দিনাজপুরের সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কিশোর মিনার হোসেনের (বাবু) মরদেহ ২ দিন পরও ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মরদেহ হস্তান্তরের ব্যাপারে বিজিবি-বিএসএফ কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা।
গত বুধবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তের ৩১৫ নম্বর মেইন পিলারের কাছে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ১৬ বছরের মিনার।
এ বিষয়ে ২৯ বিজিবির অধিনায়ক আলমগীর কবিরকে ফোন দেয়া হলে তিনি ধরেননি। মেসেজ পাঠালেও সাড়া মেলেনি। তবে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর নাগাদ মরদেহ হস্তান্তর করা হতে পারে।
ঘটনার দিন বিজিবির সুবেদার আক্তার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘মরদেহ ফেরত আনতে বিএসএফকে আমরা চিঠি দিয়েছি। বিএসএফ জবাব দিয়েছে। পতাকা বৈঠক শুরু হচ্ছে।’
আস্করপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন নিউজবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেলে বিজিবির খানপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে গিয়েছিলেন আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক, ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন, নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম, নিহতের চাচাতো ভাই রুবেল হাসানসহ কয়েকজন। সেখানে তারা নিহত মিনারের ছবি, শরীরের জন্মদাগের চিহ্নসহ কিছু প্রমাণ বিজিবিকে দেয়। মরদেহ শনাক্তে বিএসএফ এসব তথ্য চেয়েছে বলে জানান রুমানা।
তিনি বলেন, ‘ছবিসহ যাবতীয় তথ্য ই-মেইলের মাধ্যমে বিএসএফর কাছে পাঠাবে বিজিবি। এরপর বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হবে কখন কোথায় নিহতের মরদেহ বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এদিকে ছেলের শোকে পাগলপ্রায় মিনারের মা মিনারা পারভীন। ক্ষোভ প্রকাশ করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছেলের মরদেহ এখনও ফেরত দেয়া হয়নি। আমার বুক খালি করা হয়েছে। এই গুলির অর্ডার কে দিয়েছে? এই বর্ডার দিয়ে কেন ভারতের মাল পার হয়। ওদের মাল কেন বাংলাদেশে আসে? আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলা হলো, আমার বুক খালি করা হলো। আমি এর বিচার চাই। আমার বুকের ধনকে ফেরত দেয়া হোক।’
ছেলের দেহ ফেরত চেয়ে বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই, আমি ছেলের মরদেহ ফেরত চাই। তাকে তো ভালোভাবে মাটি দিতে হবে। কিন্তু তারা তো আমার ছেলের লাশ ফেরতই দেয়নি।’