করোনাভাইরাস মহামারিকালে টিকে থাকার লড়াই করছেন জাপানের গেইশা শিল্পীরা।
রোববার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে তাদের অস্তিত্বের লড়াই তুলে ধরা হয়েছে।
সেলিনা ওয়াংয়ের ভিডিও প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের রাজধানী টোকিওর আকাসাকা এলাকায় এক দশক ধরে গেইশা পেশায় আছেন কোইকো। গত বসন্তে করোনা মোকাবিলায় জাপান সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর তার হাতে প্রায় কোনো কাজই ছিল না।
কোইকো বলেন, করোনায় তাদের ব্যবসা অর্ধেকেরও বেশি কমেছে।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে ভয়ের বিষয়, এ পরিস্থিতির শেষ কোথায়, আমরা জানি না। এভাবে চলতে থাকলে কতদিন পর্যন্ত আমরা টিকে থাকতে পারব, তাও জানা নেই।’
ভোজ, উদযাপন বা অন্য অনুষ্ঠানে বিনোদন শিল্পী হিসেবে ভাড়া করা হয় গেইশাদের। সৌন্দর্য ও রসিকতার জন্য তাদের সুখ্যাতি আছে। জাপানের ঐতিহ্যবাহী নাচ, সংগীত ও শিল্পকলা রপ্তে জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দেন তারা।
গেইশাদের সাজসজ্জাও এক ধরনের শিল্প। মুখে সাদা-লাল রং, মাথায় পরচুলা ও জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক কিমোনো পরে মঞ্চে উঠতে হয় তাদের। এতে সব মিলে খরচ পড়ে ১০ হাজার ডলারেরও বেশি।
সাজে যেমন টাকা খরচ হয়, তেমন আয়ও আছে গেইশাদের। তাদের এক জনের সঙ্গে ভোজন করতে হাজারখানেক ডলার লাগে।
করোনায় গণজমায়েত নিষিদ্ধ হওয়ায় চাহিদা থাকা এ শিল্পীদের উপার্জন এখন প্রায় বন্ধ।
আকাসাকা গেইশা অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ও গেইশা শিল্পী ইকুকো ৫০ বছর আগের কথা স্মরণ করেন। ওই অঞ্চলে সে সময় ৪০০ গেইশা কাজ করতেন বলে জানান তিনি। এখন সেখানে মাত্র ২১ জন গেইশা রয়েছেন।
ইকুকো বলেন, ‘আমরা বেঁচে থাকার লড়াই করছি। যেকোনো মুহূর্তে কাজ শুরু হতে পারে ভেবে আমরা নিজেদের প্রস্তুত রাখি।’
করোনা সতর্কতার কারণে গেইশাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলা কঠিন। মক্কেলের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখের কাছে হাতপাখা ধরে রাখতে হয় তাদের। মক্কেলের কাছ থেকে দুই মিটার দূরে থেকে তাদের নাচ প্রদর্শন করতে হয়।
জাপানে করোনায় সংক্রমণের দৈনিক হার বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সরকার রেস্তোরাঁয় কম জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছে।
এ পরিস্থিতি নিয়ে সাড়ে ৩০০ বছরের পুরনো এক রেস্তোরাঁর (যেখানে কোইকো ও ইকুকো তাদের শিল্পকলা প্রদর্শন করেন) মালিক বলেন, আরেকটি দীর্ঘ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হলে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।