বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্ব সাহিত্য: ২০২০ সালের সেরা পাঠ্য

  • রুবাইদ ইফতেখার, ঢাকা   
  • ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৭:৩১

নিউ ইয়র্কার ২০২০ সালের জন্য বেছে নিয়েছে বছরের কিছু সেরা বই। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য সেখান থেকে সেরা ১০টি বাছাই করা হলো।

যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন নিউ ইয়র্কার ২০২০ সালের জন্য বেছে নিয়েছে বছরের কিছু সেরা বই। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য সেখান থেকে সেরা ১০টি বাছাই করা হলো।

ক্লিনলিনেস গার্থ গ্রিনওয়েল

আমেরিকান লেখক গার্থ গ্রিনওয়েলের দ্বিতীয় উপন্যাস ক্লিনলিনেস। বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় এক সমকামী ইংরেজি শিক্ষকের অভিজ্ঞতা ও সম্পর্কের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে নয়টি আলাদা অধ্যায়। যেগুলো আসলে বর্ণনা দেয় অচেনা পরিবেশে অরক্ষিত ও নিঃসঙ্গ এক কেন্দ্রীয় চরিত্রের।

সেই ইংরেজির শিক্ষক প্রেমে পড়েন এই পর্তুগিজ যুবকের। সম্পর্ক দীর্ঘায়িত না হওয়ায় জড়িয়ে যান হিংস্র ও ধর্ষকামী নতুন এক সম্পর্কে। সেখান থেকে আবারও প্রেমে পড়েন এক নিরাশাবাদীর। বুলগেরিয়ায় এখনও সমকামী সম্পর্ক স্বীকৃত নয়। সেই প্রেক্ষাপটেই এগোতে থাকে উপন্যাসের কাহিনী।

স্ট্রেঞ্জার ফেইসেস নামোয়ালি সেরপেল

জাম্বিয়ান লেখক নামোয়ালি সেরপেল বিভিন্ন জঁরাতে লেখেন। সায়েন্স ফিকশন, নন-ফিকশন, আফ্রিকান ফিকশন এবং ছোট গল্প সবকিছুতেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, ২০১৯ সালে নিজের প্রথম উপন্যাস দ্য ওল্ড ড্রিফট-এর জন্য 'গ্রঁ-প্রি অফ লিটারেরি অ্যাসোসিয়েশনস' এর বেয়ে-লেঁত ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া এই লেখক।

তার সবশেষ বই স্ট্রেঞ্জার ফেইসেস নন-ফিকশন ক্যাটাগরির। বইটিতে মূলত একটি প্রশ্নের উত্তরই খুঁজেছেন তিনি: চেহারা বলতে আমরা আসলে কী বুঝি এবং এর কারণ কী?

কীভাবে চেহারার অভিব্যক্তি এর উপরে একটি সত্যের প্রলেপ তৈরি করে সেটিই বইটির অন্যতম উপজীব্য।

মানুষ চোখ, নাক, মুখ, চিবুকের অগভীর বিন্যাসে অর্থ খুঁজে বেড়ায়। যদিও এগুলো অধিকাংশ সময় মিথ্যাটাই প্রকাশ করে এবং বর্ণ, লিঙ্গ এবং শ্রেণি বৈষম্যকে ঢেকে দিয়ে কীভাবে চেহারাই মানবতার প্রথম পরিচয় হয়ে ওঠে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছেন সেরপেল।

তার লেখায় ঘুরে ফিরে আসে এলেফ্যান্ট ম্যান, হিচকক, ইমোজি ও কিয়ানু রিভসের মতো আমেরিকান পপ কালচারের উপকরণগুলো।

ওয়ান্ট লিন স্টিগার স্ট্রং

তালিকার পরের বইটি একটি আর্বান ফিকশন। নিউ ইয়র্কের নাগরিক এলিজাবেথের জীবন নিয়ে এই উপন্যাস। এলিজাবেথের একটি পিএচডি ডিগ্রি আছে। আছে দুটা সন্তান ও স্বামী। ব্রুকলিনের একেবারে ঘিঞ্জি একটা অ্যাপার্টমেন্টে মধ্যবিত্তের জীবন তার। সাংসারিক ও আর্থিক টানাপড়েনের মধ্যেই সে স্বপ্ন দেখে উন্নত এক জীবনের।

দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যে তার দেখা হয় ছেলেবেলার বন্ধু সাশার সঙ্গে। সাশার জীবনেও চলছে ভিন্ন ধরনের এক সংগ্রাম। দুই বন্ধু কী করে নিজেদের জটিলতার মাধ্যমেই মিল খুঁজে পায় নিজেদের এবং এগিয়ে চলে নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে সেটাকে ঘিরেই আবর্তিত ওয়ান্ট।

আমেরিকান লেখক লিন স্ট্রংয়ের দ্বিতীয় উপন্যাস এটি।অন অ্যাঙ্গার অ্যাগনেস কালার্ড সম্পাদিত

রাগ বা ক্রোধ মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তিগুলোর একটি। এই ধারণাটিকেই প্রশ্ন করা হয়েছে অ্যাগনেস কোলার্ড সম্পাদিত সংকলনটিতে। ক্রোধ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন লেখকের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্বলিত রচনাগুলো জায়গা পেয়েছে বইটিতে।

লেখক-সম্পাদক কালার্ড প্রথম নিবন্ধে লিখেছেন রাগ কোনো যথাযথ ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ নয়। এটা কোনো সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টাও নয়। তার মতে, ভেতরের কোনো কিছু ভেঙ্গে যাওয়ার স্বীকৃতি দিয়ে সাহায্যের আহ্বান হচ্ছে রাগ। একমাত্র সেই ভেঙ্গে পড়ার স্বীকৃতি দিয়েই মানুষ তাদের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।

রাগ কোনো ঘটনার সূচনা বিন্দু হিসেবে দেখিয়ে কালার্ড প্রশ্ন রেখেছেন, রাগের শেষ কোথায় হতে পারে?

রেইচেল আকস, পল ব্লুম, এলিজাবেথ ব্রুয়েনিং, জুডিথ বাটলারের মতো বর্তমান সময়ের সেরা কয়েকজন লেখক ও চিন্তাবিদ তাদের বিশ্লেষণ করেছেন রাগ নিয়ে।

মেক্সিকান গথিক সিলভিও মরেনো-গার্সিয়া

মেক্সিকান লেখক সিলভিও মরেনো-গার্সিয়ার ছয় নম্বর উপন্যাস মেক্সিকান গথিক। উপন্যাসের নামই বলে দিচ্ছে এর ধরন। গথিক হরর উপন্যাস বলতে যা বোঝায় এটি ঠিক তাই।

১৯৫০ এর দশকে মেক্সিকো সিটিতে বসবাসরত এক উচ্চবিত্ত নারী নোয়েমি তাবোয়াদার কাহিনী বলা হয়েছে উপন্যাসটিতে। নোয়েমি তার দুর সম্পর্কের বোন কাতালিনার চিঠি পায় একদিন। কাতালিনার সন্দেহ, তার স্বামী তাকে খুন করতে চাইছে সম্পত্তির লোভে। নোয়েমি কাতালিনাকে সাহায্য করতে মেক্সিকোর ছোট্ট গ্রাম এল ত্রিউনফোতে হাজির হয়। সেখানে গিয়ে সে জড়িয়ে পড়ে নতুন রহস্যে। কাতালিনার স্বামী ভার্জিলের পুরো পরিবারই যেন কিছু একটা গোপন করতে চাইছে সবসময়।

ক্ল্যাসিকাল গথিক প্রেক্ষাপটের উপন্যাসটি পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে প্রকাশের পরপরই।

ব্লাইন্ডনেস জোসে সারামাগো

নিউ ইয়র্কারের তালিকায় এটিই একমাত্র পুরনো উপন্যাস। প্রখ্যাত পর্তুগিজ সাহিত্যিক সারামাগোর ডিসটোপিয়ান উপন্যাস ব্লাইন্ডনেস প্রকাশ পায় ১৯৯৫ সালে। নিউ ইয়র্কার একে তালিকায় রেখেছে, কোভিড মহামারির প্রেক্ষিতে, ২০২০ এর অবশ্য পাঠ্য হিসেবে।

বিশ্বনন্দিত উপন্যাসটির কাহিনী আবর্তিত হয় এক নাম না জানা শহরে। যেখানে হঠাৎ করেই অন্ধ হয়ে যান শহরের অধিকাংশ বাসিন্দা। কি করে তারা এই পরিস্থিতি সামাল দেন, অজানা বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিক্রিয়াগুলো কি হয়, সেটাই সারামাগো তুলে ধরেছেন এই বহুলপাঠ্য উপন্যাসে।

চিলড্রেন অফ অ্যাশ অ্যান্ড এলম, আ হিস্ট্রি অফ দ্য ভাইকিংস নিল প্রাইস

ভাইকিংদের নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পরিপূর্ণ দলিল ধরা হচ্ছে নিল প্রাইসের লেখা বইটিকে। কিভাবে ভাইকিংরা উত্তর আমেরিকা থেকে এশিয়ান তৃণভূমি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল ব্যবসায়ী, দস্যু, পর্যটক ও সমুদ্র পরিব্রাজকের ভূমিকায়, সেটিরই বিস্তারিত আলোচনা করেছেন প্রাইস।

ভাইকিংদের নিজের ভাষাতেই তাদের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন প্রাইস। বর্ণনায় ইতিহাসের একঘেঁয়েমির চেয়ে আছে গল্পের প্রাঞ্জলতা, যেটি পাঠকদের মুগ্ধ করবে। প্রাইস নিজেই খ্যাতনামা প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং তাকে ভাইকিং বিষয়ে বিশ্বসেরাদের একজন ধরা হয়।

ভাইকিংদের নিয়ে মূলত প্রচলিত হিংস্রতার মিথকে ভাঙ্গার চেষ্টা করেছেন তিনি। দেখিয়েছেন কিভাবে তাদের মাধ্যমে নতুন ধারণা, প্রযুক্তি এবং আচার ও বিশ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে।

রডহ্যাম কার্টিস সিটেনফেল্ড

অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি ধাঁচের উপন্যাস রডহ্যাম, যার কেন্দ্রীয় চরিত্র হিল্যারি রডহ্যাম ক্লিনটন। হিলারির ছোট থেকে বড় হওয়া, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি, ক্লিনটনের সঙ্গে পরিচয় ও পরিণয়, এরপর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার – সবকিছুই বর্ণিত হয়েছে এ উপন্যাসে। কিন্তু বাস্তবের চেয়ে কিছুটা আলাদা কক্ষপথে আবর্তিত হয় হিল্যারির জীবন।

কিভাবে ক্লিনটনের ছায়ায় থেকে তিনি নিজের ইমেজ গড়েন, আমেরিকান বৈষম্য ও বর্ণবাদী সমাজ কীভাবে পদে পদে তাকে বাধা দেয় ডেমোক্র্যাট আইকন হয়ে উঠতে, তারই সুখপাঠ্য বর্ণনা আছে উপন্যাসটিতে।

দ্য আর্ট অফ ডুইং সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, লার্নিং টু লার্ন রিচার্ড হ্যামিং

গণিতবিদ রিচার্ড হ্যামিংয়ের বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৭ সালে। ২০২০ সালে পুনর্মুদ্রিত হওয়ার পর পাঠকপ্রিয়তা পায় এটি।

কীভাবে মস্তিষ্ককে চিন্তা করতে শেখানো যায়, সেটারই কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন হ্যামিং। জটিল সমস্যা সমাধানে কী করে নিজেকে একজন 'প্রবলেম-সলভার' হিসেবে ভাবতে হয়, সেটা নিয়েও আলোচনা করেছেন ১৯৯৮ সালে প্রয়াত এই গণিতজ্ঞ।

ইঞ্জিনিয়ারিং সমস্যা সমাধানে কোন পরিস্থিতিতে কী ভাবছিলেন হ্যামিং, গুরুত্বপূর্ণ কোনো আবিষ্কারের পেছনের ভাবনার কৌশল সম্পর্কে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা লিখেছেন তিনি।

বালজাকস লাইভস: পিটার ব্রুকস

ফরাসি ঔপন্যাসিক অঁর বালজাকের জীবনী এটি। কীভাবে বালজাক তার চরিত্রগুলো তৈরি করতেন এবং সেই চরিত্রগুলো যে তারই সত্তার অংশ সেটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন ব্রুকস।

অস্কার ওয়াইল্ড বলেছিলেন যে, বালজাকই ঊনবিংশ শতাব্দির জনক। বালজাকের এই সৃষ্টিশীলতার পেছনের কাহিনীটা জানা যায় ব্রুকসের লেখনিতে। বালজাক যেমন চরিত্র এবং পরিস্থিতগুলো কল্পনা করেছিলেন, সেই কাল্পনিক জীবনের মধ্য দিয়ে ব্রুকস প্রকাশ করেছেন এই ঔপন্যাসিককে।

এ বিভাগের আরো খবর