করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারও রমনার বটমূলে বসেনি ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখ বরণ আয়োজন। অনলাইন ও বিটিভিতে সকাল ৭টায় প্রচার হয় সংকলিন অনুষ্ঠান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে প্রাধান্য দিয়ে এবার সাজানো হয় ৪৮ মিনিটের আয়োজন। প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ছিল ছায়ানটের সভাপতি সনজীদা খাতুনের বক্তব্য। বক্তব্যটি আগেই ধারণ করে রাখা হয়েছিল।
সনজীদা খাতুন বলেন, ‘লাখো প্রাণের আত্মদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। পঞ্চাশ বছরে অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন ঈর্ষনীয়। যা আমাদের আশাবাদী করে তোলে।
‘পহেলা বৈশাখ শুধুই নববর্ষ উদযাপন নয়। আত্মপরিচয়ের সন্ধানে বাঙালি যে পথপরিক্রমায় অংশ নিয়েছে, সে পথ মসৃণ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল, নববর্ষের আয়োজন সব ধর্মের বাঙালিকে ঐক্যসূত্রে যুক্ত করে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।’
দেশের অগ্রযাত্রাকে অক্ষুন্ন রেখে নেতিবাচক প্রবণতাকে রোধ করবার জন্যে অতীতের মতো সংস্কৃতি চর্চার প্রসার মানবিক সমাজ গঠনে অবলম্বন হয়ে উঠতে পারে বলে জানান সনজীদা খাতুন।
সনজীদা খাতুনের এবারের বক্তব্যে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্ম-বিদ্বেষের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘ধর্মের আসল মর্মবাণী উপেক্ষা করে নতুন অবয়বে উত্থিত ধর্ম বিদ্বেষ, সম্প্রীতির সমাজকে বিনষ্ট করতে সচেষ্ট। লোভের বিস্তার বৈষম্যের বিস্তার করছে। খণ্ড ও বিচ্ছিন্নভাবে আত্মপ্রকাশ করছে সামাজিক অবক্ষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্ধকারের উৎস থেকে আলো উৎসারিত হবেই। নতুন বছর বয়ে আনবে সবার জন্য মঙ্গলবার্তা। আলো আসবেই।’
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন ছায়ানট সভাপতি।
১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন করে আসছে ছায়ানট। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুষ্ঠিত হয়নি বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এর পর গত বছর এবং চলতি বছর আয়োজন হলো না বটমূলে।