বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খালিদের আলোকচিত্রে আলো-ছায়া ও আবেগের গল্প

  •    
  • ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ২০:০০

পেশায় হেলিকপ্টার পাইলট মোহাম্মদ খালিদ বিন সালাম। আর পছন্দ ভ্রমণ করতে করতে ছবি তোলা। তার ফ্রেমে ধরা পড়ে দেশ, নদী, প্রকৃতি। এই মুহূর্তে খালিদের খুব ইচ্ছা, মহামারি বিষয়ক ফটো আর্কাইভের মতো কিছু একটা করা।

‘কোনো কিছু দেখে নিজের যে অনুভূতি হয়, চেষ্টা থাকে আমার তোলা ছবিতে সেই ফিলটা তুলে আনতে। আর ক্যামেরা একটা যন্ত্র হলেও, এটা আমার আবেগ কেড়ে নেয়ার বদলে বাড়িয়ে দেয়’- বলছিলেন আলোকচিত্রী মোহাম্মদ খালিদ বিন সালাম।

শখের আলোকচিত্রী তিনি। নিজেকে শিক্ষার্থী বলতেই বেশি ভালোবাসেন। ক্যামেরায় চোখ রাখছেন বেশিদিন হয়নি। ২০১৪ সালে নিকন ৩৩০০ নিয়ে ইচ্ছাপূরণের কাজ শুরু খালিদের। ছোটবেলায় ক্যানভাসে ছবি আঁকার ইচ্ছেটা বড়বেলায় ফ্রেম, কম্পোজিশন, এক্সপোজারে রুপান্তরিত হয়েছে।

শখের ফটোগ্রাফার, তাই ছবি তোলেন সময় পেলেই। অথচ সেই সময়টাই যেত হাতের মুঠোয় আসতে চায় না খালিদের।

তিনি বলেন, ‘আমি পেশায় একজন হেলিকপ্টার পাইলট। অফিস করতে হয় ৯টা টু ৫টা। ছবি তোলার জন্য যে আলোটা প্রয়োজন, সেই সময়টাতে আমার অফিস থাকে। তাই ছবি তোলার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।’

হেলিকপ্টারে যিনি আকাশে ওড়েন তার চোখে দৃশ্য ধরা দেয় অন্যরকমভাবে। এই কথায় সায় দিলেন খালিদ। বললেন, ‘উপর থেকে দৃশ্যগুলো অদ্ভুত সুন্দর। কিন্তু কাজে থাকার কারণে ক্যামেরা সঙ্গে নেয়া হয় না, ছবিও তোলা হয় না।’

আলোকচিত্রী মোহাম্মদ খালিদ বিন সালাম

খালিদের পছন্দ ভ্রমণ করতে করতে ছবি তোলা। তাই তার ফ্রেমে ধরা পড়ে দেশ, নদী, প্রকৃতি। খালিদ বলেন, ‘এই ধরন ছাড়া আমার তেমন একটা উপায়ও নেই। কারণ কাজের ফাঁকে ফাঁকে ছবি তুলতে গিয়ে বিচিত্র বিষয় পাওয়া আমার জন্য কঠিন।’

আর এভাবে শখের বসে ছবি তুলেই জমিয়ে ফেলেছেন তিন হাজারের মতো নান্দনিক শিল্প। খালিদ জানালেন, এসব থেকে দুইশ থেকে আড়াইশ ছবি তিনি আলাদা করে রেখেছেন প্রদর্শনীতে পাঠানোর জন্য।

চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ফিনিক্স ইন্টারন্যাশনাল ফোটোগ্রাফি অ্যাওয়ার্ড (পিআইপি) ২০২০ প্রতিযগিতায় ৬২ দেশের ৬০০ আলোকচিত্রীর ৬৭৩২ ছবি জমা পড়ে। সেখানে খালিদ ভুটান ফটোগ্রাফিক সোসাইটি গোল্ড মেডেল, ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ফোটোগ্রাফি রিবনসহ নয়টি একসেপট্যান্স অর্জন করেছেন।

এছাড়া, নিউ ইয়র্ক ফটো স্যালন ও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় এফআইএপি অনারেবল মেনশনসহ বেশ কিছু একসেপট্যান্স রয়েছে তার।

খালিদ এশিয়ান ফটোগ্রাফার্স ইউনিয়নের আজীবন সদস্য, এছাড়া তিনি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি অফ আমেরিকা, গ্লোবাল ফটোগ্রাফিক ইউনিয়নসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ফোটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠানের সদস্য। বাংলাদেশ ফিনিক্স ফটোগ্রাফিক সোসাইটির একজন কার্যনির্বাহী সদস্যও তিনি।

এত কিছুর মাধ্যমে খালিদ ফটোগ্রাফারদের জন্য একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করতে চান। যেখানে সম্মান ও সুরক্ষা দুই-ই পাবেন একজন ফটোগ্রাফার। স্বপ্ন দেখেন নতুন নতুন কাজ করতে। এই মুহূর্তে খালিদের খুব ইচ্ছা মহামারি বিষয়ক ফটো আর্কাইভের মতো কিছু একটা করা।

মোহাম্মদ খালিদ বিন সালাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ধরনের কিছু কাজ করার খুব ইচ্ছা আমার, কিন্তু পরিবারের জন্য করতে পারি না। কোভিডের মধ্যে পরিবারের সঙ্গে থেকে কাজগুলো করা সম্ভব হয়ে উঠছে না।’

তিন সন্তান, স্ত্রী নিয়ে মিরপুরে থাকছেন খালিদ। সন্তানদের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয় ক্যামেরা আর ফটোগ্রাফি নিয়ে। তবে কিছু কমন সমস্যার কথাও বললেন হাসতে হাসতে।

‘ফটোগ্রাফারের পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রীরা সময় না দেয়ার অভিযোগ করেন। অনেক সময় বলে যে, ওই ছবিটা ভালো হয়েছে, কিন্তু তুমি আমার বা আমাদের ছবি ভালো করে তুলে দাও নাই।’

তবুও পরিবারের সমর্থন আর ত্যাগেই খালিদ এগিয়ে যাচ্ছেন তার স্বপ পূরণে।

এ বিভাগের আরো খবর