‘মানুষ মানুষের জন্যে,
জীবন জীবনের জন্যে,
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না?’
ঠিক এভাবে গানে গানে মানবপ্রেম ও জীবনের কথা বলে গেছেন ভারতীয় উপমহাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ভূপেন হাজারিকা। প্রতিবেশী দেশের সংগীত জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশেও ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের প্রতি প্রবল ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন তার গানে। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি গেয়েছেন ‘জয় জয় নবজাত বাংলাদেশ/জয় জয় মুক্তিবাহিনী’। গানটি জয় করে নেয় বাংলাদেশিদের হৃদয়।
কিংবদন্তি এ মানবতাবাদী শিল্পীর প্রয়াণ দিবস আজ। ২০১১ সালের এই দিনে (৫ নভেম্বর) তিনি মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
ভূপেন হাজারিকা ১৯২৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর আসামের সদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
শিশু কণ্ঠশিল্পী হিসেবে অসমিয়া চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের মাধ্যমে গানের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়সেই মূর্ত হয়ে ওঠে তার সংগীত প্রতিভা।
পরবর্তী সময়ে তিনি আবির্ভূত হন অসমিয়া চলচ্চিত্রে এবং নিজেই অসমিয়া চলচ্চিত্রের একজন গুণী পরিচালক হয়ে ওঠেন। তবে তিনি মানুষকে বেশি আলোড়িত করেছেন তার সংগীত দিয়ে।
অসমিয়া ভাষার অসংখ্য গান বাংলা ও হিন্দি ভাষাতে গেয়েছেন হাজারিকা। তার গানে প্রকৃতি, প্রেম সাম্যের কথা আবার শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সুর ধ্বনিত হয়েছে বারবার।
তিনি গেয়েছিলেন ‘আমায় একজন সাদা মানুষ দাও’, ‘আজ জীবন খুঁজে পাবি’, ‘বিস্তীর্ণ দুপারে অসংখ্য মানুষের’, ‘হে দোলা হে দোলা’, ‘মেঘ থমথম করে’, ‘শরৎবাবু খোলা চিঠি দিলাম তোমায়’, ‘আমি এক যাযাবর’সহ অসংখ্য বাংলা গান।
ভূপেন হাজারিকা সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন বিভিন্ন পুরষ্কার ও সম্মাননা। ভারত সরকার ১৯৯৩ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মাননা দেয়।