নাটক, গান ও কবিতাসহ নানা আয়োজনে ‘মহান বিজয় দিবস’ উদযাপিত হয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে।
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।
এরই অংশ হিসেবে বুধবার ১৬ ডিসেম্বর সমাপনী দিনের প্রথম পর্বে একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর সকাল ৯টা থেকে ১২টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে কবিকন্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ মান্নান, নূরুল হুদা, আসলাম সানি, রহিমা আক্তার কল্পনা।
আবৃত্তি করেন মজুমদার বিপ্লব, তামান্না তিথি, আব্দুল রাকিবিল বারী, মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল ও আবু নাসের মানিক।
এরপর ‘জয় সত্যের জয়’, ‘ইতিহাস জানো তুমি’, ‘সাড়ে সাত কোটি মুক্তির সেনা’ ও ‘মাগো ভাবনা কেন’ চারটি সমবেত সংগীত পরিবেশন করে একাডেমির শিল্পীরা।
একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রুকসানা আক্তার রূপসা-‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা’, শিল্পী সুচিত্রা রাণী সূত্রধর–‘সব কটা জানালা খুলে দাওনা’, শিল্পী সোহানুর রহমান সোহান-‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’, আবিদা রহমান সেতু-‘ভেবোনা গো মা, রাফি তালুকদার-‘তুমি বাংলাদেশের ছবি একে দিও’, মোহনা দাস-‘আজ মুক্ত স্বদেশ’ ও শিল্পী কোহিনুর আক্তার গোলাপী-‘স্বাধীন স্বাধীন দিকে দিকে’।
দ্বৈত সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সাব্বির জামান ও রাজিব পরিবেশন করেন ‘সূর্যদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূয উঠেছে’ এবং ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’।
একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর রচনা ও নির্দেশনায় বাঙলা কলেজ যুব থিয়েটারের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় নাটক মুজিব মানে মুক্তি।
এরপর ‘সাহসী তারুণ্যে আগামীর বাংলাদেশ’ শিরোনামে চারুশিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় আর্টিস্ট ক্যাম্প। সেখানে অংশ নেন- শিল্পী জাহিদ মুস্তাফা, সনজীব দাস অপু, সৈয়দা মাহবুবা করিম (মিনি করিম), শামসুল আলম আজাদ, আলপ্তগীন তুষার, রিফাত জাহান কান্তা, মুক্তি ভৌমিক, মনি দীপা দাস গুপ্ত, জাকির হোসেন পুলক, রত্নেস্বর সূত্রধর ও তৈমুর হান্নান।
বিকেলে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা পূর্বে জাতীয় নাট্যশালার লবিতে নৃত্যের মাধ্যমে অতিথিদের স্বাগত জানায় নৃত্য সংগঠন স্পন্দনের শিল্পীরা।
এরপর জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন মঞ্চে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও একাডেমির কন্ঠশিল্পীরা পরিবেশন করেন জাতীয় সংগীত।
আলোচনা পর্বে অনলাইনে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
অনলাইনে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব মো. নওসাদ হোসেন।
দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ‘ইতিহাস জানো, জনতার সংগ্রাম চলবে, মাগো ভাবনা কেনো এবং তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’ সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন একাডেমির সংগীতশিল্পীরা।
শিল্পী তিমির নন্দী- ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, দিনাত জাহান মুন্নী-‘সবকটা জানালা খুলে দাওনা’, পিন্টু ঘোষ-‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, রাজীব-‘পূর্ব দিগন্তে সূয উঠেছে’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস-‘ছোটদের বড়দের সকলের’ ও বুলবুল মহলানবীশ একক সংগীত পরিবেশন করেন।
এরপর অনিক বোসের পরিচালনায় ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘শোন একটি মুজিবরের থেকে’ ও ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানে তিনটি সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যসংগঠন স্পন্দন।
লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় ‘গঙ্গাঋদ্ধি থেকে বাংলাদেশ’ নৃত্যালেখ্য পরিবেশন করে একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা।
কবি নাসিম চৌধুরীর কমান্ডার কবিতা আবৃত্তি করেন শিল্পী আশরাফুল আলম।
সবশেষে একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দল শিশুশিল্পী ও বড়দের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী।