বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৯ বছরে মারা গেছে ৩৮টি বাঘ

  • এস এম আমিনুল ইসলাম, খুলনা   
  • ২৮ জুলাই, ২০২১ ২৩:০৪

৩৮টির মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে ১৪টি বাঘ। এদের পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয়রা। বাকি ১০টি বাঘকে হত্যা করেছে চোরা শিকারীরা।

২০০১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৯ বছরে সুন্দরবনে ৩৮টি বাঘ মারা গেছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রধান সহকারী কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বুধবার নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ওই ৩৮টির মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে ১৪টি বাঘ। এদের পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয়রা। বাকি ১০টি বাঘকে হত্যা করেছে চোরা শিকারীরা।

এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বাঘ সম্পর্কে মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা সবসময়ই ছিল। লোকালয়ে ঢুকলে মানুষ আত্মরক্ষার জন্যেই বাঘ হত্যা করত। তবে মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে।’

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৮ সালে জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৪টি। এর আগে ২০১৫ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। অর্থ্যাৎ চার বছরে বাঘ বেড়েছে ৮টি।

তাদের দাবি, সুন্দরবনকে সুরক্ষা দেয়াতেই বেড়েছে বাঘের সংখ্যা।

বন বিভাগ আরও জানায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিলো ৩৫০টি। এরপর ১৯৮২ সালের জরিপে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২৫টি।

১৯৮৪ সালে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়।

১৯৯২ সালে জানানো হয় বাঘ রয়েছে ৩৫৯টি। পরের বছর ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে বলা হয় ৩৬২টি বাঘ রয়েছে।

১৯৯৬-৯৭ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩৫০টি থেকে ৪০০টি। ২০০৪ সালে জরিপে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি।

তবে ২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাংলাদশে অংশে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে দাঁড়ায় ১০৬টিতে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ক্যামেরা ট্র্যাকিং জরিপে বাঘের সংখা এসে দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে। অর্থাৎ, জরিপের শেষ চার বছরে বাঘ বেড়েছে ৮টি।

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) আবু সালেহ বলেন, ‘সরকার বাঘের সংখ্যা বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা হয়েছে। যার কারণে বিগত চার বছরে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে।’

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবনে বনদস্যুদের আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ও চোরা শিকারীদের দৌরাত্ব কমায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের সংখ্যা সর্বশেষ জরিপে বেড়েছে।

‘এছাড়া বাঘের প্রজনন, বংশবৃদ্ধিসহ অবাধ চলাচলের জন্য গোটা সুন্দরবনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বড় বড় পুকুর খনন করা হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঘ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে।’

বন্য ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগীয় কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল জানান, লোকালয়ে আসা বাঘ নিরাপদে ফেরাতে এরই মধ্যে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে এখন আর মানুষ বাঘ পিটিয়ে মারে না।

তিনি আরও জানান, নির্বিচারে বাঘ হত্যা ও শিকার ঠেকাতে বাড়ানো হয়েছে টহল ফাঁড়ি। পাশাপাশি চোরা শিকারীদের তৎপরতা বন্ধে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট পেট্রোলিং চালু করা হয়েছে।

বাঘের প্রজনন মৌসুম জুন থেকে আগস্ট মাসে সুন্দরবনের সকল পাস পারমিট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর