বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার হচ্ছে না লালন সাঁইয়ের দোল উৎসব

  •    
  • ২৪ মার্চ, ২০২১ ২১:১৫

আগামী ২৮ মার্চ (১৪ চৈত্র) দোল উৎসব। লালন ফকিরের জীবদ্দশা থেকে চলে আসা দোল উৎসব প্রথমবারের মতো বন্ধ থাকছে এই বছর। করোনার কারণে গত বছর লালন ফকিরের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও বাতিল করেছিল একাডেমি।

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়িতে ২০০ বছরের পুরোনো দোল উৎসব পালন করা হবে না। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এ অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেছে লালন একাডেমি।

বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে লালন একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

তিনি জানান, আগামী ২৮ মার্চ (১৪ চৈত্র) দোল উৎসব। লালন ফকিরের জীবদ্দশা থেকে চলে আসা দোল উৎসব প্রথমবারের মতো বন্ধ থাকছে এই বছর। করোনার কারণে গত বছর লালন ফকিরের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও বাতিল করেছিল একাডেমি।

জেলা প্রশাসক বলেন, জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৯১ জন মারা গেছেন। ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত। সম্প্রতি সারা দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে বড় ধরনের গণজমায়েত ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণেই এবারের দোল উৎসব আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বাউল-ফকিররা এ সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও তাদের ধর্মীয় রেওয়াজ পালনের জন্য ছোট করে হলেও সাধুসঙ্গ করার দাবি জানিয়েছেন।

লালন একাডেমির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেলিম হক বলেন, লালন ফকির জীবদ্দশায় তার অনুসারীদের জন্য বাল্যসেবা, পূর্ণসেবা, অধিবাস ও রাখালসেবা নামের খাবারের আয়োজন করতেন। থাকত নিজস্ব ধর্মীয় কিছু রীতি। ফকির লালনের মৃত্যুর পরও সেই রেওয়াজ চলে আসছে। সঙ্গে হয় তিন দিনের মেলা।

লালনের জীবদ্দশা থেকে চলে আসা দোলপূর্ণিমা উৎসবকে লালন স্মরণোৎসবও বলে থাকেন তার ভক্ত ও অনুসারীরা। গত বছর স্মরণোৎসব শুরু হয়েছিল ৮ মার্চ। লকডাউন শুরুর আগেই অনুষ্ঠান শেষ হয়েছিল।

সেলিম হক আরও বলেন, গত বছর পয়লা কার্তিকে লালনের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান হয়নি। পুরোপুরি বন্ধ ছিল আখড়াবাড়ি। সেই সময় নির্দিষ্ট কিছু বাউলকে ভেতরে ঢুকতে দিয়ে ধর্মীয় আচার পালন করতে দেয়ার দাবি করেন বাউল-ফকিররা। কিন্তু প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না অনুমান করেই অনুমতি দেয়নি। এবারও বাউলরা একই দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবার যে স্মরণোৎসব হচ্ছে না, সে বিষয়টি মেনে নিয়েছেন বাউল-ফকিররা।

আখড়াবাড়ির ফকির বলাই শাহ বলেন, লালন ধর্ম ফকিরদের, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। সিদ্ধান্ত নেন জেলা প্রশাসক। তারা যেভাবে বলবেন সেভাবেই হবে।

লালন একাডেমির সাবেক খাদেম এবং বাউলশিল্পী সালাম শাহ বলেন, ‘আমরা চাই মেলা হোক, সাধুসঙ্গ হোক। কিন্তু দেশের অবস্থার কথা চিন্তা করতে হবে।’

গবেষক আমানুর আমান বলেন, ‘ধর্মীয় রীতি পালনের ফকিরদের দাবি যৌক্তিক। অন্য সব ধর্মীয় বা উপাসনাবিষয়ক কার্যক্রম চলছে। সেই হিসেবে নির্দিষ্ট ফকিরদের দিয়ে দোলপূর্ণিমার ২০০ বছরের রীতি পালন করা যেতেই পারে। কিন্তু দোলপূর্ণিমা উৎসবের খবর জানাজানি হলে বাউল-ফকিরদের আটকানো যাবে না। এই কারণেই প্রশাসন এই ঝুঁকিতে যাচ্ছে না।’

করোনা মহামারির শুরু থেকেই ফকির লালন সাঁইয়ের আখড়াবাড়ি বন্ধ ছিল। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর সীমিত পরিসরে এটি খুলে দেয়া হয়। এখন বাউল-ফকির, লালনের ভক্ত এবং দর্শনার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করতে পারেন। তবে সন্ধ্যা ৬টায় বন্ধ করে দেয়া হয় আখড়াবাড়ির দরজা।

এ বিভাগের আরো খবর