চার দিনেও বনে ফিরে যায়নি কক্সবাজারের টেকনাফে ঘুরতে থাকা বুনো হাতি দুটি। তাদের মঙ্গলবার দেখা গেছে নাফ নদীর মোহনায়।
বন বিভাগ বলছে, হাতি দুটিকে উদ্ধারে এখনও চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের লোকজন উদাসীন, এ কারণে মারা পড়তে পারে হাতি দুটি।
টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আশিক আহমেদ জানান, এরই মধ্যে হাতিগুলোকে উদ্ধারে বন বিভাগের দল নাফ নদীর মোহনায় অবস্থান করছে। কিন্তু জোয়ারের কারণে হাতি দুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এগুলোকে উদ্ধারে একযোগে কাজ করছে বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও বন বিভাগ।
তিনি আরও জানান, সোমবার টেকনাফ থানায় হাতির বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে৷
এর আগে গত শনিবার টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া প্যারাবনে হাতির জোড়াটিকে প্রথম দেখতে পান স্থানীয়রা।
ওই সময় বন বিভাগ হাতি দুটিকে বনে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করলেও রোববার বিকেলে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটসংলগ্ন নাফ নদীর বালুর চরে হাতি দুটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন।
পরদিন সকালে শাহপরীর দ্বীপের পূর্বে নাফ নদীর পশ্চিম দিকের প্যারাবনে অবস্থান করতে দেখা যায় হাতি দুটিকে।
টেকনাফ নেটং পাহাড়ের বাসিন্দা কাশেম জানান, গত শুক্রবার গভীর রাতে পাহাড় থেকে নামার সময় বসতবাড়ির কাঁঠালগাছ ভেঙে চলে যায় হাতি দুটি। শনিবার সকালে তারা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সেই বিষয়টি জানাযর।
- আরও পড়ুন: টেকনাফে ঘুরছে দুই বন্য হাতি
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কক্সবাজার জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম জানান, বন বিভাগের অবহেলার কারণে হাতিগুলো পাহাড় থেকে লোকালয়ের দিকে নেমে আসছে। চার দিন পরও কর্মকর্তারা হাতি দুটোকে বনে ফেরাতে পারেননি।
শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চরের কয়েকজন জেলে জানান, হাতি দুটি খাদ্যাভাবে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাদার মধ্যে খুবই দুর্বলভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। আরও দুর্বল হয়ে গেলে কোমরসমান কাদা ও জোয়ারের পানি থেকে কূলে ওঠানো সম্ভব হবে না।
শাহপরীর দ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জায়েদ হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে হাতি দুটি দেখাই যাচ্ছে না। জোয়ারের পানির কারণে হাতি দুটি নাফ নদীর মোহনায় অবস্থান করছে বলে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। তবে হাতি দুটি বেশি দুর্বল হয়ে গেলে যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে।’
টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা আশিক আহমেদ বলেন, ‘হাতি দুটি শাহপরীর দ্বীপ ঘোলার চর থেকে সরে নাফ নদীর মোহনার দিকে অবস্থান নিয়েছে। আমরা ট্রলারে করে সেখানে গিয়ে হাতিগুলোকে মেরিন ড্রাইভের দিকে নেয়ার চেষ্টা করছি।’
বন বিভাগ জানায়, হাতি দুটির বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছর হতে পারে। এর মধ্যে বড়টির উচ্চতা ৯ ফুট ও ছোটটির উচ্চতা ৭ ফুটের মতো।