বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে নতুন প্রজাতির সাপ ‘পার্সিয়ান গালফ সি স্নেক’

  •    
  • ২৮ জুলাই, ২০২১ ২২:০১

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সাপটির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সাপটির প্রজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত হই। এই প্রজাতির সাপ পারস্য উপসাগরে বিচরণ করে।

দেশের সমুদ্রসীমায় নতুন প্রজাতির সাপ শনাক্ত হয়েছে। নতুন এই সামুদ্রিক সাপের নাম দেয়া হয়েছে ‘পার্সিয়ান গালফ সি স্নেক’। বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ‘হাইড্রোফিস ল্যাপমোইডস’।

গত ২৬ জুলাই আন্তর্জাতিক জার্নাল চেকলিস্টে এ নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ইব্রাহীম আল হায়দার নতুন এই সামুদ্রিক সাপের প্রজাতি আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেন।

গবেষক ইব্রাহীম আল হায়দার বলেন, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে গবেষণার পর নতুন প্রজাতিটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধটি বিজ্ঞান জার্নালে স্থানও পেয়েছে।

তিনি বলেন, দেহের গঠন, বাহ্যিক আকৃতি এবং ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রজাতিটি শনাক্ত করা হয়। শনাক্ত হওয়া সাপটি এলাপিডে পরিবারভুক্ত। এটি বিষধর সামুদ্রিক সাপ। সাপটির বিচরণ ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরব, কুয়েত, ইরাক, ইরান, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের উপকূলীয় ও উপকূল নিকটবর্তী সমুদ্র অঞ্চলে। ভারতের উড়িষ্যা প্রদেশের সৈকতেও সাপটি বিচরণের তথ্য ছিল। তবে এই প্রথম দেশে শনাক্ত হলো পার্সিয়ান গালফ সি স্নেক।

গবেষণার প্রেক্ষিত সম্পর্কে গবেষক ইব্রাহীম আল হায়দার বলেন, ‘গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থিত একটি বাজারে বিক্রেতার ঝুড়িতে মাছের সঙ্গে সাপটি পাওয়া গিয়েছিল। পরে আমরা উদ্ধার করে সাপটি ভেনম রিসার্চ সেন্টারে নিয়ে আসি। মাছ বিক্রেতা জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রামের ফইল্যাতলী বাজার থেকে মাছগুলো কিনে বিক্রি করতে এনেছিলেন। মাছের সঙ্গে সাপটিও চলে আসে, যা কেউ খেয়াল করেনি। এরপর আমরা ফইল্যাতলী বাজারে গিয়ে কাজ করি। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, উদ্ধারের আগের দিন জেলেরা সমুদ্র উপকূলে মাছ ধরেন। সে সময় জালে সাপটি ধরা পড়ে, যা তারা বুঝতে পারেননি।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সাপটির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সাপটির প্রজাতি সম্পর্কে নিশ্চিত হই। এই প্রজাতির সাপ পারস্য উপসাগরে বিচরণ করে।

তিনি বলেন, এই প্রজাতির সাপটি বিপন্ন। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত সাপটি। তাই এটি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

গবেষক ইব্রাহীম আল হায়দার বলেন, স্থলের প্রাণীর প্রজাতির নিরূপণ করার চেয়ে সমুদ্রের প্রাণীর প্রজাতির নিরূপণ করা অনেক কঠিন। শুধু দেখে বা ছবি প্রত্যক্ষ করে সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজাতি শনাক্ত করা যায় না।

গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৬ প্রজাতির সাপ রয়েছে। বাংলাদেশের সমুদ্রে যেসব সাপের বিচরণ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে ম্যাক্লেলান্ডের প্রবাল সাপ, ডাউডিনের সামুদ্রিক সাপ, বড়শিনাক সামুদ্রিক সাপ, লুদমুখো সামুদ্রিক কেউটে, কালোবলয়ী সামুদ্রিক কেউটে, কাল-হলুদ বলয়ে সামুদ্রিক সাপ, ডোরা সামুদ্রিক সাপ, মোহনা সামুদ্রিক সাপ, বইঠা টেবি সাপ, ক্যান্টরের সরুমাথা সামুদ্রিক সাপ, ছোটমাথা সামুদ্রিক সাপ, মালাক্কা সামুদ্রিক সাপ।

এ বিভাগের আরো খবর