বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক গুরুতর অসুস্থ

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২১ ২০:১৪

‘বাবার তেমন কোনো উন্নতি নেই। বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স ওনার মূল সমস্যা। এ ছাড়া হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস আছে। পড়ে গিয়ে কোমরেও আঘাত পেয়েছেন।’

উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক গুরুতর অসুস্থ। তার ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ইমতিয়াজ হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে ইমতিয়াজ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বাবার তেমন কোনো উন্নতি নেই। বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স ওনার মূল সমস্যা। এ ছাড়া হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস আছে। পড়ে গিয়ে কোমরেও আঘাত পেয়েছেন।’

সোমবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাবাকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন ইমতিয়াজ হাসান। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আব্বা বয়সের ভারে শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন অনেকটা, মনটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে একটু। আড়ালেও কি চলে যাচ্ছেন ধীরে ধীরে? গত এক মাস যাবৎ তিনি ভীষণ অসুস্থ, ছোট একটি শিশুর মতোই আমাদের ওনার পরিচর্যা করতে হয়। পরিবারের মানুষ আর গুটিকয়েক শুভানুধ্যায়ী ছাড়া আর কেউ সে কথা জানেন না। অনেকেই হয়তো মন চাইলেও তার খবর নিতে পারেননি বা যোগাযোগ করতে পারছেন না। সে জন্যই এটুকু লেখা। আপনাদের দোয়ায়, প্রার্থনায় তাকে রাখবেন।’

এই পোস্টে ইমতিয়াজ হাসান আরও বলেন, ‘আব্বাকে নিয়ে কখনো কিছু লেখা হয়ে ওঠে না। বাকি দুনিয়ার কাছে যে রূপেই পরিচিত হোন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমার জন্য নিরন্তর বিস্ময় সৃষ্টি করে চলেছেন আমার বাবা।

‘গল্পকার হিসেবেই সবাই চেনেন হাসান আজিজুল হককে। ২০০৬ সালে তার বহুপ্রার্থিত উপন্যাস ‘আগুনপাখি’ শেষ করে আত্মজীবনীতে হাত দিলেন। ধরে নিয়েছিলাম, আব্বার হাতে আর নতুন কোনো তাস নেই! কিন্তু আশি পেরোনোর পরেও কলম থেকে নতুন নতুন কাজ বের করে আমায় অবাক করেছেন। লিখেছেন অনুবাদগ্রন্থ (আর্নেস্টহেমিংওয়ে: কিলিমানজারোর বরফপুঞ্জ ও অন্যান্য গল্প), ভ্রমণবৃত্তান্ত (লন্ডনের ডায়েরি) আর কবিতার বই (সুগন্ধি সমুদ্র পার হয়ে)।’

তিনি লেখেন, ‘মাঝে মাঝে সে প্রমাণ পাই যখন ভাড়া মেটানোর সময় বৃদ্ধ অটোচালক হঠাৎ তার কুশল জানতে চেয়ে চমকে দেন অথবা শহরের রাস্তায় অচেনা কেউ এগিয়ে এসে তার কথা জানতে চান। আম্মা মারা যাওয়ার পর থেকেই সবার মাঝে থেকেও আব্বা বড় একা, তাকে আরো একা করে দিয়েছে কোভিড-১৯ অতিমারি। কোভিডের মরণকামড় এড়িয়ে অন্যান্য বার্ধক্যজনিত সমস্যা সামাল দেয়া কতটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা ভুক্তভোগীরা জানেন।’

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ডা. মোজাম্মেল হোসেন সাজ্জাদ বকুল বলেন, ‘মৌলি, স্যার আড্ডা মিস করায় আরও দ্রুত যেন বুড়িয়ে গেলেন। আশি পেরোনোর পরেও যে প্রাণবন্ত ভাব ছিল, করোনার কারণে সেই প্রাণবন্ত ভাব অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন। স্যার সুস্থ হয়ে উঠুন। করোনা বিদায় নিক। আবার জমিয়ে আড্ডা হবে স্যারের সাথে।’

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ বছর শিক্ষকতা করেছেন। ২০০৪ সালে অবসর নেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন শিক্ষকদের আবাসন এলাকা ‘বিহাস’-এ নিজ বাড়িতেই বসবাস করছেন এই গুণী লেখক।

এ বিভাগের আরো খবর