জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে অনেক দর্শনের সমাহার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান।
কবির ১২২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে উপাচার্য নজরুলের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, সারা দেশে করোনাভাইরাস মহামারিজনিত দুঃসময়ে জাতীয় কবি নজরুলের মানবিক চেতনা তুলে ধরা সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ‘কবির এই গুণাবলির বিকাশ যদি ঘটানো যায়, তাহলে যেকোনো দুঃসময়কে মোকাবিলা করার জন্য যে অদম্য সাহস এবং ধৈর্য আমাদের প্রয়োজন, সেটি আমরা অর্জন করতে পারব।’
উপাচার্য বলেন, ‘জাতীয় কবির স্বতন্ত্র কিছু মূল্যবোধ আছে। তিনি জীবনে বহুমাত্রিক দর্শনের সমাহার ঘটিয়েছিলেন। সাম্যের কবি, কখনো অসাম্প্রদায়িক কবি, মানবতার কবি, ভালোবাসার কবিসহ নানা দর্শনের সম্মিলন তিনি তার মাঝে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছেন।
‘একটি অসাম্প্রদায়িক…মূল্যবোধও তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। এই মুহূর্তে তার এসব মূল্যবোধ পরিচর্যা করা সময়ের দাবি।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি যোদ্ধারা কবির গান ও কবিতা থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করেছেন উল্লেখ করে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বে যখন নানাবিধ অমানবিক, অসাম্য ধারণার প্রতিফলন দেখি তখন আমরা সে প্রাসঙ্গিকতা অনুভব করি। রোহিঙ্গা এবং ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর মতো মানবশ্রেণি যখন বিভিন্নভাবে নিষ্পেষিত হয়, নির্যাতিত হয়ে বৈষম্যের শিকার হয়, তখন কবি নজরুলের সেই মানবিক মূল্যবোধের মানবতাবাদী গান এবং কবিতা, সাম্য বা প্রেম খুবই অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ফলে নজরুলের সেই চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো এবং সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া এখন সময়ের দাবি।’
এর আগে জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপি, ন্যাপ, বাসদ, ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।