ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ ও অন্য শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে শিক্ষকরা বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের বাইরে, অনলাইনে বা কোনো ধরনের অনুষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অংশ নিতে পারবেন না।
অনুমতি ছাড়া কেউ বাইরের কোনো ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে ওই নির্দেশনায়।
সোমবারের দেয়া নির্দেশনাটি নিয়ে এরই মধ্যে বিশ্বভারতীতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, নির্দেশিকা জারি করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।
সংগীত ভবনের অধ্যক্ষ স্বপন ঘোষের সই করা একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, সংগীত ভবনের অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তারা যেন বিশ্বভারতীর বাইরে কোনো সংস্থা, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান থেকে ডাক পেলে অনুষ্ঠানে অংশ না নেন। এমনকি অনলাইনের অনুষ্ঠান করতেও না করা হয়েছে নির্দেশিকায়।
এমন নির্দেশনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের সংগঠন বিভিইউএফএ।
তাদের মতে, ‘এই ধরনের নির্দেশনা শিক্ষকদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।
‘কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো অধ্যাপক কিছু বললে তাকে বাইরে অনুষ্ঠান করতে দেয়া হবে না। শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করতে এই কৌশল নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।’
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গেছে, সুশান্ত দত্তগুপ্ত উপাচার্য থাকার সময় সংগীত ভবনের শিক্ষকদের অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক ওঠে। তারপর এ রকম একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।
বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অনির্বাণ সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে চাননি।
গত বছর থেকে মহামারির কারণে বিশ্বভারতীর প্রত্যক্ষ ক্লাস বন্ধ রয়েছে। এখন সংগীত ভবনের অধ্যাপকদের অনলাইন অনুষ্ঠানও বন্ধ হয়ে গেল।
দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পান। এই নির্দেশনায় সেটিও বন্ধ হয়ে গেল।
রবীন্দ্রভাবনা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে বিশ্বের দরবারে বছরের পর বছর তুলে ধরেছে সংগীত ভবন, কলাভবন।
রবীন্দ্রনাথের সময় থেকেই এখানকার অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে চলেছেন এই গুরুদায়িত্ব।
শুধুমাত্র রবীন্দ্রসংগীত নয়, শাস্ত্রীয় সংগীত, বিভিন্ন যন্ত্রসংগীতের চর্চায় সারা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের অন্যতম এই সংগীত ভবন।
ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে বসেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অধ্যাপকদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যেসব সুযোগ পেতেন, সেটিও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে মত শিক্ষার্থীদের।