বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়েছে একাডেমির নজরুল মঞ্চে।
হাবীবুল্লাহ সিরাজীর মরদেহ মঙ্গলবার সকালে একাডেমি প্রাঙ্গণে আনা হয়। সেখানে সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়।
এরপর ১০টায় সেখানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পরিচালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক হাসান কবীর।
বাংলা একাডেমিতে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
তিনি বলেন, ‘আজ বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক চলে গেলেন। এর আগে একাডেমির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেক বরেণ্য ব্যক্তি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। এর মাধ্যমে বিশাল একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।
‘আমি প্রয়াত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রীর শ্রদ্ধা শেষে কবিতা পরিষদের পক্ষ থেকে মরদেহে ফুল নিবেদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সামাদ, এরপর ফুল দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তার আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
একাডেমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তার মরদেহ এখন নিয়ে যাওয়া হবে আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর সেখানেই দাফন করা হবে।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।
সিরাজী অসুস্থ হয়ে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৫ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে তিনি হাসপাতালটিতে ভর্তি হন। তার পাকস্থলীতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন।
২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
প্রকৌশলী নন, কবি হিসেবে তিনি সমধিক পরিচিত। কবির উল্লেখযোগ্য বই হলো— কবিরাজ বিল্ডিংয়ের ছাদ, স্বপ্নহীনতার পক্ষে, সিংহদরজা, ছিন্নভিন্ন অপরাহ্ন, সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না, সুগন্ধ ময়ূর লো, নির্বাচিত কবিতা, একা ও করুণা, মিশ্রমিল, বি ডি মিস্ত্রি ফেসবুক, সুবাসিত রক্তের গম্বুজ, শ্রেষ্ঠ কবিতা, কবিতা সংগ্রহ ১, কবিতা সংগ্রহ ২; কাব্যগ্রন্থ—ঈহা।
৩৩টি কাব্যগ্রন্থ, ১০টি ছড়ার সংকলনসহ তিনি লিখেছেন দুটি উপন্যাস ও অসংখ্য প্রবন্ধ।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, বিষ্ণু দে পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।