সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মারা গেছেন প্রিয় বন্ধু। অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে ঠিক সময়ে হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়নি তাকে, দেয়া যায়নি চিকিৎসা। এ ঘটনায় ভীষণ মুষড়ে পড়েন ফয়সাল ইসলাম। আর সেখান থেকেই আসে নতুন ভাবনা।
প্রান্তিক মানুষের জন্য কিছু করার স্বপ্ন থেকে শুরু করেন তিন চাকার অ্যাম্বুলেন্স সেবা। গড়ে তোলেন সেইফহুইল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নামমাত্র খরচে সাধারণ মানুষের চিকিৎসায় অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি মেডিক্যাল সেবা দিচ্ছে সেইফহুইল।
- আরও পড়ুন: কমনওয়েলথের সঙ্গী নিউজবাংলা
ফয়সালের তারুণ্যের শক্তিকে স্বীকৃতি দিল বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনৈতিক জোট কমনওয়েলথ। তাদের বিচারে এ বছর সেরাদের সেরা তরুণ নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের ফয়সাল।
বাংলাদেশ সময় বুধবার বিকেলে কমনওয়েলথের মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড ‘কমনওয়েলথ ইয়াং পারসন অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবে ফয়সালের নাম ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশের ফয়সাল ইসলাম তিন চাকার অ্যাম্বুলেন্সে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আলোচনায় আসেন। সেইফহুইল নামের তার প্রতিষ্ঠানে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা এখন ১০টি। গ্রামীণ জনপদে হাজারও মানুষকে নামমাত্র মূল্যে সেবা দিচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই তরুণ বলেন, ‘কমনওয়েলথের এই মর্যাদাপূর্ণ পদক জিতে আমি নিজেকে খুব সম্মানিত মনে করছি। এই স্বীকৃতি সেইফহুইলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
এই স্বীকৃতির জন্য মনোনীত তালিকার সবাইকেই যোগ্য মনে করেন ফয়সাল। পুরস্কার জয়ের পর বাবা, মা, বোন আর সেইফহুইল সদস্যদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
এ সময় ফয়সাল স্মরণ করেন তার প্রিয় বন্ধুকে, যিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন।
কমনওয়েলথ তার কাজকে এগিয়ে নিতে দিয়েছে পাঁচ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড। আর সঙ্গে আছে পদক ও সম্মাননা।
এই পুরস্কারের জন্য কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশের মধ্যে ৪৩ দেশ থেকে এক হাজার আবেদন পড়ে। যাচাইবাছাইয়ের মধ্য দিয়ে ২০ জনকে নিয়ে চূড়ান্ত তালিকা করে সংস্থাটি।
ফয়সাল ইসলামের উদ্ভাবিত তিন চাকার সেইফহুইল অ্যাম্বুলেন্সএশীয় অঞ্চল থেকেও সেরা তরুণ হয়েছেন নির্বাচিত হয়েছেন ফয়সাল। আর আফ্রিকা অঞ্চল থেকে সেরা হয়েছেন সিয়েরা লিওনের জেরেমিয়া থোরোঙ্কা; ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে গ্রানাদার বেভন চ্যাডেল চার্লস; ইউরোপ ও কানাডা অঞ্চল থেকে যুক্তরাজ্যের সিয়েনা কাস্টেলন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামোয়ার মাসেলিনা লুটা।
তাদের প্রত্যেককে তিন হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড করে দিয়েছে কমনওয়েলথ।
এদের বাইরে সেরা বিশে আরও ছিলেন এশিয়া থেকে ভারতের এলিনা আলম, পাকিস্তানের সৈয়দ ওমর আমির ও মালয়েশিয়ার মোগেশ সাবাবাথির।
আফ্রিকা অঞ্চল থেকে ছিলেন কেনিয়ার আব্দুলরেহমান আলউই, নাইজেরিয়ার ওয়াদি বেন- হিরকি, জাম্বিয়ার নাওয়া জো সিলিশেবো।
ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে ছিলেন বার্বাডোসের তাহির বুলবুলিয়া, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ডউসের চার্লস ও গায়ানার জুবিলান্তে কাটিং।
ইউরোপ ও কানাডা অঞ্চল থেকে সাইপ্রাসের দিয়াগো আরমান্দো অ্যাপ্রিকিও, যুক্তরাজ্যের, ব্র্যাডলি হেসলপ ও ইলেনর ম্যাকলনটোশ ছিলেন তালিকায়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ছিলেন টোঙার ইলায়সেন লোলোহিয়া মানু, ফিজির শানাল সিভান ও অস্ট্রেলিয়ার টিম লো সুর্ডো।
এদের প্রত্যেকে পাচ্ছেন ট্রফি, সনদপত্র ও এক হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড।
এবারের কমনওয়েলথের ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডে এশিয়া অঞ্চলের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়েছে নিউজবাংলাকমনওয়েলথের এই আয়োজনে এশীয় অঞ্চলের অফিশিয়াল মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। নিজেদের ওয়েববসাইটে খবর প্রকাশের পাশাপাশি ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে সংবাদ মাধ্যমটি।
এ বছরের ২০ মার্চ পর্যন্ত এশীয় অঞ্চলের কমনওয়েলথ তাদের প্রচারে ফ্লেয়ার্স, ব্রশিয়ার, প্রেসরিলিজ, ডিজিটাল মিডিয়ায় নিউজবাংলার লোগো ব্যবহার করবে।
গত বছরের ১ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। সংবাদ পরিবেশনের ব্যতিক্রমী ধরন ও তাৎক্ষণিক তথ্যের নির্ভরশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অল্প সময়ের মধ্যেই বিপুল পাঠকের মনোযোগ কেড়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
সেই সঙ্গে নানা ধরনের অডিও ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট অনলাইন এই সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছে নতুন মাত্রা।
সমাজের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি থেকে শুরু করে সবচেয়ে প্রান্তিক অবস্থানের মানুষটির জন্য তথ্য, বিশেষত ‘সংবাদ’ এর অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে চায় টিম নিউজবাংলা।
এই যাত্রায় পাঠক-দর্শকের আস্থা ও ভালোবাসাই নিউজবাংলার সবচেয়ে বড় শক্তি। সামনের দিনে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ কনটেন্ট নিয়ে পাঠক-দর্শকের আরও কাছে পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি কর্মী।