্ছে। ১০০ মাইল সাইকেলে চিড়া মুড়ি গুড় নিয়ে ছুটছে।
‘অপেক্ষা করুন, ঢাকায় আপনারা যা দেখবেন, নিজেরাই দেখবেন।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে ফখরুল জানিয়েছিলেন, বুধবার তাকে এবং তার দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে ফোন করে জনসভাস্থল বরাদ্দের চিঠি দিয়ে যেতে বলেছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
একজন সাংবাদিক প্রশ্নোত্তর পর্বে জানতে চান, কোন সে স্থান।
জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আমার সঙ্গে সে বিষয়ে কথা হয়নি। তিনি বলেছেন, তারা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী দলের এক আলোচনায় পাড়ায় মহল্লায় প্রস্তুত থাকার যে কথা বলেছেন, তাতে নতুন করে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কি না, এমন প্রশ্নও ছিল একজন সাংবাদিকের।
জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনারা তাদের কথা ও ইঙ্গিতে পরিষ্কার হয়ে গেছে তারা পুরোপুরিভাবে এটি সন্ত্রাসী দল। গণতন্ত্রের মূল কথা যে সহনশীলতা ও বিরোধী দলের রাজনীতিকে করতে দেয়া, সেটাতে তারা বিশ্বাস করে না। তারা যে ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে দেশ পরিচালনা করছে, সেটাই স্পষ্ট হয়।
‘তারা ১০ ডিসেম্বরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নষ্ট করতে চায়।...সন্ত্রাস ও দর্নীতি আওয়ামী লীগের মজ্জাগত। সন্ত্রাস না করে রাজনীতি করতে পারে না, দুর্নীতি না করলে দেশ চালাতে পারে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সংবাদ সম্মেলনের একেবারে শেষ দিকে মাইক নিয়ে বলেন, ‘আমদের তো মহাসচিব বলেছেন, ১২ অক্টোব থেকে ৯টি কর্মসূচি করেছি। আওয়ামী লীগও তো এ সময় অনেকগুলো সমাবেশ করেছে, ঢাকার ভেতর করেছে, ঢাকার বাইরে করেছে। তারা যে সমাবেশগুলো করেছে, তার স্থান কে নির্ধারণ করেছে, সেটা কি আওয়ামী লীগ নির্ধারণ করেছ নাকি বিএনপি নির্ধারণ করেছে নাকি পুলিশ নির্ধারণ করেছে। আমাদের সমাবেশের স্থান আমরা নির্ধারণ করব। পুলিশ নির্ধারণ করবে কেন?’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আপত্তি কেন?
এই প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘সমস্যা অনেকগুলো। সেখানে এখন বড় সমস্যা করার উপযোগীই না, এত বেশি স্থাপনা করা হয়েছে সেখানে।
‘দুই নম্বর, ওখানে চার দিকে দেয়াল ঘেরা। যদি কোনো ধরনের গোলযোগ হয়, স্ট্যাম্পিড (পদদলিত) হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
‘আবার সেখানে আওয়ামী লীগের পরপর মিটিং হওয়াতে সেখানে বিশাল স্টেজের স্ট্রাকচার করা আছে। সেখানেই সমাবেশ করতে বলা হয়েছে। তার মানে সেখানে চক্রান্তমূলক ঘটনা কিছু একটা আছে। যে কারণে তারা সেখানে জনসভা করতে দিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব এও জানান, সোহরাওয়ারার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেয়ার আগে তাদের সঙ্গে আলোচনা না করায় তারা ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠি দেয়ার পর কোনো আলোচনা না করেই কিন্তু আমাদের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর আগে কিন্তু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
প্রবাসে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি কর্মীদের ভোগান্তি নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরই অসংখ্য স্বপ্ন ঝরে পড়ে শুধু সময়মতো বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে। তবে বর্তমানে ঘরে বসেই কোনো প্রকার ভ্রমণ ও বাড়তি খরচ ছাড়া স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রবাসীরা নিতে পারবেন এই বহির্গমন ছাড়পত্র।
২০২৩ সাল থেকে এমন সেবাই দিয়ে আসছে বিশ্বের একমাত্র ওয়ান স্টপ অভিবাসন সেবা প্রদানকারী অ্যাপ ‘আমি প্রবাসী’। চলুন জেনে নিই, কীভাবে বিএমইটি বহির্গমন ছাড়পত্রের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন ঘরে বসেই।
ক্লিয়ারেন্সের আবেদন করার জন্য প্রথমে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন ও প্রাক বহির্গমন ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) কোর্স সম্পন্ন করতে হবে আগ্রহী প্রার্থীকে। এরপর তিনি ‘আমি প্রবাসী অ্যাপ থেকে সরাসরি বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর রিক্রুটিং এজেন্সির (RA) মাধ্যমে আবেদন করলে তারা নিজস্ব পোর্টাল থেকে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে।
বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর, প্রাক বহির্গমন সার্টিফিকেট বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্ট, ভিসা, ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে করা চুক্তিপত্র, নারীদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট দেশে গমনের ক্ষেত্রে স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতিপত্র (স্ট্যাম্প পেপারে), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র, ওয়ান স্টপ ফরম (শুধু ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী প্রার্থীদের জন্য), মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট, নির্দিষ্ট কিছু দেশের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত কিছু নথিপত্র এবং চাকরির চুক্তিপত্র (শুধু রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য প্রযোজ্য) জমা দিতে হবে।
ঘরে বসে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলে প্রথমেই প্রার্থীদের আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা দিতে হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে ইন্টারভিউর জন্য বিএমইটি অফিসে উপস্থিত হতে হয়। আবেদন জমা দেওয়ার পর এটি বিএমইটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পর্যায়ক্রমে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
ওয়ান স্টপ সেবা গ্রহণকারী বা নিজ উদ্যোগে আবেদন করা প্রার্থীদের আবেদন চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে সরকারি ফি ও আবেদন চার্জ পরিশোধ করতে হয় তাদের। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যক্তি কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সি উভয়েই বিএমইটি স্মার্ট বহির্গমন ছাড়পত্র কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
আরও পড়ুন:এখন থেকে ঢাকায় অবস্থিত হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনালাপে টনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ‘এখন থেকে অস্ট্রেলিয়া ঢাকায় অবস্থিত তাদের হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রসেস করবে। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এই তথ্য জানান।
‘এ সময় তিনি উপদেষ্টা পরিষদকে জানান যে, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্কের বাংলাদেশ সফরের সময় তার কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন। এর আগে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা নয়াদিল্লি থেকে প্রসেস করত।’
এবারের ঈদুল ফিতরে টানা ৯ দিন ছুটি পাবেন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
আগেই টানা পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিল এক দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বৃহস্পতিবার এক দিন ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।
আগামী ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর হতে পারে। সম্ভাব্য এ তারিখ ধরে আগেই পাঁচ দিনের ছুটির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সে হিসাবে কাগজপত্রে ২৯ মার্চ শুরু হচ্ছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। কিন্তু নির্ধারিত ছুটি শুরুর আগের দিন ২৮ মার্চ সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। একই সঙ্গে একই দিন পবিত্র শবে কদরেরও ছুটি। ফলে বাস্তবে ছুটি শুরু হচ্ছে ২৮ মার্চ থেকে।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, ছুটি শেষে অফিস খোলার কথা ছিল ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার। এর পরের দুই দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার। এখন ৩ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি হওয়ায় ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি পাবেন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এ ছুটি শুরুর দুই দিন আগে আছে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ছুটি। পরের দিন বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ এক দিন অফিস খোলা থাকবে। ফলে ছুটির সুযোগ আরও বেশি থাকছে।
এদিকে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, এবারের ঈদে সংবাদমাধ্যমগুলোতে তিন দিন ছুটি থাকবে। তবে রোজা যদি ৩০টি হয়, তাহলে এক দিন বেশি চার দিন ছুটি হবে।
আরও পড়ুন:বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
খালাস পাওয়া অন্যরা হলেন তারেক রহমানের তৎকালীন এপিএস মিয়া নুর উদ্দিন অপু, কাজী সালিমুল হক কামাল, আহমেদ আকবর সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সাদাত সোবহান ও আবু সুফিয়ান।
ঢাকার বিশেষ জজ-৩ আদালতের বিচারক বৃহস্পতিবার মো. আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন ও আমিনুল গনি টিটু বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাব্বির হত্যা মামলার আসামি সাফিয়াত সোবহান সানভীরকে দায়মুক্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২১ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করা হয়।
মামলাটিতে ২০০৮ সালের ২৪ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদক। পরে ওই বছর ১৪ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাব্বির হত্যা মামলার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর ও শাহ আলমের মধ্যে বাবরের বেইলি রোডের সরকারি বাসায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শাহ আলমের কাছে ১০০ কোটি টাকা দাবি করেন তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবর। ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে এ হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারেক ও বাবরের সঙ্গে শাহ আলমের চুক্তি হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চুক্তি অনুসারে শাহ আলমের কাছ থেকে বাবর ২১ কোটি টাকা নেন। এ টাকার মধ্যে বাবরের নির্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক আবু সুফিয়ান ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট হাওয়া ভবনে ১ কোটি টাকা তারেকের ব্যক্তিগত সহকারী অপুকে বুঝিয়ে দেন। বাবর ৫ কোটি টাকা আবু সুফিয়ানের মাধ্যমে নগদ গ্রহণ করে কাজী সালিমুল হক কামালের কাছে জমা রাখেন। বাকি ১৫ কোটি টাকা বাবরের নির্দেশে আবু সুফিয়ান প্রাইম ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় সালিমুল হক কামালকে ২০টি চেকের মাধ্যমে দেন।
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ছয় দফা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাকে অপসারণ করেছেন।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা ছয় মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খিজির হায়াতকে বিচারক পদ থেকে ১৮ মার্চ তারিখে অপসারণ করেছেন।
১৯৬৭ সালের ২৪ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া খিজির হায়াত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট ঢাকা জেলা জজ কোর্টে এবং ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
২০১৮ সালের ৩১ মে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান খিজির হায়াত খান। এর দুই বছর পর স্থায়ী হন তিনি।
দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্টের দোসর বিচারকদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে প্রাথমিকভাবে হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতিকে ২০ অক্টোবর থেকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়।
ওই ১২ বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি খিজির হায়াতও ছিলেন। বিচারপতি খিজির হায়াত ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এর আগে গত ১৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন ও কী ধরনের সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবস্থার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার আজকের মূল নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা, পুলিশের জন্য নতুন ৩৬৪টি পিকআপ ও ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়া, পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পের ৭০ শতাংশের নিচে সম্পাদিত হওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড় করা, ভাড়াকৃত ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় করা এবং পুলিশের এসআই ও এএসআই পদবির কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেল কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের বিষয়টি বিবেচনা করা।
কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে জেলা পুলিশকে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও তিনি নিম্ন কর্মদক্ষতার ইউনিটগুলোর কর্মক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য