মিথ্যা-অসত্য দিয়ে বেশি দিন টেকা যায় না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এখন শেখ হাসিনাকে ফেয়ারওয়েল দেয়ার সময় এসে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকার অল্প কিছুদিনের মধ্যে ফেয়ারওয়েল (বিদায়) হয়ে যাবে জনগণের কাছ থেকে। চিরন্তন ফেয়ারওয়েল হয়ে যাবে।’
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মানব সেবা সংঘের আয়োজনে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও বহুদলীয় গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এখন যারা ক্ষমতায় আছে, তারা এক দানবীয় পন্থায় ক্ষমতায় রয়েছে। নানা হুমকি দিয়ে, নানা কালাকানুন তৈরি করে, মিডিয়াকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। আবার অপর দিকে নিজেদের কিছু মিডিয়া দিয়ে অনর্গল মিথ্যা বলে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখতে আপনি প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছেন। বিদেশি একজন মানুষ সিলেটে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে চাকরি করে যাচ্ছেন। তিনি কি দেশের নাগরিক? অথচ একটি উচ্চ পদে তিনি চাকরি করে যাচ্ছেন। তাহলে এ দেশের সার্বভৌমত্ব কোথায়?
‘দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ে গেছেন। আজ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই আমার দেশের মাটি, দেশের সার্বভৌমত্ব বিপদের মুখে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘হিটলার, মুসোলিনি ফ্যাসিস্ট হলেও তাদের মধ্যে দেশপ্রেম ছিল। তারা তাদের দেশকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছে। তারা তাদের নিজের দেশকে ছোট করতে দেয়নি। তারা চেয়েছে পৃথিবীর অন্য দেশের চেয়ে তাদের দেশ শক্তিশালী থাকুক।
‘আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী হিটলারের, মুসোলিনির অপশিক্ষাগুলো নিয়ে কীভাবে বিরোধীদের দমন করা যায় তাই করছেন। দেশকে শক্তিশালী করার কোনো কিছু তিনি করেননি। বরং নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অন্য দেশকে যা কিছু দেয়া যায় তিনি তাই দিচ্ছেন।’
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বলেন, ‘এই প্রধানমন্ত্রীর দেশের জনগণের প্রতি কোনো দয়ামায়া আছে? কোনো কমিটমেন্ট আছে? কোনো কিছুই নাই। বাংলাদেশ থেকে তার লোকজন টাকা-পয়সা নিয়ে যাবে এতে তার কিছু যায়-আসে না। মালয়েশিয়ার অর্ধেক কিনে নেবে, কানাডায় বেগম পাড়া বানাবে। এতে তার কিছু যায়-আসে না। কারণ, তার লোকই তো ভালো থাকবে।
‘অতএব যত পারো বাংলাদেশ থেকে লুট করে নাও। এই লুট করতে যা করা লাগে তাই করো। আর যদি বিএনপি কিছু বলে তাহলে তার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তো আছেই।’
রিজভী বলেন, ‘এখন একটাই মাত্র পথ, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় দে রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপির পল্লি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সহসভাপতি পার্থদেব মণ্ডল ও ওমর ফারুক কাউসার।