করোনাভাইরাস সংক্রমণকে ভিন্ন রূপে তুলে ধরেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের কিশোর-কিশোরীরা। সচেতনতামূলক এই আয়োজনটির নাম দিয়েছে ‘ডিপ্রেশন অব করোনা ইনস্টোলেশন আর্ট-২০২০’।
শুক্রবার বিকেল ৪টায় জেলা শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের উদ্যোগে ভিন্নধর্মী আয়োজনটি করা হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনীটি।
আয়োজনের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার।
প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া একটি শিল্পকর্ম।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো. খান বিটুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এসআর ওসমান গনি সজীব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহ্বায়ক সাংবাদিক আবদুন নূর, নারী নেত্রী নন্দিতা গুহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম কাউছার এমরান, সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য বাহারুল ইসলাম মোল্লা, বাচিক শিল্পী মনির হোসেনসহ অন্যরা।
করোনাভাইরাসকে ঘিরে ইনস্টোলেশন আর্ট পোগ্রামে তৈরি করা হয়েছে ১৯টি প্রদর্শনী। প্রদর্শনীগুলো হলো, আবদ্ধ সমাজ, স্পাই ওয়াচ, সমতার শিকড়, বালি ঘড়ি, লকডাউনে আমাদের শহর, শিল্পী, বিশ্ব হাতের মুঠোয়, করোনায় বাংলাদেশ, করোনার হাতিয়ার, পজিটিভ সাইড অব লকডাউন, করোনা ভাইরাসের প্রাথমিক প্রতিষেধক, বৃক্ষ পলি, অবক্ষয়। শুধু প্রদর্শনী নিয়েই শেষ নয়, তার রয়েছে নানান বর্ণনা।
করোনায় লকডাউন। ছবি: নিউজবাংলা
আয়োজনে ভিন্নভাবে নজর কাড়ে ‘আবদ্ধ সমাজ’ নামের প্রদর্শনী। শেখ ত্রপার প্রদর্শনীতে আছে ঝুলন্ত মাস্ক ও আরও কিছু। ত্রপা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা দেশে যেভাবে ছড়াচ্ছে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রাথমিকভাবে মাস্ক ব্যবহার জরুরি। করোনা প্রাদুর্ভাব কিছু কমে গেলেও পুরেপুরি আমরা তা থেকে রক্ষা পাইনি। আমার প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এখনো মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সবসময় ব্যবহার করতে হবে। যাতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আমরা সহজেই তা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারি।’
এ ছাড়া ‘সমতার শিকড়’ প্রদর্শনীর সম্পর্কে জানাতে চাইলে শিশু নাট্যমের আরেক সদস্য আন্নি বখতিয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কৌতুহলের জন্য নয়, বরং ধর্মীয় উগ্রতা এশিয়ার উন্নয়নের পথে বড় বাধা। ধর্ম এসেছে মানুষের শান্তির জন্য। সব ধর্মের মানুষেরা নিজেদের ধর্মকেই সেরা ভাবে। সেরা ভাবাটাই সবচেয়ে ভয়াবহ।’
লকডাউনে ঘরের কাজে ব্যস্ততা। ছবি: নিউজবাংলা
ডিপ্রেশন অব করোনা ইনস্টলেশন আর্ট সম্পর্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যমের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপ্ত মোদক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই আর্ট ইনস্টলেশনের মূল উদ্দেশ্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি। অনেকেই বিষয়টিকে হালকাভাবে নিচ্ছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। আমরা তাদের জানাতে চাই।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এ অবস্থায় জনগণকে সচতেন হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই মাস্কের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এই আয়োজন থেকে মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়াবে।’