বনাঞ্চল ধ্বংস ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিলুপ্তির মুখে ১০ হাজারের বেশি প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্ট আমাজনে ব্যাপক বন ধ্বংসের ফলে অঞ্চলটির বড় অংশ যত কার্বন শোষণ করছে, তার চেয়ে বেশি নিঃসরণ করছে।
টার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশনের (টিআরটি) প্রতিবেদনে জানানো হয়, আমাজনের মাটি ও উদ্ভিদে মজুত রয়েছে ২০ হাজার কোটি টন কার্বন। সারা বিশ্বে প্রতিবছর যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়, তারও পাঁচ গুণ কার্বন রয়েছে আমাজনে।
এ বিষয়ে ৩৩ অধ্যায়ের গবেষণা প্রতিবেদনটির খসড়া প্রকাশ হয় বুধবার। সায়েন্স প্যানেল ফর দ্য আমাজনের (এসপিএ) এ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করেছেন সারা বিশ্বের ২০০ বিজ্ঞানী।
আমাজনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে এযাবৎকালের সবচেয়ে বিস্তারিত গবেষণা প্রতিবেদন এটি। বৈশ্বিক জলবায়ুতে বনাঞ্চলটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আর যে ঝুঁকির সম্মুখীন এটি, সবটা নিয়েই কাজ করা হয়েছে এ গবেষণায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এরই মধ্যে আমাজনের ৩৫ শতাংশ বন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বা ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। এর ফলে অস্তিত্ব বিলোপের পথে আছে আট হাজারের বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ ও দুই হাজার ৩০০ প্রজাতির প্রাণী।
ভার্চুয়াল আলোচনায় ইউনিভার্সিটি অফ ব্রাসিলিয়ার অধ্যাপক মার্সিদিজ বুস্তামান্তে জানান, জলবায়ু পরিবর্তন অব্যাহত আর জীববৈচিত্র্য কমতে থাকাসহ বিভিন্ন সংকটে মানবজাতি যে অপূরণীয় ক্ষতি আর ধ্বংসযজ্ঞের দিকে এগোচ্ছে, সেটাই হাতেকলমে দেখিয়ে দিচ্ছে বিজ্ঞান।
তিনি বলেন, ‘এই গতিপথ বদলে দেয়ার সুযোগ খুব কম। বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার পুরোটাই নির্ভর করছে আমাজনের পরিণতির ওপর।’
ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পেরুসহ দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে অবস্থান আমাজন বনাঞ্চলের।
ব্রাজিলে কট্টর ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বন ধ্বংস হয়েছে আমাজনে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও কৃষিকাজের অনুমতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট, যার তীব্র বিরোধিতা করেছেন পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীরা।
গত সপ্তাহে প্রতিবেশী কলম্বিয়া জানিয়েছে, ২০২০ সালে এক বছর আগের তুলনায় দেশটিতে বন ধ্বংসের হার বেড়েছে আট শতাংশের বেশি। কলম্বিয়ার আমাজন অংশে বন ধ্বংসের হার বেড়ে প্রায় ৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে।