লন্ডন থেকে উড়ে রাশিয়ায় পৌঁছেছিল ছোট্ট একটি বাদুড়। ক্ষুদ্র পাখায় ভর করে দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব পাড়ি দিয়েছিল প্রাণিটি। শেষমেষ প্রাণ হারিয়েছে বিড়ালের আক্রমণে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাদুড় সংরক্ষণে কাজ করা একটি গোষ্ঠী বাদুড়টিকে উদ্ধার করলেও বাঁচানো যায়নি সেটিকে।
বাদুড়টির পাখায় লন্ডনের চিড়িয়াখানার ছাপ আঁকা ছিল। ২০১৬ সালে এই চিড়িয়াখানাটির সদস্য হয়েছিল সে। আহত অবস্থায় বাদুড়টি পড়েছিল রাশিয়ার পেস্কোভ অঞ্চলে।
স্ত্রী নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেল বাদুড়টির আকারে মানুষের হাতের বৃদ্ধাঙ্গলের সমান। ওজন মাত্র আট গ্রাম।
কোনো বাদুড়ের যুক্তরাজ্য থেকে উড়াল দিয়ে পুরো ইউরোপ চষে বেড়ানো আর এতোটা পথ অতিক্রমের ঘটনা এটাই প্রথম।
যুক্তরাজ্যের ব্যাট কনজারভেশন ট্রাস্টের প্রধান লিসা ওয়ার্লেজ বলেন, ‘এটা ঐতিহাসিক এক যাত্রা। আমাদের জানা মতে এর আগে এভাবে কোনো বাদুড় ইউরোপ পাড়ি দেয়নি।
‘বাদুড়টির এ যাত্রা নিয়ে চমকপ্রদ বৈজ্ঞানিক গবেষণার উৎস হতে পারে। অতিথি বাদুড়, এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে নতুন বাসস্থানে বাদুড়ের স্থানান্তরিত হওয়ার ধাঁধাঁয় নতুন মাত্রা এ ঘটনা।
‘যুক্তরাজ্য, এর আশপাশে ও পুরো মহাদেশে নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেল বাদুড়ের চলাচল আগে থেকেই বিজ্ঞানীদের কাছে এক রহস্য।’
এর আগে ২০১৯ সালে লাটভিয়া থেকে ইউরোপে উড়ে গিয়েছিল আরেকটি নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেল বাদুড়। সেটি দুই হাজার ২২৪ কিলোমিটার বা এক হাজার ৩৮২ মাইল পথ পাড়ি দিয়েছিল।
ধারণা করা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেল বাসস্থান পরিবর্তন করে।
২০১৪ সালে নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেলের প্রজনন, চারণক্ষেত্র ও বাসস্থান পরিবর্তনের বিষয়ে বিশদ গবেষণায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একটি প্রকল্প শুরু হয়। প্রকল্পটির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে দুই হাজার ৬০০ নাথুজিয়াস’ পিপিস্ট্রেলের বাস।
কেন্ট, নর্দাম্বারল্যান্ড, সারে ও গ্রেটার লন্ডনে দেখা মেলে এসব বাদুড়ের।