বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারের কাছে এখনো ২৫ লাখ টাকা পাব: টোকন ঠাকুর

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২০ ২১:০৫

অনুদানের অর্থ চলচ্চিত্রকার পেয়ে থাকেন তিনটি ধাপে। টোকন ঠাকুর সরকারের কাছে অনুদানের শেষ দুই কিস্তির টাকা পাওনা আছে বলে দাবি করলেও তিনি স্বীকার করছেন, তার চলচ্চিত্রের ডাবিং এখনো শেষ হয়নি।

চলচ্চিত্র নির্মাণ বাবদ সরকারের কাছে এখনো ২৫ লাখ টাকা পাবেন বলে দাবি করেছেন চলচ্চিত্রকার ও কবি টোকন ঠাকুর।

সরকারি অনুদানের টাকা তছরূপের অভিযোগের মামলায় সোমবার বিকেলে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন তিনি।

রোববার সন্ধ্যার পর রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোডের নিজ বাসা থেকে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয় টোকন ঠাকুরকে।

নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম জানান, ২০১৬ সালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় টোকন ঠাকুরের বিরুদ্ধে ৩ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকা মহানগর আদালত।

 

এই মন্ত্রণালয়ের অনুদান নিয়ে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহিরের গল্প ‘কাঁটা’ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা ছিল তার। তবে এখনও সেই চলচ্চিত্র আলোর মুখ দেখেনি। 

সোমবার জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সাংবাদিকেরা তার কাছে জানতে চান গ্রেফতারের ঘটনা কেন ঘটল?

জবাবে টোকন ঠাকুর বলেন, ‘তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুদানে আমি একটি সিনেমা করছি। প্রথম ধাপে ওখান থেকে ১০ লাখ টাকা আমি পাই। ২৫ লাখ টাকা এখনো আমি সরকারের কাছে থেকে পাব। দশ লাখ টাকা পেয়ে আমার সিনেমাটার শুটিং করতে দেরি হচ্ছিল।’

টোকন ঠাকুর ‘কাঁটা’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান পেয়েছিলেন ২০১৩-১৪ অর্থবছরে। নিউজবাংলা ২০১২ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্রে অর্থ বরাদ্দের নীতিমালা বিশ্লেষণ করে দেখেছে। এই সময়ের মধ্যে নিয়মে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।

অনুদানের অর্থ চলচ্চিত্রকার পেয়ে থাকেন তিনটি ধাপে। এর মধ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণের নির্ধারিত সময় যেমন বেঁধে দেয়া আছে, তেমনটি কোন পর্যায়ে কত ভাগ অর্থ দেয়া হবে তাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

২০১২ সালের নীতিমালার ১৪ ও ১৫ নম্বর ধারায় অর্থ প্রদানের পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে।

১৪ নম্বর ধারায় বলায় হয়, অনুদানের জন্য নির্বাচিত চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করার জন্য অনুদানের শতকরা ৩০ ভাগ অর্থ (১ম কিস্তি) প্রদান  করা হবে। অনধিক  তিন মাসের মধ্যে চলচ্চিত্রের কমপক্ষে শতকরা ৩০ ভাগ চিত্রায়নের পর অনুদানে চিত্রায়িত অংশ সন্তোষজনক বিবেচিত হলে ৩৫ মি. মি. ফরম্যাটে নির্মিত চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে অনুদানের দ্বিতীয় কিস্তিতে আরো অনূর্ধ্ব শতকরা ৫০ ভাগ অর্থ প্রদান করা হবে। ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মিত চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে অনুদানের ২য় কিস্তিতে আরো অনূর্ধ্ব শতকরা ৩০ ভাগ অর্থ প্রদান করা হবে। তবে স্ক্রিপ্টের প্রয়োজনে বিশেষ বিবেচনায় এ সময় বাড়ানো যাবে। 

১৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ৩৫ মি. মি. ফরম্যাটে নির্মিত চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রের সম্পাদিত রাশ ও ডাবিং করা সংলাপ অনুদান কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষার পর কমিটির সুপারিশ সাপেক্ষে অবশিষ্ট শতকরা ২০ ভাগ অর্থ প্রদান করা হবে। ডিজিটাল ফরম্যাটে নির্মিত চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে রাশ ও ডাবিং করা সংলাপ অনুদান কমিটির  পরীক্ষাপূর্বক অবশিষ্ট শতকরা ৪০ ভাগ অর্থ প্রদান করা হবে। তবে সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্র সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে হার্ডডিস্ক/ডিভিডি ফরম্যাটে একটি কপি অবশ্যই জমা দিতে হবে। 

টোকন ঠাকুর সরকারের কাছে অনুদানের শেষ দুই কিস্তির টাকা পাওনা আছে বলে দাবি করলেও তিনি স্বীকার করছেন, তার চলচ্চিত্রের ডাবিং এখনো শেষ হয়নি। 

২০১৩ সালে ‘কাঁটা’র জন্য অনুদান পাওয়ার পরও কাজ শেষ করতে এতো সময় লাগার কারণ জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমার সিনেমাটি পিউরিটিক্যাল সিনেমা। সিক্সটিজের সিনেমা ওইটা পুরান ঢাকাতে শুট করতে হবে।

 

‘এখন পুরান ঢাকার কোনো বাড়িতে তিন মাস শুটিং করে আমি কিন্তু আবার ফিরে যেয়ে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা এনে আবার পাঁচ মাস পরে শোধ করতে যেয়ে দেখব ওই বাড়িগুলো ভাঙা পড়ে গেছে। এ কারণে এককালীন শুটিং করার বাস্তবতা ছিল আমার। এখন এককালীন শুটিং (টাকা) তো সরকারের দেয়ার নিয়ম নাই।’

চলচ্চিত্রটি নির্মাণে সরকারের কাছ থেকে তিন ধাপে অনুদানের ৩৫ লাখ টাকা পাওয়ার কথা টোকন ঠাকুরের। তবে চলচ্চিত্রটি নিমার্ণে এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি।

টোকন ঠাকুর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে আমি এককালীন টাকা ব্যবস্থা করারও একটা চাপে ছিলাম, এক কোটি টাকা। সেই টাকা ব্যবস্থা করতে দেরি হয়েছে। এর মধ্যে মামলা হয়েছে। কিন্তু আমি সেই টাকাটা ব্যবস্থা করে শুটিং করে মন্ত্রণালয়ে জমাও দিয়ে দিয়েছি। এই করোনার আগে।

‘সেটা মন্ত্রণালয়ের প্রিভিউ কমিটি দেখেছে। আমাকে সেটার লেটারও দিয়েছে। এখন সেইটা দেরি হওয়ার কারণে মামলা হয়েছিল। ওয়ারেন্ট হয়েছিল। সেই কারণে কালকে (রোববার) থানার মধ্য দিয়ে কোর্টে আসলাম। আগামীকাল আসতে হবে- এই হলো বাস্তবতা। সিনেমা কিন্তু শেষ। এখন এডিট চলছে। এই এডিটের ফাঁকে আমি এই নতুন অভিজ্ঞতা নিলাম।’

কত দিনের মধ্য সিনেমাটা বুঝিয়ে দিতে পারবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এডিটিং চলছে। এডিটিং শেষ  হওয়ার পর ডাবিং। এডিটিং হবে আরো দুই মাস। ডাবিং হবে ১৫ দিন। এর পর সাউন্ড মিউজিক বসবে, কালার বসবে। সব মিলিয়ে তিন চার মাসের মতো লাগবে।’

টোকন ঠাকুর সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনারা পিউরেটিক্যাল সিনেমা কে কয়টা দেখেছেন গত ৩০ বছরে? পিউরেটিক্যাল বলতে আপনি এই সময় বসে ৭০ বছর আগের সিনেমা করবেন।’

তিনি বলেন, ‘কাঁটা গল্পটা ৬৪ সালের গল্প ৭১ সালের গল্প আর ৯০ সালের গল্প। তিন সময়ের গল্প আসলে তিনটি সিনেমা। আমি একটার মধ্যে ধারণ করছি। … ওরকম একটা সিনেমায় ১০ বছর লাগা উচিত। আমার তো লাগল পাঁচ বছর মাত্র।’

দুই হাজার টাকা মুচলেকা এবং মঙ্গলবার নির্বাহী হাকিম আদালতে হাজিরার শর্তে আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন টোকন ঠাকুর।

এ বিভাগের আরো খবর