আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জালের মামলায় দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
দিনাজপুরের জ্যেষ্ঠ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক ইসমাইল হোসেন রোববার দুপুরে এ আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো ব্যক্তি হলেন দিনাজপুর সদরের ভাইস চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম সোহাগ।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর আদালত পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন।
- আরও পড়ুন: ভোটে জিতলেন কাদেরের সই জালের আসামি
তিনি বলেন, ‘আজ (রোববার) দুপুরে ভাইস চেয়ারম্যান সোহাগ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
সোহাগের বিরুদ্ধে গত বছরের ১০ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী। এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন সোহাগ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাবেক কর্মচারী ও ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম সোহাগ ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ৫২ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার রায় পান ১৫ হাজার ১৬৯ ভোট।
- আরও পড়ুন: কাদেরের স্বাক্ষর ‘জাল’: দিনাজপুরে মামলা
গত বছর নিজেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর করা একটি অনুমতিপত্র নিয়ে ৭ অক্টোবর দিনাজপুর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সোহাগ। বিষয়টি নজরে আসলে ১০ অক্টোবর সকালে কোতোয়ালি থানায় সোহাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী। পরে রাতে মামলা করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কাদেরের স্বাক্ষর জাল করে নিজেকে দিনাজপুর জেলা কমিটির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক দাবি করেন সোহাগ। ৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের সামনে ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত সিলযুক্ত কাগজ প্রদর্শন করেন তিনি।
মামলার বাদী আজিজুল ইমাম জানান, স্বাক্ষরের বিষয় নিশ্চিত হতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করেন। কাদের তাকে বলেন, ‘আমি জেলা আওয়ামী লীগের সুপারিশ বা মতামত ছাড়া কাউকে অন্তর্ভুক্ত করার গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে পারি না এবং এ ধরনের স্বাক্ষরিত কাগজ প্রদান করিনি। যদি সোহাগ এ ধরনের কাগজ প্রদর্শন করে তবে ওই কাগজ সম্পূর্ণ জাল বলে গণ্য হবে।’
ফিজারের বরাত দিয়ে আজিজুল আরও বলেন, রবিউল ইসলাম সোহাগ নামে কাউকে চেনেন না বলেও জানান কাদের। এ ধরনের ভুয়া সিল-স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ প্রদর্শন হয়ে থাকলে থানায় মামলার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।